কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগত হামলাকারীদের গ্রেফতার, অছাত্র এবং বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, আহত শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ এবং মো: সালমান চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদান পূর্বক নিরাপদ ক্যাম্পাস সুনিশ্চিত, এবং হামলায় ইন্ধনদাতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণের দাবীতে বই পড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস, গল্পগ্রন্থ, রচনাসমগ্র, কবিতা আবৃত্তি করেন৷
উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’, এস এম জাকির হোসাইনের লেখা ‘আন্দোলন সংগ্রামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’, শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, মুজিব শতবর্ষের রচনা ‘মুজিব চিরন্তন’, সাইফুর রহমান সোহাগের লেখা ‘ছাত্রলীগের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস’, বদরুদ্দীন উমরের লেখা ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ’, আনিসুল হকের লেখা ‘মা’, হাসান আজিজুল হকের লেখা ‘আত্নজা ও একটি করবী গাছ’, সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহর লেখা ‘চাঁদের অমাবস্যা’, বড়ু চণ্ডীদাসের লেখা ‘শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন’, হুমায়ুন আহমেদের লেখা উপন্যাস ‘দেয়াল’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’, ‘বিসর্জন’সহ বিভিন্ন বই।
অবস্থান কর্মসূচি পালনকারী ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী ইমাম হোসেন মাসুম বলেন, ‘আমরা ইতোপূর্বে পাঁচ দফা দাবী ঘোষণা করেছি। কিন্তু এখনও আমাদের কোন দাবী পূরণ করা হয়নি৷ আমরা গতকাল সংবাদ সম্মেলন থেকে তিন দফা দাবী ঘোষণা করেছি। যার অংশ হিসেবে আজকের আধা বেলা অবস্থান কর্মসূচি, আগামীকাল সংহতি সমাবেশ এবং বৃহস্পতিবার সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ পালন করব। এর পরেও যদি দাবী আদায় না হয় তাহলে দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করব।’
আন্দোলনের মুখপাত্র রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনের সাথে আমাদের কথা হয়েছে কিন্তু আমরা কোন কার্যকর পদক্ষেপ কিংবা আশ্বাস পাইনি। যতদিন দাবি আদায় না হবে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা আশা করছি উপাচার্য মহোদয় আমাদের যৌক্তিক দাবীসমূহ অতি শীগ্রই মেনে নিবেন।’
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান জেরিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষাঙ্গন। এভাবে বহিরাগত কতৃক শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমাদের আজকের কর্মসূচি হল পাঠচক্রের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে বার্তা দেয়া যে আমরা বই নিয়ে রাস্তায় নেমেছি, আমাদের নিরাপত্তা নেই। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এ সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কবিতা শুনেন এবং নিজের লেখা ‘রূপসা পাড়ের বেলা’ কবিতা আবৃত্তি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইদুল আল আমিন।
এ কর্মসূচীর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড এ এফ এম আব্দুল মঈনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :