AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ঘুরে আসুন নোংনোচ ট্রপিক্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন ।


Ekushey Sangbad

০৬:৫৬ এএম, আগস্ট ২৯, ২০১৪
ঘুরে আসুন নোংনোচ ট্রপিক্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন ।

একুশে সংবাদ : অকৃত্রিম প্রশান্তির শীতল পরশ পেতে ঘুরে আসুন নোংনোচ ট্রপিক্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেনে। মনোমুগ্ধকর এই গার্ডেনটি ‘নোংনোচ ভিলেজ’ নামেও পরিচিত। এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, নোংনোচ ভিলেজ ঘুরে দেখার পর যেকোনো পর্যটকের মুখ দিয়ে মনের অজান্তেই বেরিয়ে আসবে দুটি শব্দ-অপূর্ব! অসাধারণ! বাগানটির সৌন্দর্য বর্ণনার আগে এর সম্পর্কে দুটো কথা বলে নেওয়া যাক। জেনে নেওয়া যাক এর শুরুর ইতিহাস। পিসিট এবং নোংনোচ ট্যানসাসা-এই দুই শৌখিন দম্পতির কল্যাণেই এই বাগানের সৃষ্টি। তারা শখের বশে চনবুরি প্রদেশে ১৯৫৪ সালে ৬০০ একর (২.৪ বর্গকিলোমিটার) জমি ক্রয় করেন। জমি ক্রয়ের উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন ফলের বাগান করা। এ জন্য ৫০০ একর জমিতে ফল বাগান করার কাজও শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর তারা মত পরিবর্তন করেন। তারা ওই জমিতে ট্রপিক্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন অর্থাৎ একটি অত্যাধুনিক ভিলেজ করার চিন্তা করেন। পরিকল্পনার সুন্দর বাস্তবায়নের জন্য তারা থাইল্যান্ড এবং থাইল্যান্ডের বাইরে গিয়ে এ ধরনের বিভিন্ন পার্ক, ভিলেজ, ট্রপিক্যাল গার্ডেন পরিদর্শন করে অভিজ্ঞতা নেন। এরপর শুরু হয় মূল কাজ। এটি ১৯৫৪ সালের ঘটনা। কিন্তু নোংনোচ ভিলেজ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় ১৯৮০ সালে। অর্থাৎ ভিলেজটির কার্যক্রম পুরোপুরি শেষ করতে সময় লাগে প্রায় ২৪ বছর। নোংনোচ ট্রপিক্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেনের মোট আয়তন ৬০০ একর। এর মধ্যে ভিলেজের আয়তন ৫০০ একর। ২০০১ সালে পিসিট এবং নোংনোচ ট্যানসাসা তাদের ছেলে ক্যাম্পন ট্যানসাসার কাছে ভিলেজের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। বর্তমানে ক্যাম্পন ট্যানসাসা ভিলেজটির দেখভাল করছেন। এটি এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যতম একটি গার্ডেন হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক এই ভিলেজ পরিদর্শন করে আনন্দ লাভ করেন। পার্কটি একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত, অন্যদিকে এর স্থাপত্যশৈলীও অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন! যিনি এই পার্ক নকশা করেছেন তিনি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। তবে এ কথা সত্য যে, প্রকৃতিগতভাবেই জায়গাটি অপরূপ। পার্কের জায়গাটি পাহাড়ি সমতল ভূমি। স্থপতি বিষয়টি মাথায় রেখেই তার শৈল্পিক হাতের ছোঁয়ায় পার্কটিকে একটি সুন্দর ভিত্তি দিতে সক্ষম হয়েছেন। যে কারণে কেউ একবার দেখামাত্র এর প্রশংসা করতে দ্বিধা করবেন না। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ব্যাংকক, ফুকেট, পাতায়া ভ্রমণ করেন। আমি তাদের আহ্বান করব, পাতায়ার গর্ভে নোংনোচ ভিলেজ একবার দেখে আসার জন্য। জায়গাটি আপনাকে মানসিক প্রশান্তি এনে দেবে। আপনি নিশ্চিতভাবেই স্বর্গীয় অনুভূতি অনুভব করবেন। এই অনুভূতি আপনার হৃদয়ের মণিকোঠায় অমলিন হয়ে রইবে চিরকাল। নোংনোচ ভিলেজ মোট ৯টি ভাগে বিভক্ত। এর নকশাকারী প্রতিটি বিভাগকেই শিল্পসম্মতভাবে সাজিয়েছেন। বিভাগগুলো যথাক্রমে ফ্রেন্স গার্ডেন, ইউরোপিয়ান গার্ডেন, স্টোনহেইঞ্জ গার্ডেন, ক্যাকটাস গার্ডেন, ভ্যারাইজেটিট প্লান্টস, এ্যান্ট টাওয়ার, বাটারফ্লাই হিল, অর্কিড অ্যান্ড ব্রমিলাইড ডিসপ্লে গার্ডেন এবং ফ্লাওয়ার ভ্যালি। এ ছাড়া রয়েছে ছোট ছোট বেশ কিছু উপবিভাগ। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশের প্রতিটি প্রজাতির ফুলগাছসহ সকল প্রকার বাহারি গাছ এখানে রয়েছে। শুধু তাই নয়, এ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য অর্থাৎ প্রজাতিটি কোন দেশে পাওয়া যায়, এর বংশবিস্তার কীভাবে হয়, বৈজ্ঞানিক নাম কী, ঔষধি গুণ আছে কি না ইত্যাদি বিস্তারিত জানা যাবে। বাগানগুলো পরিদর্শন করলে আপনি অবশ্যই বিমোহিত হবেন। কেননা এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে ক্ষণিকের জন্য হলেও নিয়ে যাবে স্বপ্নের আঙিনায়। তবে পুরো ভিলেজটি ঘুরে দেখতে হলে হাতে সময় নিয়ে যেতে হবে। এবং অবশ্যই ৫০০ থাই বাথের বিনিময়ে টিকিট ক্রয় করে সেখানে প্রবেশ করতে হবে। শিশুদের (৩ বছর পর্যন্ত) জন্য অবশ্য বিনা মূল্যে বাগান ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে। তবে যাদের উচ্চতা ৮২ সেন্টিমিটারের কম তাদের জন্য প্রবেশমূল্য অর্ধেক। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন ভিলেজে প্রবেশ করা যাবে। শুধু তাই নয়, ইচ্ছেমতো সময় নিয়ে সেখানে অবস্থানও করা যায়। উল্লেখ্য, আপনি যদি ৫০০ থাই বাথ দিয়ে টিকিট কেটে ভিলেজে প্রবেশ করেন, তবে ওই একই টিকিটে তিনটি শো উপভোগ করতে পারবেন। এগুলো হলো থাই কালচারাল শো, এলিফ্যান্ট শো এবং ক্রোকোডাইল শো। প্রতি ১ ঘণ্টা পরপর এই শোগুলো দেখানো হয়। স্থানীয় সময় সকাল ৯.৪৫ মিনিটে প্রথম শো শুরু হয়। প্রতিদিন সাতটি শো দেখানো হয়। থাই কালচারাল শোতে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এতে থাইল্যান্ডের কৃষ্টি এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। এতে অতীতের রাজা বাদশাদের ঐতিহাসিক জীবনযাত্রার চিত্রও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপনের সময় থাইল্যান্ডের বিখ্যাত সংগীতের মাধ্যমে সমগ্র পরিবেশ এবং আয়োজনটিকে আরো মনোমুগ্ধকর করে তোলার চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি তুলে ধরা হয় থাইল্যান্ডের বিখ্যাত বক্সিং প্রতিযোগিতা এবং প্রচলিত মার্শাল আর্ট। তা ছাড়া, প্রাচীন থাইল্যান্ডের তরবারি যুদ্ধের একটি সুন্দর মহড়াও দেখানো হয়। অর্থাৎ ১ ঘণ্টা অতি স্বল্প সময় হলেও এর মাধ্যমে থাইল্যান্ডের সংস্কৃতি সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারণা পাওয়া যায়। এরপর এলিফ্যান্ট শোতে হাতিদের বিভিন্ন ধরনের নৃত্য পরিবেশন করা হয়। হাতির ফুটবল খেলা, বাস্কেটবল খেলা, রিং ঘুরানো দেখানো হয়। তবে এই পর্বে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো, দর্শনার্থীদের মাঝ থেকে কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে মাদুর বিছিয়ে উপুর করে শোয়ানো হয়। তারপর হাতি দল বেঁধে তাদের ওপর দিয়ে হেঁটে যায়। কিন্তু দর্শনার্থীদের শরীরে হাতির পাড়া লাগে না। এ ছাড়া আরো নানা প্রকার খেলা দেখানো হয়। এখানে যেকোনো পর্যটক চাইলে ১০০ থাই বাথ খরচ করে হাতির শুঁড় দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় ছবি তুলতে পারবেন। হাতির বড় বড় দুই দাঁত ধরে ঝুলেও ছবি তোলা যাবে। তা ছাড়া হাতির পিঠে চড়ার সুযোগ তো পাবেনই। এসব দেখে খুশি হয়ে আপনি চাইলেই হাতিকে কলা দিয়ে আপ্যায়ন করতে পারবেন। কারণ শো চলাকালীন ৭-১২ বছর বয়সী থাই ছেলেমেয়েরা মাঠের পাশেই কাঁদি কাঁদি কলা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বিক্রির উদ্দেশ্যে। প্রতি কাঁদি কলার দাম ৪০ থাই বাথ। এখানে একটি মজার বিষয় লক্ষ করা যায়, যদি কোনো পর্যটক হাতিকে খাওয়ানোর জন্য কলা ক্রয় করেন, তবে হাতি বুঝতে পারে যে কলাগুলো তাদের খাওয়ানোর জন্যই কেনা হয়েছে। আর এটা বুঝতে পেরে হাতি কলা নেওয়ার জন্য শুঁড় বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু যে ছেলেমেয়েগুলো কলা বিক্রি করছে শুঁড়ের নাগালে থাকা সত্ত্বেও হাতি সেই কলা স্পর্শ করে না। অর্থাৎ কলা বিক্রেতাদের দেখেই হাতি বুঝতে পারে কলা বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত খাওয়া যাবে না। হাতিগুলো খুবই সুন্দর, স্বাস্থ্যবান এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। বিভিন্ন বয়সের হাতি দিয়ে এই শো পরিচালনা করা হয়। শো শেষে হাতি চারদিক থেকে এগিয়ে এসে শুঁড় দিয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে টিপস হিসেবে অর্থ গ্রহণ করে। মজার ব্যাপার, এ সময় তারা দর্শকদের কুর্নিশ করে ধন্যবাদও জানায়। এই শো সব বয়সের মানুষের জন্যই আনন্দদায়ক। তবে শিশুরা খুব আনন্দ নিয়ে এটি উপভোগ করে। এরপর দেখানো হয় কুমিরের শো। এতে একজন তরুণ এবং একজন তরুণী কুমিরদের নিয়ে বিশেষ ধরনের কসরত দেখান। বিশেষ করে তরুণ অতিশয় ঝুঁকি নিয়ে খেলায় অংশ নেয়। এর মধ্যে রয়েছে কুমিরের গলার ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেওয়া, কুমিরের মুখের ভেতর মাথা ঢুকিয়ে দেওয়া, কুমিরকে বিভিন্নভাবে হাঁ করিয়ে রাখা ইত্যাদি। এই খেলাগুলো ভালো লাগলেও কিছু কিছু কুমিরের গর্জন দর্শনার্থীদের মধ্যে আতঙ্কও ছড়ায়। আপনি চাইলে এখানেও ১০০ থাই বাথ দিয়ে কুমিরের গলার ভেতর হাত বা মাথা ঢুকিয়ে ছবি তোলার সুযোগ পাবেন। এটি আমার কাছে বিপজ্জনক মনে হলেও অনেক দর্শনার্থীকে দেখলাম তারা বেশ আনন্দ নিয়েই কাজটি করছে। নোংনোচ ভিলেজে রয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রজাতির জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি মিনি চিড়িয়াখানা। প্রতিটি প্রাণীকে এখানে যত্ন করে রাখা হয়েছে। ছোট ছোট ইউনিট করে প্রাণীদের বিস্তারিত বিবরণসহ সুন্দরভাবে তাদের উপস্থাপন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রতিটি প্রাণীর খাঁচার কাছেই রয়েছে বসার জায়গা। আপনি ইচ্ছা করলেই প্রাণীটিকে নিজ হাতে খাওয়ানোর সুযোগ পাবেন। এখানে দেখবেন সারি সারি মাছের অ্যাকুরিয়াম। এখানে সব ধরনের মাছ দেখতে পাওয়া যাবে। ‘মিনি চিড়িয়াখানা’ও যে এত বড় হয় নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। আমরা প্রায়ই শুনতে পাই, সুন্দরবনের বাঘ বিলুপ্তির পথে। কিন্তু এই মিনি চিড়িয়াখানায় অসংখ্য রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পেলাম। এদের গঠন এতই সুন্দর এবং তরতাজা যে এগুলো না দেখলে বাঘ সম্পর্কে আমার ধারণা পূর্বের মতোই থেকে যেত। এই ভিলেজের কয়েকটি পয়েন্টে দেখলাম বাঘের সঙ্গে ছবি তোলার দৃশ্য। আপনি ইচ্ছা করলেই ১০০ থাই বাথ দিয়ে বাঘের গলা জড়িয়ে ধরে ছবি তুলতে পারবেন। তবে আপনি তিনটির বেশি ছবি তুলতে পারবেন না। এর বেশি ছবি তুলতে চাইলে পুনরায় আপনাকে ১০০ থাই বাথ দিতে হবে। তবে দূর থেকে বাঘের সামনে দাঁড়িয়ে আপনি যত খুশি ছবি তুলতে পারবেন। নোংনোচ ভিলেজে রয়েছে অসংখ্য নাম না জানা লতাপাতা জাতীয় গুল্মের সমাহার। ভিলেজের বিভিন্ন স্থানে লতাপাতার সাহায্যে ময়ূরের প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে। দূর থেকে দেখলে অবাক হতে হয়, পৃথিবীতে এত বড় ময়ূর পাওয়া যায়! আসলে ময়ূরটি লতাপাতা জাতীয় গুল্ম ছেঁটে বানানো হয়েছে। অথচ দেখতে অবিকল ময়ূরের রং। আবার কোথাও হাতি, কোথাও পাখি, বাঘ, ভালুক, বানর, কচ্ছপ, জিরাফ ইত্যাদি বানানো হয়েছে। বাংলাদেশে প্রচুর মাটির হাঁড়িপাতিল পাওয়া যায়। এগুলো গ্রামে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কোনো পার্কে মাটির হাঁড়িপাতিল দিয়ে এত সুন্দর ম্যুরাল তৈরি করা সম্ভব, তা নোংনোচ ভিলেজে না এলে কখনো আমার বিশ্বাস হতো না। ভিলেজের ভেতরে পোড়া মাটির ছোট ছোট হাঁড়িপাতিল দিয়ে সিংহ, বাঘ, হাতি, হরিণ ইত্যাদির ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর কারুকাজ উৎকৃষ্টমানের। তা ছাড়া, দেখতে এতটাই পরিপাটি যে, মনে হয় এই মাত্র বুঝি এর কাজ শেষ হয়েছে। হাঁড়িপাতিল দিয়ে তৈরি একটি গাড়িও দেখতে পেলাম। বেশ কিছু পর্যটককে দেখলাম সেই গাড়িতে উঠে ছবি তুলছেন। এ ছাড়া পোড়ামাটির হাঁড়িপাতিল দিয়ে বিশেষ ধরনের ঝরনাও দেখলাম। এক বাক্যে বললে, পোড়ামাটির হাঁড়িপাতিল দিয়ে তৈরি সবগুলো ম্যুরাল অসাধারণ! Thailand-6 থাইল্যান্ড অর্কিডের দেশ। এখানে যে কত প্রকৃতির অর্কিড পাওয়া যায় তা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। নোংনোচ ভিলেজে সারি সারি অসংখ্য অর্কিডের সমাহার দেখতে পাওয়া যাবে। আবার বিভিন্ন প্রজাতির অর্কিড দিয়ে ঝুলন্ত বিভিন্ন ডিজাইন করে রাখা হয়েছে, যা এক কথায় চমৎকার! পার্কের ভেতরে রয়েছে একটি বিশালাকার পুকুর। এখানে আপনি ২০০ থাই বাথ দিয়ে টিকিট কেটে মাছ শিকার করতে পারবেন। এ জন্য আপনাকে অবশ্য বরশি নিয়ে যেতে হবে না। কর্তৃপক্ষ বরশি এবং মাছের আধার সরবরাহ করবে। কয়েকজন মাছ শিকারিকে দেখলাম পুকুরে বরশি দিয়ে মাছ ধরছেন। নোংনোচ ভিলেজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। কারণ এখানে রয়েছে দুটি বিশালাকার রিসোর্ট। আপনি সেখানে রাতে থাকার সুযোগ পাবেন। এ জন্য আপনাকে ১২০০ থাই বাথ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩৮০০ থাই বাথ খরচ করতে হবে। এর মধ্যেই রুম ভাড়া পাবেন। খাবার জন্য রয়েছে বেশ কিছু হোটেল এবং এখানে বিভিন্ন দেশের খাবার পাওয়া যায়। খাবারের মান এবং দাম দুটোই আমার কাছে পরিমিত মনে হয়েছে। এ ছাড়া ভিলেজে ছোট ছোট বাসাও ভাড়া পাওয়া যায়। আশ্বস্ত করার মতো তথ্য হচ্ছে, এগুলোর ভাড়া খুব বেশি নয়। আগেই বলেছি, পুরো ভিলেজ ঘুরে দেখার জন্য ন্যূনতম ৫ ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে চিন্তার কিছু নেই। ঘুরে বেড়ানোর সময় পর্যটকের ক্লান্তি এড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ধরনের রাস্তার ব্যবস্থা করেছে। আপনি চাইলেই সহজ এবং আপনার পছন্দের রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারবেন। তা ছাড়া, গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, হাতির পিঠে চড়েও পার্কের কিছু অংশ ঘুরে বেড়াতে পারবেন। পার্কটিতে রয়েছে প্রচুর খাবার দোকান এবং পর্যাপ্ত টয়লেট সুবিধা। এটা ভেবে ভালো লাগল যে, পর্যটকদের কোনো অসুবিধা যাতে না হয় সে জন্য কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। আপনাকে অযথা কোথাও ছোটাছুটি করতে হবে না। পার্কের একটি স্থানে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রতিটি মডেলের প্রাইভেট কার এবং রেসিং কারের ডিসপ্লে। আপনি ইচ্ছা করলেই এগুলোতে চড়ার সুযোগ পাবেন। পার্কের প্রবেশপথ খুবই সুন্দর গাছপালা দিয়ে সাজানো । তা ছাড়া পার্কে যে গাছপালা এবং ফুলের বাগান দেখলাম সেগুলো পরিবর্তনের জন্য রাস্তার দুই পাশে নার্সারি রয়েছে। ভ্রমণপিপাসু বাংলাদেশিদের জ্ঞাতার্থে বলছি, যারা পাতায়া বেড়াতে যাবেন, অবশ্যই নোংনোচ ভিলেজ দেখতে ভুলবেন না। আশা করি আপনার ভ্রমণে শান্তির পরশ বুলিয়ে দিবে নোংনোচ ভিলেজের নান্দনিক অপরূপ সৌন্দর্য। যেভাবে যাবেন : নোংনোচ ট্রপিক্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন থাইল্যান্ডের চনবুরি প্রদেশের সুকুমভিত রোডে অবস্থিত। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে এর দূরত্ব ১৬৩ কিলোমিটার। আপনি ব্যাংকক থেকে বাস, মাইক্রোবাস এবং ট্যাক্সিক্যাবে যেতে পারেন। পাতায়া থেকে বাস এবং ট্যাক্সিক্যাবে সহজেই যাওয়া যায়। ব্যাংকক থেকে সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা এবং পাতায়া থেকে মাত্র ২৫-৩০ মিনিট। একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৯-০৮-০১৪:
Link copied!