পঞ্চগড়ের বোদায় রোপা আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলছে ফসল ঘরে তোলার উৎসব। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার দশ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কৃষকেরা। তুলনামূলক উঁচু জমিতে কার্তিকের শুরু থেকেই আমন ধান কাটা শুরু হয়।
ইতিমধ্যে উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ জমির ধান কাটা শেষ, চলছে মাড়াই ও শুকানোর কাজ। গ্রাম-গঞ্জে শুরু হয়েছে নতুন ধান ঘরে তুলে তা দিয়ে বিভিন্ন রকম পিঠা-পায়েশ তৈরির উৎসব। উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে পেকে আছে সোনালি ধান।
এ বছর পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত এবং তুলনামূল ধানের রোগবালাই কম থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি গুটি স্বর্ণ ১৭ থেকে ১৮ মন এবং সুফল স্বর্ণ বা চিকন ধান ১৫ থেকে ১৬ মন পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে। এ দিকে বাজারে নতুন ধান মণপ্রতি ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সরকারি ভাবে এলএসডি থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে ধান কেনার মাইকিং করা হয়েছে। এ দিকে সার,বীজ ও কীটনাশকের দামের পাশাপাশি শ্রমিকের পারিশ্রমিক বেশি হওয়ায় আশানুরূপ লাভ করতে পারছেন না কৃষকেরা।
এ ব্যাপারে বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের ছেতনাইপাড়া পাড়া এলাকার ওসমান গণি নামে এক কৃষক জানায়, এ বছর সার, বীজ ও ডিজেলের দাম অনেক বেশি। প্রতি বিঘা ধান কাটতে শ্রমিককে দিতে হয় ১হাজার ৮ শত থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা। এছাড়া মাড়াই এবং অন্যান্য খরচ তো আছেই। বাজারে বর্তমানে যে দাম আছে তাতে খুব একটা লাভ হচ্ছে না। আরো ঝলইশালশিরি ইউনিয়নের নতুনহাট এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানায়, বর্তমানে ধান চাষ করি খাওয়ার জন্য। কেন না ধানের বীজ বোপন থেকে শুরু করে বাড়িতে নিয়ে আসা পর্যন্ত যে পরিমাণে খরচ হয় তাতে সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ৪/৫ হাজার টাকার বেশি থাকে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহম্মেদ রাশেদ উদ নবী বলেন, চলতি মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪০৩০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ২৪০৩৫ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এ বছর রোপা আমন ধানের চাষ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের ধানের বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সার্বিক দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ল.ম.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :