কানাইপুকুর এখন পাখির গ্রাম !
একুশে সংবাদ : জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার নিভৃত গ্রাম কানাইপুকুর। প্রত্যন্ত এই গ্রামটি এখন আলোচিত শামুকখৈলসহ কেবশ কিছু বিরল প্রজাতির পাখির জন্য। প্রকৃতির অপরূপ খেয়ালে এখানে বাসা বেঁধে আছে কয়েক হাজার শামুকখৈল পাখি। গ্রামের মণ্ডল পাড়া পুকুরপাড়ের বড় বড় গাছগুলোতে এদের বাসা।
শামুকখৈল ছাড়াও শামুকভাঙ্গা, শামুক এশিয়ান ওপেন বিল, ওপেন বিল স্টক, হাইতোলা মুখ নামের পাখিগুলো গ্রামটিতে বাসা বেঁধেছে কয়েক বছর আগে। শামুক ঝিনুক খেয়ে জীবনধারণ করে এসব পাখি। পাখিগুলোর ওপর গ্রামবাসীরও রয়েছে অপার মমত্ব।
শামুকখৈল একটি বিরল প্রজাতির পাখি। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, গোটা উপমহাদেশের মধ্যে কেবল এই গ্রামেই স্থায়ীভাবে বসবাস এই পাখিগুলোর। এই গ্রাম ছাড়া উপমহাদেশের আর কোথাও এটির প্রজননের রেকর্ডও নেই। মানুষের ভালোবাসা আর নিরাপত্তা পেয়ে বংশবিস্তারের মাধ্যমে এখানে বসবাস করছে পাখিগুলো। শুধু শামুকখৈল নয় প্রায় দেড়যুগের বেশি সময় ধরে এ গ্রামের পুকুরপাড়ের গাছগুলোতে বাসা বেঁধে আছে মাছরাঙ্গা, পানকৌড়ি, রাতচোরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। সারাদিন পাখির কিচিরমিচিরে কান পাতা দায় হলেও গ্রামের সব বয়সের মানুষের ভালবাসা পেয়ে প্রজননের মাধ্যমে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পাখির সংখ্যা। আশেপাশের বিলগুলোতে মাছ ও শামুক-ঝিনুকের সহজপ্রাপ্যতা এবং গ্রামের মানুষের পাখিপ্রীতির কারণেই পাখিগুলো এই গ্রামে রয়ে গেছে দীর্ঘদিন ধরে।
ক্ষেতলাল উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই পাখির গ্রামে প্রতিদিন আশপাশের দর্শনার্থীরা আসেন পাখিগুলো দেখতে। গ্রামবাসী জানায়,কিছুদিন আগে বগুড়ার আযিযুল হক কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগ থেকে কয়েকজন অধ্যাপক এসে পাখিগুলো দেখে গেছেন। এ সময় তারা পাখিগুলোকে না তাড়ানোর জন্য গ্রামবাসীকে অনুরোধও করে গেছেন।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম আব্দুল্লাহেল বাকি বলেন, ‘পাখির জন্য অভয়াশ্রম ঘোষণা করে প্রশাসনিক উদ্যোগে গ্রামটিকে বৃহৎ পরিসরে সংরক্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৪-০৮-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :