সম্পর্ক
মুশফিকা মোশাররফ শিলু : ভ্যাপসা গরমে কুলসুমের গায়ে ঘামাচি বের হয়েছে অনেক। চুলকিয়ে চুলকিয়ে একেবারে জখম করে ফেলেছে ও। সারা শরীরে এখানে ওখানে লাল দগদগে ঘায়ের মত হয়ে গেছে। আফসারের খুব মায়া লাগে বৌয়ের জন্য। কত শখ করে এইট পাস করা এই সুন্দরী কুলসুমকে সে বিয়ে করেছিল ১৩ বছর আগে। তখন কুলসুমের বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। আফসার হিসাব করে দেখে কুলসুমের বয়স এখন মাত্র ২৯ বছর। তার মানে এখন সে এখন ভরা যৌবন পার করছে। এরই মধ্যে ৩টা সন্তানও জন্ম দিয়েছে কুলসুম। তারপরও স্বাস্থ্যটা নষ্ট হয়নি একটুও। শুধু কোমরের কাছে হালকা একটু চর্বি জমেছে এই যা। তাতে ওর সৌন্দর্যের একটুও হানি হয়নি। শরীরের সকল ভাঁজ, খাঁজ একদম ঠিকঠাক আছে। গায়ের রঙ এখনও দুধে-আলতায়। তার ওপর শান্ত স্বভাবের কুলসুমের বুদ্ধিসুদ্ধিও আছে বেশ। অন্যের বাড়িতে কাজ করে যতটুকুই কামাই করে আনে তা দিয়ে স্বামীর রোজগারের সাথে যুক্ত করে সংসার সাগর সাঁতরে যাচ্ছে। এরপরও স্বামীর প্রতি কোন অভিযোগ এনে অযথা অশান্তি ডেকে আনে না সংসারে।
-সেই কুলসুমের শরীরে এমন গরমের ঠোসা আফসার সহ্য করতে পারে না। ভালোবাসায় আচ্ছন্ন আফসার সহ্য কতে পারে না কুলসুমের এমন কষ্ট দেখে।
একজীবন স্বপ্ন নিয়ে আফসার ঘর বেঁধেছিল কুলসুমের সঙ্গে। কী দিতে পারলো সে স্বামী হিসেবে ওকে? আজ ঢাকা শহরের এই বস্তিতে, ছোট্ট একটা ঘর, যার ছাদ এত নিচু যে বিছানার ওপর দাঁড়ালে মাথা টিনের চালে গিয়ে ঠেকে। টিমটিমা একটা লাইট, কোন জানালাও নেই সেই ঘরে। ভ্যাপসা গরম সরতে পারে না কোন মতেই ঘর থেকে। আসবাব বলতে শুধু এটা চকি। কাপড়-চোপড় গাট্টি বেঁধেই রাখতে হয় এখনও। একটা শোকেস কিনতে কত মন চেয়েছিল কুলসুমের! আফসার তা কিনে দিতে পারেনি। একটা পুরোনো ফ্যান কেনা হয়েছিল যদিও তাও এই বস্তিতে আসার এক বছর পর। সেটার আবার কয়েল নষ্ট হয়ে গেছে। গরমে সিদ্ধ হতে হতে ওরা বেঁচে থাকে প্রতিদিন। তার ওপর বস্তির মহাজন, রিকশা মালিক সমিতির সভাপতিÑ এদের লোভাতুর দৃষ্টি এড়িয়ে কত যে এদিক-ওদিক করে জীবনটা পার করছে আফসার আর কুলসুম, তার ইয়ত্তা নেই। তবুও গ্রামে ফিরে যাবার উপায় নেই।
পুঁজির অভাবে আজও কোন ব্যবসা বা দোকান করতে পারেনি আফসার। শেষ পর্যন্ত রিকশাই চালাতে হয় আফসারকে। মা, তিন বাচ্চা আর শখের সুন্দরী বৌকে খাওয়াতে তো হবে। পাঁচ বছর ধরে রিকশাই চালাতে হয়েছে। এ-ই করে কোনরকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছে। জীবনের আর অন্য প্রয়োজনের সাথে তাদের দেখাই হলো না।
আফসার বুঝতে পারে শুধু খাওয়াতেই জীবন না, আরো কিছু লাগে; যা সে তার সাধের সংসারে জোগান দিতে পারে না। এই যে গরমে কুলসুমের শরীরের এই অবস্থায় একটা ঘামাচি পাউডারও কিনে দেয়ার সামর্থ্য নেই আফসারের। এতে প্রতিনিয়ত মনঃকষ্টে ভোগে আফসার।
মেঘনার ভাঙনে বাড়িঘর, ফসলের জমি সব হারিয়ে একরাশ আশা নিয়ে ঢাকায় পা রেখেছিল সে। শুনেছিল ঢাকার বাতাসে টাকা ওড়ে, ধরতে জানলে বছরখানেকের মধ্যেই অবস্থা ফিরে আসবে। কিন্তু পাঁচ বছরেও তাদের অবস্থা ফেরেনি। প্রতি বছরই যেন শূন্য থেকে শুরু করতে হচ্ছে জীবন। আফসার রিকশা মালিক সমিতি থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সংসারটাকে ঠেলতে শুরু করেছিল, সেই ঋণ আজ সুদে-আসলে পাহাড়ের মত উঁচু হয়ে গেছে, ফেরত দিতে পারছে না।
সংসারে তো তেমন কিছু নেই, হাত-পা নিয়ে পরিবারের সকলে মিলে রাতের আঁধারে পালিয়ে যেতে গিয়েও ধরা পড়ে গেছে আফসার। রিকশা মালিক সমিতির সভাপতি বস্তির সকলকে হুশিয়ার করে দিয়েছিল, যাতে আফসার পরিবার নিয়ে কোন ক্রমেই পালিয়ে যেতে না পারে। ঐদিন রাতেই রিকশা মালিক সমিতির সভাপতি আফসারকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে, যদি কুলসুম তাকে মাত্র একটি রাতের জন্য সেবা করে, তবে আফসারের সব ঋণ শোধ হয়ে যাবে।
আফসারের বুকের ভেতর একটা ভারি পাথর চেপে বসে আছে। অন্য কোন বস্তিতে গিয়ে উঠবে সেই সাধ্যও নেই। একটা ঘরের ভাড়া দিতে হয় দুই হাজার টাকা, আবার পালাতে গিয়েও ধরা খেয়েছে। যাবার আগে ঋণ শোধ করে যেতে হবে। এই বস্তিতে থেকে কুলসুমকেও বাঁচানোর কোন উপায় নেই। বৌ, ছেলে-মেয়েদের আর মায়ের মুখে দুবেলা খাবার তুলে দিতে পারে না। এই সব ভেবে ভেবে আফসারের বেশ অস্বস্তি লাগে। শরীরটাতেও ভাল লাগে না। বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়তে পড়তে ঘরের মধ্যেই ভক করে বমি করে দেয় আফসার।
এতক্ষণ আফসারের মা দেখছিল তার ছেলেকে। কেমন অস্থিরতা নিয়ে সময় পার করছে। দৌড়ে ছেলের কাছে এসে মা উৎকণ্ঠা নিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কী হইছে বাপ, আমার কোন দুরচিন্তা করতাছোস?” আফসার বমি সামলে নিয়ে বলে “আম্মা কুলসুম কই? এট্টু ডাকেন তারে, আপনে গো লগে কতা আছে।”
আফসারের মা দ্রুত উঠে গিয়ে দরজার বাইরে উঁকি-ঝুঁকি মেরে কুলসুমের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করে। দেখে কুলসুম বিষন্ন হয়ে বসে মুরগির চামড়া আর পা বাছাবাছি করছে। মা আফসারের বৌকে ডেকে ছেলের কাছে নিয়ে আসে। বমি পরিষ্কার করে হাত মুছতে মুছতে, ছেলের কাছে বসে মা বলে, “বাপধন ক তোর কী কতা?” আফসার অশান্ত হয়ে মায়ের আর বৌয়ের হাত চেপে ধরে বলে, “আম্মা হেলাল মিয়ায়, ঐ আমাগো রিকশা মালিক সমিতির প্রেসিডেন্ট, আমারে খুব চাপ দিতাছে। তার কাছ থাইক্যা বিশ হাজার ট্যাহা নিসিলাম, অহন সুদে-আসলে বলে নব্বই হাজার হইয়া গেছে। আমি কইত্থিকা দিমু এই ট্যাহা। হ্যার চোখ অহন কুলসুমের উফরে পড়ছে আম্মা। কুলসুমেরে হ্যার কাছে একরাইত দিলে আমার আর ট্যাহা দেওন লাগবো না।” বলে আফসার অসহায় দৃষ্টি নিয়ে বৌ ও মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে, আবার অস্থির হয়ে বলে, “কুলসুমরে, তরে বাচামু ক্যামনে, আমি অক্ষম স্বামী তর; ভাত-কাপড়ের দায়িত্ব ঠিকমত করতে পারি নাই, ইজ্জত মত তরে রাখতেও পারি নাই, খালি কষ্টের উফরে কষ্ট দিসি, আমারে মাফ কইরা দিস!”
কুলসুম ধমক দেয় স্বামীকে, “মাইনসের অসুখ-বিসুখ হয় না যেন, আজাইরা কতা কওন লাগে?” কুলসুম হাত ছাড়িয়ে নেয়। স্বামীকে যত্ন করে শুইয়ে দেয়। পাখা দিয়ে বাতাস দেয়। শাশুড়িকে রাতের রান্নার কথা বলে স্বামীর সেবায় সময় দেয়।
মায়ের বুকভর্তি দীর্ঘশ্বাস! ছেলের অসুস্থতাও ভাবিয়ে তোলে মাকে, তবুও রাতের রান্নার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।
আজকে আবারো কড়া রোদ মাথায় করে সকালটা শুরু হলো। ছেলে-মেয়েদের মুখে এখনও কিছু তুলে দিতে পারেনি কুলসুম। শাশুড়িও না-খেয়ে আছে। আফসার বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। কুলসুমেরও ক্ষিধে পেয়েছে অনেক। এক মুঠের মত ভাত আছে পাতিলে। রাতের ভাত। তাতে পানি ঢালা রয়েছে। আফসার এই পান্তা ভাত খেতে খুব পছন্দ করে। কাল রাতের তরকারি একটু আছে। মনে মনে কুলসুম ঠিক করে রেখেছে এগুলো ওর স্বামীকে খেতে দেবে। কুলসুম শাশুড়িকে অপেক্ষা করতে বলে শরীরে ভালো করে কাপড় জড়িয়ে বস্তির মাথার দোকানে গেল। সারা শরীর কাপড়ে জড়িয়ে থাকলেও কুলসুমের উছলে পড়া যৌবন যে ঢাকে না! দোকানদার কেমন বেহায়ার মত চেয়ে থাকে আর বলে, “কি ভাবিসাব আফসার মিয়ার শইলডা খারাপ?”
কুলসুম জবাব দেয়, “হ ভাইজান, কয়দিন ধইরা রিকশা লইয়া বাইর অইতে পারে না। কাইলকা রাইতে আবার বুমিও করছে। ভাইজান এক কেজি মুড়ি, চাইর-পাছটা পেআইজ আর একটা বিস্কুটের প্যাকেট দেন, বিকালেই ট্যাহা দিয়া যামু।”
দোকানদার দরদি হয়ে উঠে; কুলসুমকে সব সদাই গুছিয়ে দিয়ে দেয় আর গলায় মিহি সুর ঢেলে বলে, “ভাবি যহন যেইডা লাগে নিয়া যাইবেন আইস্যা, ট্যাহা-পয়সা লইয়া ভাবনের কি দরকার? মাইনসেইতো মাইনসের লইগ্গা করবো?” একটা ক্যালানো হাসি ঝুলিয়ে রাখে দোকানদার। কুলসুমের বিরক্ত লাগে। সে বুঝতে পারে এই ক্যালানো হাসির মানে। কুলসুম ভাবে “এই ব্যাডার বৌডা দেহি কত ভালা আর ব্যাডায় আস্তা শয়তান একটা!” মনে মনে গালি দিতে দিতে সদাই নিয়ে বাড়ি যায় কুলসুম। ছেলে-মেয়েদেরকে মুড়ি মেখে দেয় আর শাশুড়িকে বিস্কুটের প্যাকেটটা দিয়ে বলে, “আম্মা নেন, পানি দিয়া বিজাইয়া খান, আফনের দাঁতে বিষ আছে না? মুড়ি তো চাবাইতে পারতেন না।” শাশুড়ির মন ভরে যায় বৌমার প্রতি কৃতজ্ঞতায়। কুলসুমকে বাসার কাজে যেতে হবে। এক মুঠো মুড়ি নিজে মুখে দিয়ে চিবাতে চিবাতে শাশুড়িকে বলে যায় যেন আফসার উঠলে ঐ পান্তা ভাতটা দেয়।
শাশুড়ি পিছু ডাকে বৌমাকে, “ও বৌ কতা হুইন্না যা, আফসারের শইলডা ভালা ঠেহে না আমার, রিকশার ব্যাডার নব্বুই আজার ট্যাহার কি করা?” কুলসুম শাশুড়িকে সান্ত্বনা দেয়, “আম্মা, যত বিপদ ততই বাইর হওনের পথ আছে। আমরা গরিব মানুষ, আমাগো কি কোন ন্যায়-অন্যায় আছেনি? কুনো চিন্তা কইরেন না আম্মা, আফনের পুতেরে চিকিস্সা করুম, খাইয়াও বাচুম। চিন্তা বন্ধ কইরা দেন আমিতো আছি।” শাশুড়ি বৌয়ের কথায় শান্ত হয়; কিন্তু ভাবনা যায় না। ন্যায়-অন্যায়ের কথা কয় কেন বৌ?
কয়েকদিন থেকেই কুলসুম বুদ্ধি করছিল মেয়ে দুটোকে বাসার কাজে রেখে দেবে। মনটা ভেঙে যায় তবুও ওদেরকে কাজে পাঠিয়ে দিতেই হবে, অন্তত খাওয়া-পরা তো জুটবে! তাছাড়া যে দোষে কুলসুম দুষ্ট সে দোষে তো মেয়েরাও তো দুষ্ট! অর্থাৎ মেয়ে দুটোও অনিন্দ্য সুন্দরী! বস্তির মানুষ তো এই মেয়ে দুটোকেও রেহাই দেবে না। ভাগ্যিস এদের বিয়ের বয়স হয়নি এখনও, তাহলে যে কি হতো? ওদের তো এখন মেয়ে বিয়ে দেবারও সামর্থ্যই নেই! মনটা শক্ত করে বাঁধে কুলসুম। ছেলেটার বয়স মাত্র তিন হয়েছে। তাকে, শাশুড়ি আর স্বামীকে যেমন করেই হোক খাইয়ে-পরিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কুলসুম মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে, এই প্রাণগুলোর দায় তো কুলসুমেরই। কুলসুমের মনে পড়ে, তিন-চার দিন আগে হেলাল মিয়া তার বাসায় এসে কুলসুমকে বলে গিয়েছিল, “তোমার স্বামী নব্বুই আজার ট্যাহা দেনা আমার কাছে, ব্যাডায় দিবো কইত্তে?” হেলাল মিয়ার চোখে-মুখে নোংরা যৌনতার মাখামাখি। শরীর যেন আর বাঁধ মানে না এক্ষুনি ঝাঁপিয়ে পড়বে। বিশ্রী অঙ্গভঙ্গি করে টেনে টেনে আবার বলে, “তুমি অমারে ইট্টু যত্নআত্তি করবা, আমার শইলের আগুন নিবাইয়া দিবা তয় তোমার জামাইরে আমি সব ট্যাহারতন মাফ দিয়া দিমু কুলসুম।” কুলসুম কাজের বাড়ি থেকে ফিরে আসতে আসতে নিজের ভেতরের প্ল্যানটাকে একবার ঝালাই করে নেয়, “একরাতের সেবায় নব্বুই হাজার টাকা মাফ অইবো! হ্যার কাছে না গিয়া আর উফায় নাই। এর পর দুটো মেয়েকেই বাসার কাজে দিয়া দিমু এবং অন্য বস্তিতে চলে যামু স্বামী, শাশুড়ি আর ছেলেটারে নিয়া।” ব্যস, এই জীবনের কর্জ শেষ আর কর্জ করবে না কুলসুম- দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয় সে।
কুলসুমের গার্মেন্টসে ঢোকার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ছয় হাজার টাকা বেতন পাবে। শাশুড়ি দিনভর তার ছেলেমেয়ে তিনটাকে দেখবে। হেলালকে কোনরকমে একবার সামাল দিতে পারলে এখান থেকে অন্য বস্তিতে চলে যাবে। চাকরির পয়সা দিয়ে কোনরকমে খাওয়া আর স্বামীর চিকিৎসা করাবে কুলসুম আর বছর দুয়েকের মধ্যে গ্রামে ফিরে যাবে। এই শহরে তার আর কিছু চাওয়ার নেই।
বাড়ি ফিরে স্বামীর খোঁজ নেয় কুলসুম। সারাদিন পর আফসার উঠে বসেছে কিন্তু হেঁটে-চলে বেড়াতে পারছে না। কুলসুম ছেলের দিকে তাকায় তিন বছর বয়সী বাচ্চাটা কিছুই খায়নি সারাদিন। শাশুড়ির মুখখানাও শুকনো হয়ে আছে। মেয়েরা মোড়ের দোকানের সামনে কাঠি দিয়ে কি যেন খেলছে। কুলসুমের ভেতরটা ডুকরে কেঁদে উঠে, “এই পোলাপানগুলারে দইন্নাইত আইন্না বড় পাপ অইয়া গেছে। পাঁচটা বছর অইসে হুদা কষ্ট টোকাইতাসি। আর না, আমার জীবনের চাক্কা আমিই গুরামু। হেলাল মিয়ার সাথে কতা কওনের আগে ভাষানটেক বস্তির সেই ঘরটা একবার দেইখা আসতে হইবো। তার লগে কাম শ্যাষ আর লগে লগে পলামু। আমি সাঁতার দিমু এই সংসার সাগরে আর ভিরমু আমার পছন্দের পাড়ে...
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/২৯-০৮-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :