ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী নওরীন নুসরাত স্নিগ্ধার রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘বন্ধন ৩২’ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরাল চত্বরে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ও বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক সাহিদা আখতার সহ ‘বন্ধন ৩২’ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আমিও একজন নারী, আমিও ভয়ে আছি’, ‘আমার ক্যাম্পাসের সম্পদ ফেরত দিন’, ‘ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই’, ‘আত্মহত্যা নাকি হত্যা?’, ‘তার পরিবারকে আইনি সুরক্ষা প্রদান করা হোক’, ‘আমরা বন্ধু হত্যার বিচার চাই, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হোক’, ‘বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই’, ‘ছাদ থেকে পড়লো নাকি ফেলে দিলো?’ সহ বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্লাকার্ড দেখা যায়। একইসঙ্গে তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
মানববন্ধনকারীরা এটাকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড উল্লেখ করে বলেন, এটা কোনোভাবেই আত্মহত্যা হতে পারেনা। কারন নওরীনের শেষকীর্তে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির কোনো লোকজন উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া ঘটনার পর তার স্বামীকে থানায় এক ঘন্টার বেশি আটকে রাখা যায়নি। যা অবশ্যই তার প্রভাবশালীতার পরিচয় দেয়। এতে নওরীনের পরিবারও মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছে।
এসময় শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ভর্তির জন্য আসতে না দিয়ে একা কক্ষে আটকে রাখা হয়। ঘরে আটকে রাখা অবস্থায় সে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা না করে ছাদে কিভাবে গেল? মৃত্যুর সময় দেখা যায় তার মাথার চুলগুলো এলোমেলোভাবে কাটা। একইসাথে তার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দিতে দেরি করা হচ্ছে। তার ব্যবহৃত দুইটি ফোনের একটি ফোন গায়েব করা হয়েছে। থানায় মামলা নেওয়া হচ্ছে না। সবকিছু মিলিয়ে এটা একটা পরিকল্পিত হত্যার ইঙ্গিত দেয়। যতই এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলা হোক না কেন এটা অবশ্যই পরিকল্পিত হত্যা। এজন্য আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং এর শেষ দেখতে চাই।
বিভাগের সভাপতি সাহিদা আখতার অভিযোগ করে বলেন, নওরীনের মৃত্যুর পর তার পরিবার সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করলে এখন পর্যন্ত কোন মামলা নেওয়া হয়নি। যদি সে ৬ তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্নহত্যা করেও থাকে, তাহলে যে কক্ষটিতে তার বসবাস ছিল সে কক্ষটি কেন পুলিশ সিলগালা করল না? তারা কেন তার কক্ষ থেকে কোন আলামত সংগ্রহ করলো না? এটা আসলে রহস্যের ইঙ্গিত বহন করে।
শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, এই রকম একটি প্রতিবাদী মেয়ে কিভাবে চলে গেছে তা আমাদের কাছে এখনও অস্পষ্ট। আমি মনে করি নওরীনের পরিবার কর্তৃক মামলা পুলিশ প্রশাসের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পোঁছায়নি, নাহলে পুলিশ গড়িমসি করতো না। আমরা চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় সাভারের আশুলিয়ার পলাশবাড়ী নামাবাজারের পাশে বিজয়নগর রোডে আব্দুর রহিমের মালিকানাধীন বাড়ির ছয় তলা ছাদ থেকে পড়ে এ রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
একুশে সংবাদ/আ.হ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :