AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শেষ পর্যন্ত রইল শুধু আফসোসই


Ekushey Sangbad

০৪:৫৪ এএম, আগস্ট ২১, ২০১৪
শেষ পর্যন্ত রইল শুধু আফসোসই

একুশে সংবাদ 4b9f53595505ba16619f83b28780f18d-Untitled-35: সেঞ্চুরির পর এনামুলের চিৎকারটা খোলা প্রেসবক্সে বসে দিব্যি শোনা গেল। রবি রামপলকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মেরে ব্যাট উঁচিয়ে লাফ। তার পরই ড্রেসিংরুমের দিকে ফিরে দু হাত ঝাঁকিয়ে রণহুংকার। ওই এক চিৎকারেই বদলে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে ধুঁকতে থাকা দলটা বোলিংয়ে রূপ নিতে চাইল সত্যিকারের বাঘের চেহারায়। না, শেষ পর্যন্ত সেটা হতে হতেও হলো না। সম্ভাবনা জাগিয়েও কাইরন পোলার্ড আর দিনেশ রামদিনের কাছে হেরে গেল মুশফিকুর রহিমের দল। শুরু থেকেই বাংলাদেশের স্পিন-পেস সবকিছুতেই বিভ্রান্ত হচ্ছিল ক্যারিবীয়রা। কখনো আঘাত আনলেন মাশরাফি, কখনো বা আল আমিন, মাহমুদউল্লাহ অথবা সোহাগ। ২১৭ রানের জবাবে ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ডোয়াইন ব্রাভোর দল যেন নিশ্চিত হারের দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে পোলার্ড-রামদিনের ১৪৫ রানের জুটি দৃশ্যপট পাল্টে দিল। মাত্র ৩৯ বলে ফিফটি করা পোলার্ড শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ৭০ বলে ৮৯ করে, আল আমিনের বলে মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ক্যাচে। ৭৬ বলে ৭৪ করে রামদিন ফিরে গেছেন আগেই। মাঝে বৃষ্টি এসে একটু ঝামেলা করলেও ম্যাচের ভাগ্য তাতে বদলায়নি। পোলার্ড-রামদিনের ওই জুটির সৌজন্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ জিতে গেল ১০ ওভার ২ বল বাকি থাকতে । কিন্তু পোলার্ড-রামদিন যে এতটা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠলেন, তাতে কি বাংলাদেশের গেমপ্ল্যানেরও ভূমিকা নেই! এ দুজনসহ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের প্রথম আট ব্যাটসম্যানের ছয়জনই ডানহাতি। অথচ বাঁহাতি স্পিনারের দল বাংলাদেশের প্রথম একাদশে নেই একজনও বাঁহাতি স্পিনার! সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ, আবদুর রাজ্জাক স্কোয়াডে থাকলেও ছিলেন না কালকের একাদশে। রামদিনকে বোল্ড করে শেষ পর্যন্ত অফ স্পিনার সোহাগ গাজী জুটিটা ভাঙলেও ষষ্ঠ উইকেট জুটির সময় বাংলাদেশ অধিনায়ক নিশ্চিতভাবেই উপলব্ধি করে থাকবেন একজন বাঁহাতি স্পিনারের অভাব। ১৪ ওভার পর্যন্ত বোলারদের উৎসবটুকু বাদ দিলে ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য সুখময় ছিল একমাত্র এনামুলের ব্যাটিংটাই। তাঁর তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি উদ্যাপনে তাই চিৎকার-টিৎকার যোগ হতেই পারে। অপর প্রান্তে আরও নয়জন ব্যাটসম্যান এলেন-গেলেন। কিন্তু ওপেনিংয়ে নামা এনামুল ১০৯ রানের ইনিংসে খেলে গেলেন সবগুলো ওভার। ব্রাভোর করা ইনিংসের শেষ বলে এলবিডব্লু না হলে তিনি হতেন ওয়ানডেতে পুরো ৫০ ওভার খেলে অপরাজিত থাকা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান। দুর্ভাগ্য এনামুলের, সেঞ্চুরি হলেও ভাগ বসাতে পারলেন না জাভেদ ওমরের রেকর্ডে। সকালে ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে গিয়ে মনে হচ্ছিল, গ্রেনাডার মানুষ ক্রিকেট থেকে মুখই ফিরিয়ে নিল নাকি। দেড় বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরল দেশটাতে, অথচ কারও কোনো আগ্রহ নেই! ন্যাশনাল স্টেডিয়ামের বাইরের এলাকা অন্যান্য দিনের মতোই জনমানবহীন। খেলা শুরুর সময় গ্যালারিতে দর্শকসংখ্যা এতই কম ছিল যে বাংলাদেশের এক সাংবাদিক সেটা গুনেও ফেললেন। ৫৮ জন! পরে অবশ্য সংখ্যাটা হাজার দুয়েক হয়ে গেল। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটাররা তাঁদের হাততালি আর হর্ষধ্বনিতে অনুপ্রাণিতও বোধ করে থাকবেন। এনামুলই বা নন কেন? ১১টা চার কিংবা রবি রামপলের বলে সৌভাগ্যবশত হওয়া ছক্কা—ক্যারিবীয় দর্শকদের হাততালি পেল সবই। উদ্বোধনী জুটিতে মোটামুটি একটা শুরুর পরও বাংলাদেশের ইনিংস পথ হারাল মন্থর উইকেট আর ব্যাটসম্যানদের ভুলের মাশুল দিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের সাদামাটা বলও তাই তাদের জন্য হলো একেকটা প্রাণঘাতী গোলা! শুধু এনামুল হয়ে থাকলেন উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। তামিম-এনামুলের শুরুটা খারাপ হয়নি। তবে সেটা আরেকটু ভালো হতে পারত তামিম পুল শটে আত্মহত্যা না করলে। ২০ রানে রবি রামপলের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেছেন কাইরন পোলার্ডের হাত থেকে। ২ ওভার পর জ্যাসন হোল্ডারের বলে অনেকটা একই রকম পুল শট খেলতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে ধরা পড়লেন ওই পোলার্ডের হাতেই। বাংলাদেশকে বলতে গেলে একাই টেনে নিয়ে গেছেন এনামুল। মারার বলে মেরেছেন, ভালো বলকে দিয়েছেন প্রাপ্য সম্মান। সেটিরই পুরস্কার পেলেন ২০তম ওয়ানডেতে তৃতীয় সেঞ্চুরিতে। ৭৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি। রামপালের বলে ইনিংসের নবম বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি এল ৪৯তম ওভারে। কিন্তু এনামুলের চেষ্টাটা কেউ দেখলেন না। কেবল তামিমের আউটই যেন পথ দেখিয়ে দিল অন্য ব্যাটসম্যানদের। অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং এমন আহামরি কিছু ছিল না। এক সুনীল নারাইনকে খেলতেই যা একটু সমস্যা হচ্ছিল মনে হলো। বাংলাদেশের ইনিংস খুব বড় হতে পারল না বড় কোনো জুটি না হওয়ায়। ওপেনিংয়ে ৪১ রানের পর সর্বোচ্চ জুটি ষষ্ঠ উইকেটে এনামুল ও নাসিরের ৫৩। কিন্তু তাঁরা এই রান করলেন কি না ১৩.১ ওভারে! ৩৪তম ওভারে শুরু আর ৪৭তম ওভারে শেষ জুটিতে রানরেট ৪.০২, ভাবা যায়! এর চেয়েও অভাবনীয় ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে দুজনের মাত্র ১০ রান তোলা। তার পরও তো হাতছানি দিয়ে ডাকছিল জয়। যেটি মিলিয়ে গেল পোলার্ডের ব্যাটিং তাণ্ডবে। বাংলাদেশের জন্য রইল শুধু আফসোসই। বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২১৭/৯ ও. ইন্ডিজ: ৩৯.৪ ওভারে ২১৯/৭ ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ উইকেটে জয়ী।
Link copied!