জাতিকে মেধা -মননে পরিপূর্ণ করে বিশ্বের কাছে ফুটিয়ে তুলতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শিক্ষার্থীর পরবর্তী জীবনের সঞ্চয়।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ১৮৫৮ সালে এই যাত্রার শুরু হয়। ১৫৩ বছরের ইতিহাস পেরিয়ে ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে `জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন` ( ২৮ নং আইন) বলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সদরঘাটে বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে উঠে গর্বের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ` শিক্ষা,ঈমান,শৃঙ্খলা ` এই নীতি বাক্য নিয়ে। গৌরবময় এই সতেরো বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই নীতি বাক্যকে পরিপূর্ণ করেছে। দেশে এবং দেশের বাইরেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাফল্য দেখার মত। শিক্ষার্থীদের প্রাণের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিনে আয়োজন করা হয় বর্নাঢ্য আনন্দ উৎসব। প্রতিবছরই ২০ অক্টোবর `বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ` পালন করা হয়। করোনা পরবর্তী সময়ে পুনরায় শিক্ষাঙ্গনে ফিরে আসার আনন্দ ফুটে উঠে এই `বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ` উদযাপনের মাধ্যমে।
আজ সকালে জাতীয় সংগীতে পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পত্রিকা উত্তোলন করা হয়। এরপর পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন করেন উপাচার্য ইমদাদুল হক। এরপর শুরু হয় প্রকাশনা উৎসব এবং প্রত্যেকটি বিভাগের আনন্দ র্যালি। আনন্দ র্যালিটি পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে রায়সাহেব বাজার মোর হয়ে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। আনন্দ র্যালিতে মুখোরিত হয় পুরান ঢাকা। প্রত্যেক বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং শিক্ষার্থীদের শ্লোগানে মুখরিত হয় পুরাণ ঢাকা। পুরো রোদের উত্তাপ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আনন্দ র্যালিতে এতটুকু বিঘ্ন ঘটাতে পারেনি।
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর আইনুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি দেখার মত। দেশে এবং দেশের বাইরে তারা তাদের সাফল্যের সাক্ষর রেখে যাচ্ছে। বি সি এসেও তাদের সাফল্য পরিলক্ষিত। দেশের অগ্রগতি কে সম্প্রসারিত করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পুরো বিশ্বেই এখন সংকট চলছে। আনন্দ র্যালি শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে সহায়ক হবে। আমাদের যে সংকট আছে তাও খুব তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নেওয়া হবে। আমাদের শিক্ষকরা অনেকেই বাইরেই দেশ থেকে পিএইচডি করে আসছে। তাদের জ্ঞানে শিক্ষার্থীরা আলোকিত হচ্ছে। আমাদের এখানে পাচঁ শিক্ষক আছেন যারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিল। এটা আমাদের জন্য অনেক গর্বের।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই আমরা। সাফল্য অগ্রগতির দিক থেকে যতটা এগিয়েছি আমরা তা অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে অনেকটাই বেশি। মাত্র সতেরো বছরে এই অগ্রগতি আসলেই প্রশংসনীয়। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী পুলিশে যাচ্ছে প্রশাসনে স্থান করে নিচ্ছে নজির বিহীন। তাদের এই সাফল্য আমাদের জন্য গৌরবের। দেশের আমলাতন্ত্রে এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ব্যাপক হচ্ছে। জুডিসিয়াল পরীক্ষাতেও তাদের সাফল্য প্রশংসনীয়। দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। আজ সারাদিন অনুষ্ঠান হয়েছে। চারুকলা, নাট্য বিভাগ আরো অনান্য বিভাগের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে মুখোরিত ছিল আজ সারাদিন পুরো ক্যাম্পাস। এই আনন্দ উৎসব শিক্ষার্থীদের নতুনভাবে জাগরিত করবে। যা তাদের পড়ালেখার অগ্রগতি আরো বাড়াবে।
অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর আজম খান বলেন সতেরো বছরে অর্থনীতি বিভাগের অনেক উন্নতি হয়েছে। বি সি এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্য অনেক। গবেষণা ক্ষেত্রেও আমাদের শিক্ষকদের অগ্রগতি অনেক। পড়ালেখার মান অনেক বেড়েছে মাত্র সতেরো বছরে।বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিহ্ন রেখে আসছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে খুব দ্রুত আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অনান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে অনেক এগিয়ে যাবে।
সারাদিন নানা উৎসব মুখর আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হয় আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন।` বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ` শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ব্যাপক ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।
একুশে সংবাদ.কম/আ.ই.প্র.জা.হা
আপনার মতামত লিখুন :