AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মৌসুমী ফল বিক্রি করে স্বাবলম্বী শেরপুরের কৃষক


Ekushey Sangbad
কৃষি ডেস্ক
১০:৫০ এএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২২
মৌসুমী ফল বিক্রি করে স্বাবলম্বী শেরপুরের কৃষক

শেরপুরের বিভিন্ন উপজেলায় মৌসুমী ফল বিক্রি করে প্রায় শতাধিক কৃষক অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। শেরপুরে উৎপাদিত মৌসুমী ফল রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে প্রেরণ করে যে লাভ হয়, তা দিয়েই উপজেলার মৌসুমী ফল বিক্রেতা পরিবারের ছেলে মেয়দের পড়ালেখার খরচসহ চলে সংসারের ব্যয়।

 

ফল ব্যবসায়ীরা গাছচুক্তি হিসেবে মৌসুমী ফল জলপাই, আম, জাম কাঠাঁল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, আমড়া, জাম্বুরা, তেঁতুল, বেল, আমলকী, কদবেল ও নারকেলসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফল মৌসুমের শুরুতেই কৃষকদের কাছ খেকে ক্রয় করে রাখেন। পরে বিক্রির উপযোগী হলে তা সংগ্রহ করে বাছাই করে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে বিক্রি করেন। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ই লাভবান হয়।

 

এখানের ফল অপেক্ষাকৃত বড়, সুন্দর ও সুস্বাদু হওয়ায় সারা দেশে শেরপুরের ফলের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রায় প্রতিদিন কয়েক ট্রাক মৌসুমী ফল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে যাচ্ছে। এ ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন উপজেলার শতাধিক পরিবার। তারা এ ফলের ব্যবসা করেই তাদের সংসার ও ছেলে মেয়ের পড়ালেখার খরচ বহন করেন।

 

এমন ব্যবসায়ীর মধ্যে সদর উপজেলার বলাইরচরের খোরশেদ আলম, রৌহার রফিক, নকলা জালালপুরের আব্দুল মিয়া, নালিতাবাড়ী রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়নের আসাদুলসহ জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রায় ৩০/৪০জন ব্যবসায়ী এ ব্যবসার সাথে জড়িত।

 

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা সারা বছর বিভিন্ন মৌসুমী ফলের ব্যবসা করেন। মৌসুমের শুরুতেই তারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে অগ্রীম টাকা দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম দামে মালিকদের কাছে গাছের ফল চুক্তি হিসেবে কিনে রাখেন। পরিপক্ক হলে ওইসব ফল সংগ্রহ করে বিভিন্ন জেলাসহ রাজধানী ঢাকায় সরবরাহ করেন। তারা মাসে অন্তত ১০ থেকে ১২ বার ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে কাঁচা ফল চালান দিতে পারেন।

 

তাদের দেয়া হিসেব মতে, বছরে ১২০ থেকে ১৪৪ বার কাঁচা ফল পাঠাতে পারেন তারা। প্রতিচালানে এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে। এতে করে প্রতি পাইকারের বছরে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা লাভ হয়। এ লাভের টাকাতেই তাদের সারা বছরের যাবতীয় খরচ চলে।

 

মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক জানান, তিনি ৮ বছর ধরে এ ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। চলতি মৌসুমে তিনি ৬০ হাজার টাকায় ৫৫ টি জলপাই গাছ কিনেছেন। জলপাই বিক্রি চলবে ৪৫ থেকে ৬০ দিন। এ দেড়-দুই মাসে তার অন্তত ৫০ হাজার টাকা লাভ বলে বলে আশা করছেন। তারা প্রথমে জলপাই গাছ থেকে সংগ্রহ করে ছোট ও বড় বাছাই করে তা বস্তাবন্ধি করেন। প্রতি বস্তায় ১২০ কেজি করে জলপাই ভরেন। ছোট সাইজের জলপাই প্রতি বস্তা এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা এবং বড় সাইজের জলপাই প্রতি বস্তা ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

 

জলপাই গাছের মালিক সুফিয়া বেগম জানান, তার দুটি গাছ মৌসুমের শুরুতে ৫,২০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। এ টাকাতেই তার দুই ছেলে-মেয়ের সারা বছরের খাতা, কলম কেনার খরচ হয়ে যাবে। প্রতি বছর তিনি জলপাই বিক্রির টাকায় ছেলে-মেয়ের খাতা, কলম কিনে দেওয়াসহ অন্যান্য কাজেও ব্যয় করতে পারেন। অন্য এক কৃষক কব্দুল হোসেন জানান, মৌসুমের শুরুতে একসাথে টাকা পাওয়ায় তা সংসারের বেশ কাজে লাগে। ব্যবসায়ীরা চুক্তিতে না কিনলে নিজেরা গাছ থেকে জলপাই সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করতে গেলে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি হতো।

 

মৌসুমী ফল ব্যবসায়ীরা দাবি করে জানান, সরকার যদি তাদের জন্য সহজ ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতেন, তাহলে তাদের দেখে অনেকেই এ ব্যবসার প্রতি ঝুঁকতেন। এতে উপজেলার অনেকে  আত্ম নির্ভরশীল হওয়ার পথ খুজে পাবেন, হতেন স্বাবলম্বী।

 

এ ব্যাপারে শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সুমন্ত দাস বলেন, শেরপুর সদর, নকলা, নালিতাবাড়ী উপজেলার মাটি মাটি আম, জাম কাঠাঁল, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, জলপাই, আমড়া, জাম্বুরা, তেঁতুল, বেল, আমলকী, কদবেল ও নারকেলসহ বিভিন্ন মৌসমী ফল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। উপজেলায় অগণিত ফলদায়ী গাছ রয়েছে। এসব গাছের ফল অন্যান্য জেলায় যথেষ্ট কদর রয়েছে। তিনি বলেন, যেকেউ ফলের বাগান করে ও মৌসুমী ফলের ব্যবসা সহজেই স্বাবলম্বী হতে পারেন। তাদেরকে কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে।

একুশে সংবাদ/ বা.স.স/ রখ

Link copied!