তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ছাত্রলীগের দুই নেতার আইন অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নেওয়াজ শরিফ ফাহিম ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাত ১০টার দিকে হল গেইটে এ ঘটনা ঘটে। তারা দুজনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বাসিন্দা। এ ঘটনায় নেওয়াজ শরিফ ফাহিমকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে হল প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে মিরহাম রেজা নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থীর সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলাকে কেন্দ্র করে আইন অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নেওয়াজ শরিফ ফাহিমের বাগবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে রাতে মিরহাম রেজা ঘটনাটি নিজ বিভাগের সিনিয়র সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সেলিম আহমেদকে জানায়। পরে রাত ১০টার দিকে হল গেইটের সামনের চায়ের দোকানে ফাহিমের কাছে জুনিয়রকে ধমক দেওয়ার বিষয়ে জানতে চায় সেলিম। এসময় উত্তেজিত হয়ে উঠে ফাহিম।
ফলে ফাহিমের সাথে বাগবিতণ্ডা হয় সেলিমের। দুই দফা বাগবিতাণ্ডর এক পর্যায়ে ফাহিম সেলিমকে মারধর করলে দুই জনই মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি সমাধান করতে ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাৎ মো. সায়েমের রুমে ডাকা হলে সেখানে ফের উত্তেজিত হয় ফাহিম। এসময় সেলিমের বন্ধুরা ফাহিমকে মারধর করতে তেড়ে আসলে সিনিয়ররা তাদের শান্ত করেন। পরে প্রভোস্টের রুমে উভয়কে ডেকে আনা হয়। সেখানে সিনিয়র শিক্ষার্থী ফাহিম জুনিয়রকে মারধর করায় চলমান মাস শেষে তাকে হল ছাড়া নির্দেশ দেয় প্রভোস্ট ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম।
এ বিষয়ে মিরহাম রেজা বলেন, ‘হলের ডাইনিং এ কিছু টাকা বকেয়া থাকায় ডাইনিং বয়কে আমি ডাকছিলাম। এসময় উনি (ফাহিম) আমি কেন উচ্চস্বরে ডাকছি জানতে চান। তিনি আমাকে বলেন, `তুই আমারে চিনস?’ ‘তুই এমনে কথা বলস কেন?’ এসময় আমি উনাকে চিনি না বললে তিনি বলেন আর একটা কথা বললে তোর হাত পা কেটে ফেলবো। উনাকে আমি চিনতাম না, উনাকে সালাম না দেওয়ায় এমন আচরণ করে আমার সাথে।’
সেলিম আহমেদ বলেন, ‘বিভাগের জুনিয়রকে ধমকানো হয়েছে জানতে পেরে আমি তার (ফাহিম) কাছে বিষয়টি কি হয়েছে জানতে চাই। কিন্তু উনি আমাকে কথাবার্তার এক পর্যায়ে পাঞ্জাবির কলার ধরে হল গেইটে মারধর করেন।’
এ বিষয়ে ফাহিম বলেন, ‘হলের সিনিয়র হওয়ায় আমি তাকে (মীরহাম) সতর্ক করার জন্য প্রভোস্টের রুমের সামনে উচ্চস্বরে কথা না বলতে নিষেধ করি। কিন্তু সে আমার সাথে উদ্ধতপূর্ণ আচরণ করার পাশাপাশি তার বন্ধুদের নিয়ে আসে আমাকে মারার জন্য। আর সেলিম আমাকে একই বিষয়ে জিজ্ঞেস করে আমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে। যেটা নিয়ে সে একপর্যায়ে আমার দিকে তেড়ে আসলে আমি তাকে আঘাত করি। পরবর্তীতে সেও আমাকে পাল্টা আঘাত করে।’
হল ছাড়ার নির্দেশনার বিষয়ে ফাহিম বলেন, ‘জুনিয়রকে মারধর করাটা আমার ঠিক হয়নি। তাই স্যাররা হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এটা যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় তবে আমার আক্ষেপ থাকবে।’
সার্বিক বিষয়ে হলের প্রভোস্ট মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক সিদ্ধান্তনুযায়ী ফাহিমকে (প্রথমে মারধরকারী) এ মাসের শেষে হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। পরবর্তীতে হল প্রশাসন সবাইকে নিয়ে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।’
একুশে সংবাদ.কম/সম
আপনার মতামত লিখুন :