কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : দুর্ভোগে বানভাসি মানুষ
একুশে সংবাদ : কুড়িগ্রামের ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার সহ ১৬টি নদ-নদীর পানি আরোও বাড়তে থাকায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরোও অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৪৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ২৪ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদীর পানি ১০ সে.মি বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যার পানির প্রবল স্রোতে রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ডিসি সড়কের ধর্মপুর এলাকা ও চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আরো শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
এতে করে জেলার ৫৯টি ইউনিয়নের চার শতাধিক গ্রামের প্রায় চার লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। জেলায় ৪ শতাধিক মৎস্য প্রকল্প পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্যার পানিতে ভেসে গেছে প্রায় ১ কোটি টাকার মাছ। বন্ধ হয়ে গেছে জেলার দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম।
টানা ১৫ দিন ধরে বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় জেলার ৩৫ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ও মৌসুমী ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে- সরকারিভাবে আশ্রয় কেন্দ্র না খোলায় বানভাসী পরিবারগুলো গবাদী পশুসহ আশ্রয় নিয়েছে বাঁধ ও উঁচু স্থানে। অনেকে নৌকা ও বাঁশের মাচানে আশ্রয় নিয়ে দুর্বিসহ দিন কাটাচ্ছে।
সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সামান্য ত্রান তৎপরতা শুরু হলেও বিপুলসংখ্যক বানভাসীর কাছে তা একেবারেই অপ্রতুল হওয়ায় বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট। দুর্গত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত নানা রোগ।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ বিভাগের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আরো তিন ইউনিয়নসহ মোট ৫৬টি ইউনিয়নের ৩৫৩টি গ্রাম পানিবন্দি হয়েছে। এতে ৪১৬ দশমিক ৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৩৩ হাজার ৫২ পরিবার। এছাড়াও ৮৮ কি.মি কাঁচা রাস্তা ও ১ কি.মি পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ২৩ কি.মি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক প্রতীপ কুমার মন্ডল জানান, জেলার ৯ উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ২৩৬ হেক্টর সবজী ও ফসলী জমি এখন বন্যার পানির নীচে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, এ পর্যন্ত বন্যাদুর্গতদের জন্য ৮০০ মেট্রিক টন চাল এবং ১১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। আরো বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ ডটকম/প্রতিনিধি/এফরান/৩০.০৮.০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :