জরিপের নামে শতাধিক গাছ কর্তন
একুশে সংবাদ: নাটোর পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরকারি ফলজ ও বনজসহ পাঁচ শতাধিক গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে প্রজেক্টের জরিপের প্রয়োজনে পরিষ্কারের নামে জয়কালী বাড়ির দীঘির পাড়ের সরকারি জায়গার প্রায় পাঁচ শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গাছ কাটার সময় স্থানীয় জনগণের নিষেধও উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হলে এসিল্যান্ডকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
শহরের লালবাজারে অবস্থিত জয়কালী মন্দির সংলগ্ন ও নাটোর রাজের খননকৃত জয়কালী বাড়ির দীঘিটি অর্ধ বঙ্গেশ্বরী রাণী ভবানী রাজবাড়ীর চতুর্দিকে বিস্তৃত। কালের প্রবাহে ওই দীঘির বেশ কিছু অংশ ভূমিদস্যুরা অবৈধভাবে ভরাট করে দখল করে নেয়। বর্তমানে যে জলাশয় রয়েছে তার চতুর্দিকে রয়েছে সাধারণ মানুষের বসবাস। দীঘির চারদিকে সরকারি খাস জমিতে অনেকেই ফলসহ বিভিন্ন প্রকার গাছ লাগিয়ে তা ভোগ করে আসছিলেন।
এলাকাবাসী জানান, হঠাৎ করে গত ২১ আগস্ট বৃহস্পতিবার পৌর আমিনের নেতৃত্বে কিছু গাছ কাটার শ্রমিক এসে গাছগুলো কাটতে শুরু করে। এ সময় বাধা দিলে বলা হয় পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তারা গাছগুলো কাটছেন বলে জানান। পরে কাটা গাছগুলো পৌরসভার গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসন সহকারী কমিশনার ভূমিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের নির্দেশ দেন। পরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র শেখ এমদাদুল হক আল মামুন জানান, একটি নতুন প্রজেক্টের মাধ্যমে জয়কালী দীঘির পাড়ে প্রতিমা বিসর্জনের একটি ঘাট ও একটি শিশু পার্ক নির্মাণ করা হবে। ওই প্রজেক্ট জরিপ করার জন্য ঢাকা থেকে একটি সার্ভে টিম এসেছে। জরিপের প্রয়োজনে তারা কিছু ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে থাকতে পারে।
তাছাড়া ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা পৌরসভার নিয়মের মধ্যেই পড়ে। শুধু ঝোপঝাড় নয়, আম গাছসহ বেশ কিছু ফলের গাছও কাটা হয়েছে বিষয়টি তিনি জানেন কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ঢাকায় থাকার কারণে বিষয়টি তিনি জানেন না। বিষয়টি নিয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি শাহীন আখতার সুমি জানান, বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছেন। তিনি পৌর কর্তৃপক্ষকে গাছ কাটা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরও কাটা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান জানান, গাছ কাটার খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার ভূমিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের নির্দেশ দেয়া হয়। তাছাড়া গাছ কাটা বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরকারি জমিতে পৌর কর্তৃপক্ষ প্রতিমা বিসর্জনের ঘাট বা শিশু পার্ক নির্মাণ করতে পারে কী-না এ প্রশ্নর জবাবে তিনি জানান, কোনো স্থাপনা করতে হলে অবশ্যই জমির মালিকের (সরকার) অনুমতি নিতে হবে।
একুশে সংবাদ ডটকম/মামুন/২৬.০৮.২০১৪
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :