AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বগুড়ায় দাম বেশি হওয়ায় কলা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা


Ekushey Sangbad
কৃষি ডেস্ক
১২:৩৮ পিএম, ২০ নভেম্বর, ২০২২
বগুড়ায় দাম বেশি হওয়ায় কলা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা

বাজারে দাম বেশি হওয়ায় বগুড়ায় কৃষকরা কলা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। কোনো কোনো কৃষক ধানের বদলে কলা চাষ করছেন। কৃষকরা বলছেন, ধান চাষ করায় আয় ব্যয় সমান হয়ে যাচ্ছে। আর কলা চাষে লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে। বগুড়ার বাজারে এখন কলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। ভালো দামের কারণে কৃষকরা কলা চাষে ঝুঁকছেন।

 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, চলতি বছর কৃষকরা কলা চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর কলার ভাল ফলন হয়েছে। সারা বছরই কলার চাষ হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ১৯ টন করে ফলন ধরা হয়েছে। সেই হিসেবে শুধু বগুড়াতেই ফলন হবে ২০ হাজার ৯০০ টন কলা।

 

জেলায় ভাল ফলন পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। পুন্ড্রনগর খ্যাত বগুড়া জেলার মাটি বেলে দোআঁশ হওয়ায় দেশের এ অঞ্চল কলা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। সমগ্র জেলাতেই কলার বাম্পার ফলন হয়। এর মধ্যে শিবগঞ্জ এবং গাবতলি উপজেলা কলা চাষের জন্য বিখ্যাত। জেলার মোকামতলা কলার হাটের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। বাজারে কলার দাম অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন পুরো জেলার প্রতিটি উপজেলাতেই কৃষকরা শুরু করেছেন কলা চাষ।

 

বগুড়াতে বিভিন্ন ধরনের কলার চাষ হয়। এগুলোর মধ্যে অনুপম, সাগর, সবরি, বিচিকলা, চিনি চাম্পাসহ বিভিন্ন নামের কলা চাষ হয়ে থাকে। জেলার পল্লী এলাকায় দেশী কলার চাষ দেখা যায়। কৃষকরা বলছেন, শুধু দামের কারণে চাষিরা কলা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।

 

বগুড়া শহরের কলা বিক্রেতা হাসমত আলী জানান, বিভিন্ন এলাকায় এখন ৪০ থেকে ৬০ টাকা হালির কলা বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের কলা ৪০ টাকা হালি এবং বড় ও মোটা আকারের কলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালি। আবার কলা বেশি পেকে গেলে সেগুলো রাখা যায় না বলে ৩০ টাকা হালি কলা বিক্রি করে দিয়ে থাকে।

 

বগুড়া মহাস্থানগড় এলাকার কলা চাষি মো. সুমন জানান, ১২ থেকে ১৩ মাসের মধ্যে কলার ফলন পাওয়া যায়। পরিপক্ক কলার কাঁদি বিক্রি করা হয়। কলার পরিমাণ অনুযায়ী ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কাঁদি বিক্রি হয়। সেই কাঁদি পাইকাররা আবার বিভিন্ন হাটে বিক্রি করার পর কলার ব্যবসায়িরা কলা কিনে নিয়ে যায়। তিনি জানান, বাজারের বেশি ভাগ কলায় জাগ বা হিট দিয়ে পাকানো হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও আবার সাদা রঙের এক ধরনের মেডিসিন দিয়ে কলা পাকিয়ে বাজারে বিক্রি করে। গাছপাকা কলা খুব কম পাওয়া যায়।

 

বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের জোড়গাছা গ্রামের আলতাফ আলীর ছেলে কৃষক ছরোয়ার হোসেন জানান, বাজারে ভাল দাম দেখে ২০ শতাংশ জমিতে কলার চাষ করা হয়েছে। বৈশাখ মাসে তিনি তার জমিতে কলাগাছ রোপণ করেছেন। এখন তার কলাগাছে মোচা আসা শুরু করেছে। তিনি কলা চাষ করে এখন লাভের আশায় জমির যত্ন করে যাচ্ছেন।

 

বগুড়া জেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জাতের কলার চাষ হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে অমৃত সাগর, সবরি, কবরি, চাঁপা, মেহের সাগর, কাবুলি, বিচিকলা ও আনাজি কলা উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি বারিকলা-১, বারিকলা-২, বারিকলা-৩ ও বারিকলা-৪ নামের চারটি উচ্চ ফলনশীল কলার জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এসব জাতের মধ্যে বারিকলা-১ চাষিদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বারিকলা-১ একটি উচ্চ ফলনশীল জাত, পাকা কলার রঙ উজ্জ্বল হলুদ, খেতে বেশ সুস্বাদু।

 

বারিকলা-২ তরকারি খাওয়ার উপযোগী একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। গাছ তুলনামূলকভাবে ছোট আকৃতির। বারিকলা-৩ একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। দেখতে অনেকটা বাংলাকলা বা কবরি কলার মতো। বারিকলা-৩ উচ্চ ফলনশীল একটি চাঁপাকলার জাত। পর্যাপ্ত রোদযুক্ত ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধা সম্পন্ন উঁচু দোআঁশ এবং বেলে দোআঁশ মাটি কলা চাষের জন্য উপযুক্ত। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে কলার চারা রোপণ করা হয়। আশ্বিন থেকে কার্তিক, মাঘ থেকে ফাল্গুন এবং চৈত্র থেকে বৈশাখ-এ তিন সময়েই কলার চারা রোপণ করা যায়। তবে আশ্বিন-কর্তিক মাসে রোপণ করা কলাগাছে বেশি ফলন পাওয়া যায়।

 

বগুড়ার চাষিরা বলছেন, জেলায় কলার দাম এখন বেশি। যে কারণে চাষিরা কলা চাষে ঝুঁকছেন। আর ধান চাষের পর তা বাজারে বিক্রি করে আয় ব্যায় সমান হয়ে যায়। কিন্তু কলা চাষের এক বছর পর থেকে দিগুণ আয় হয়ে থাকে। যে কারণে বগুড়ায় আগের থেকে কলা চাষ বাড়ছে। কলা বিক্রির জন্য জেলার মহাস্থানগড়, রহবল ও মোকামতলায় পাইকারি কলার হাট বসে থাকে। যেখান থেকে ট্রাকে করে কলা ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামে বিক্রি হয়ে থাকে।

একুশে সংবাদ/ বা.প্র/ রখ

 

 

Link copied!