অন্যরকম বিয়ে !
একুশে সংবাদ : শেরওয়ানি ও মাথায় পাগড়ি পরে সেজেছিলেন বর। কনেও সেজেছিলেন বিয়ের সাজে। রঙ-বেরঙের মরিচা বাতির আলোকসজ্জা ছিল পুরো বাড়িতে। আঙিনায় ছিল বিয়ের মঞ্চ। নির্ধারিত সময়ে হাজির হন অতিথিরা। কিন্তু উপস্থিত হননি বিয়ের কাজী। উপায়ান্তর না পেয়ে বর নিজেই কনেকে বিয়ের কবুল বলার প্রস্তাব দেন। মুহূর্ত দেরি না করে কনেও বলেন কবুল। তবে এটা কোন নববিবাহিত দম্পতির বিয়ে নয়। তারা বিয়ে করেছিলেন অর্ধশতাব্দী আগে। শুক্রবার উদযাপন করলেন বিয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী। বলছিলাম সাবেক সচিব মাহবুব তালুকদার ও তার স্ত্রী নীলুফার বেগমের কথা। শুক্রবার রাতে বারিধারার নিজ বাসভবনে ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে তারা বিয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেন। ওই দম্পতির রয়েছে দুই মেয়ে, এক ছেলে। তারা দাম্পত্য জীবন শুরু করেছেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান মাহবুব তালুকদার ও নীলুফার বেগম। এসময় মাহবুব তালুকদার বিয়ের ৫০তম বার্ষিকীতে ফের স্ত্রীকে বিয়ে করার প্রস্তার দেন। স্ত্রী নিলুফার বেগমও প্রস্তাব সহাস্যে ‘কবুল’ করেন। এসময় আমন্ত্রিত অতিথিরা করতালির মাধ্যমে তাদের অভিনন্দন জানান। এরপর ওই দম্পতির বিয়ের স্মৃতিচারণ করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। মাহবুব তালুকদার ও নীলুফার বেগম দম্পতির সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা জানাতে এসে এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, তারা দু’জনই আমার ছাত্র-ছাত্রী। ৫০ বছর আগে তাদের বিয়েতে আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। আজ ৫০তম বার্ষিকীতেও আমন্ত্রিত হয়ে আমি আনন্দিত। আশা করছি এই দম্পতি বিয়ের শতবার্ষিকীও পালন করতে পারবে। তাদের শুভেচ্ছা জানাতে এসে সৈয়দ শামসুল হক কবি আহসান হাবীবের দু’টি পক্সক্তি পাঠ করেন, ‘বাদলার দিনে নোনতার মতো মন্দ নয়। তবুও সূর্য উদয়।’ মাহবুব তালুকদারের বাল্যবন্ধু মাহমুদ কোরেশী ফরাসি ভাষায় ওই দম্পতিকে শুভেচ্ছা জানান। স্মৃতিচারণ পর্ব শেষে নৈশভোজ শুরু হয়। নৈশভোজ শেষে ফের চলে শুভেচ্ছা পর্ব। এরপর নীলুফার বেগম বেহালা বাজিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন। পরে বাউল শিল্পী সুরের মূর্ছনায় সবাইকে মাতিয়ে তোলেন। বাউল সংগীত পরিবেশনায় মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী মীজানুর রহমান শেলী, সাবেক উপদেষ্টা ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, নিউজ টুডে সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বিশিষ্ট ছড়াকার ও জনপ্রিয় সংবাদ পাঠিকা মাহবুবা চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বার কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূইঞা, প্রফেসর নজরুল ইসলাম, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ আবদুস সামাদ, আবুল হাসান চৌধুরী, মাহমুদ শাহ কোরেশী, প্রিন্সিপাল হামিদা আলী, বাদল রায়, লেখিকা শামীমা শাহীন, হোসনে জাহান, আরিফ নজরুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ ডটকম/আর/৩১-০৮-০১৪:
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :