AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

প্রাচীন সভ্যতার আদি লীলাভূমি মহাস্থানগড়


Ekushey Sangbad

০৮:৪৭ এএম, আগস্ট ৩০, ২০১৪
প্রাচীন সভ্যতার আদি লীলাভূমি মহাস্থানগড়

একুশে সংবাদ: আমাদের এই উপমহাদেশে যতোগুলো প্রাচীন ও আদিসভ্য নগরী আছে বগুড়ার মহাস্থানগড় তার মধ্যে একটা। আর এই মহাস্থানগড় বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো জনবসতির ধ্বংসাবশেষ। বগুড়ার মূল শহরের ১৮ কিলোমিটার দূরে বগুড়া ও রংপুর সড়কের করতোয়া নদীর তীর ঘেঁষে এর অবস্থান। প্রাচীন সভ্যতার আদি লীলাভূমির এই স্থানটি ছিলো একদা বাংলার রাজধানী। তখন এলাকাটির নাম ছিলো পৌন্ড্রবর্ধন। পরবর্তীতে নামের সামান্য পরিবর্তনে হয় পুন্ড্রবর্ধন।তরু ছায়াঘেরা শ্যামলিমা পরিবেষ্টিত পরিবেশ সবাইকে মুগ্ধ করবে। মহাস্থানগড়ের ইতিহাস: মহাস্থানগড়ের প্রতœতাত্ত্বিক তথ্য বলে দিচ্ছে, খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকে পঞ্চাশ শতাব্দীর মধ্যে একটি সমৃদ্ধশালী জনপদ হিসাবে গড়ে ওঠে এই শহর। মহাস্থানগড়ের ইতিহাস থেকে সাধারণভাবে জানা যায়, বেশ কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও অন্য সামন্তরাজাদের রাজধানী ছিল। এক সময়ের প্রমত্ত করতোয়া নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠে আদি সভ্যতার এই মহান নগরী। বাংলার আদি সভ্যতার নগরী এই মহাস্থানগড় চারিদিকে প্রাচীরবেষ্টিত বিশাল উঁচু এলাকা। মাটির নিচ থেকে বের হয়ে আসা অত্যন্ত মজবুত কাঠামোর এই প্রাচীর জানিয়ে দেয় কতোটা মজবুত ও সুন্দর ছিল এই নগরী। দৈর্ঘ্যে প্রায়-৫ হাজার ফুট, প্রস্থে সাড়ে ৪ হাজার ফুট, ভূমি থেকে উচ্চতা প্রায়-৪৫ থেকে ৪৬ ফুট। এটুকু এলাকা উদ্ধার হলেও ৮ থেকে ৯ কিলোমিটারব্যাপী এলাকায় রয়েছে নানা নিদর্শন। ইতিহাসবিদগণ মনে করেন, পুন্ড্রনগরের বাইরেও ছিল শহরতলী। দশনীয় স্থান সমূহ: মিউজিয়াম: মহাস্থান গড় খননের ফলে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন যুগের বিভিন্ন দ্রব্যাদিসহ অনেক দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে যা মহাস্থান গডের উত্তরে অবস্থিত জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। মহাস্থান গড় ছাড়াও আরও বিভিন্ন স্থানের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন এখানে সংরক্ষিত আছে। মহাস্থানগড় ছাড়াও আশ-পাশে বিভিন্নস্থানে মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেছে বাড়ীতে ঢোকার প্রবেশ গেট, পুরাকীর্তি সহ বহু মূল্যবান প্রতœতাত্ত্বিক সম্পদ। জাদুঘরের প্রবেশ পথের গেটগুলো ফুলের বাগানের মধ্যে স্থাপন করে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে। মাজার শরীফ: মহাস্থান বাস স্ট্যান্ড থেকে কিছুটা পশ্চিমে হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর মাজার শরীফ অবস্থিত। কথিত আছে মাছের পিঠে আরোহন করে তিনি বরেন্দ্র ভূমিতে আসেন। তাই তাকে মাহী সওয়ার বলা হয়। কথিত আছে হযরত মীর বোরহান নামক একজন মুসলমান এখানে বাস করতেন। পুত্র মানত করে গরু কোরবানী দেয়ার অপরাধে রাজা পরশুরাম তার বলির আদেশ দেন এবং তাকে সাহায্য করতেই মাহী সওয়ারের আগমন ঘটে। সেদিনের সেই খরস্রোতা করতোয়া আজ শীর্ণকায় এক নদী। পুরো খালের মতো অবস্থা এখন এই নদীটির। যা দেখা যাবে মহাস্থানগড় এলে । বেহুলার বাসর ঘর: মহাস্থানগড় বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রায় ২কি.মি দক্ষিণ পশ্চিমে একটি বৌদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে যা সম্রাট অশোক নির্মাণ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। স্তম্ভের উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। স্তম্ভের পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোন বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি গোসল খানা । এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই বেশি পরিচিত। জিউৎকুন্ড: শীলাদেবীর ঘাটের পশ্চিমে জিউৎকুন্ড নামে একটি বড় কুপ আছে। কথিত আছে এই কুপের পানি পান করে পরশুরামের আহত সৈন্যরা সুস্থ হয়ে যেত। যদিও এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি। পরে জীয়তকুন্ডের কথিত অলৌকিক কান্ড লোক মুখে প্রচারিত হত এবং তখনকার দিনে লোকেরা এটাকে বিশ্বাসও করতো। শীলাদেবীর ঘাট: কিংবদন্তীক্রমে মহাস্থানগড়ের কাছে নদীর ধারের এক বটতলা পরিচিতি পেয়েছে শীলাদেবীর ঘাট হিসেবে। জনশ্রুতি আছে, রাজা পরশুরাম যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হওয়ার পর তাঁর অনিন্দ্যসুন্দরী কন্যা শীলাদেবী আপন মর্যাদা রক্ষায় করতোয়া নদীতে ঝাঁপ দিয়ে জীবন বিসর্জন দেন। সেই থেকে আজ তা শীলাদেবীর ঘাট নামে পরিচিত হয়ে আছে। কালের আবর্তে করতোয়া নদী শুকিয়ে গেছে। তবুও শীলাদেবীর স্মৃতিকে ধরে রাখতে প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিতে মেলা বসে এই ঘাটের আশে-পাশে। হিন্দু সম্প্রদায় এই দিনে পূণ্যস্নান করে এই শীর্ণকায় নদীতে। স্কন্দ মন্দির: মহাস্থানগড় থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে স্কন্দের ধাম নামের যে নিদর্শন চোখে পড়ে তা স্কন্দ মন্দির বা কার্তিকের ধাম নামে পরিচিতি পেয়েছে। ইতিহাসবিদগণ মনে করেন, রাজতরঙ্গিনীতে যে কার্তিকের মন্দিরের উল্লেখ আছে এটি তারই ধ্বংসাবশেষ। যে স্কন্দ মন্দির প্রাঙ্গণে একদা কাশ্মীররাজ বিনয়াদিত্য নৃত্য উৎসবে নর্তকীশ্রেষ্ঠ কমলাকে হৃদয় দিয়েছিলেন, আর হৃদয় দেওয়ার সেই গল্পটি খুঁজে পাওয়া যায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে তাকালে। গোবিন্দ ভিটা: মহাস্থানগড় জাদুঘরের ঠিক সামনেই গোবিন্দ ভিটা অবস্থিত। কালীদহ সাগর: মহাস্থান গডের পশ্চিম অংশে রয়েছে ঐতিহাসিক কালীদহ সাগর এবং পদ্মাদেবীর বাসভবন। একুশে সংবাদ ডটকম/মামুন/৩০.০৮.২০১৪
Link copied!