টানা কয়েকদিন ধরেই রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল, পথযাত্রা, সড়ক অবরোধ করে দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধে ঐক্যবদ্ধ ছাত্রসমাজ সারা দেশে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ কর্মসূচির নাম দেয়া হয়েছে ‘বাংলা ব্লকেড’। রোববার (০৭ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে বাংলা ব্লকেড`র ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
শনিবার (৬ জুলাই) শাহবাগে ৪র্থ দিনের মতো এক ঘণ্টা অবস্থান অবরোধের পর ছাত্রসমাজের পক্ষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান।
শাহবাগ থেকে ঘোষিত কর্মসূচিতে রোববার বিকেল ৩টায় শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচিতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ব্লক দিবেন ছাত্ররা৷ এছাড়া দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে অবস্থান নিবেন শিক্ষার্থীরা৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা যেমন নীলক্ষেত চাংখারপুল, শাহবাগ হাতিরপুল ইত্যাদি স্থানে অবস্থান নেবেন তারা।
নাহিদ হাসান বলেন, সরকার ভেবেছে আমরা এক-দুইদিন আন্দোলন করে ক্লান্ত হয়ে যাব। আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদেরকে যদি বাধ্য করা হয় আমরা প্রয়োজনে সারাদেশে হরতালের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। আজকের ছাত্র সমাজকে আদালতের মুখোমুখি করা হচ্ছে, এ দায় নির্বাহী বিভাগ এড়াতে পারে না। এ সময় হলে হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যেতে বাধাদানের কারণে ছাত্রলীগের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে নাহিদ বলেন, আমরা কিন্তু হলের তালা ভাঙতে জানি। শিক্ষার্থীদের যদি বাধা দেয়া হয়, এর জবাব আপনাদের দিতে হবে। যদি আমরা চাকরি না পাই তাহলে আপনাদেরও চাকরি থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু শাহবাগে বসে থাকবো না। আগামীকাল বিকেল ৩টা থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। আগামীকাল ঢাকা শহরের শাহবাগ, নীলক্ষেত, মতিঝিল, চানখারপুল, সাইন্সল্যাবসহ প্রতিটি পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন এবং বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরে শিক্ষার্থীরা সমস্ত মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা নির্বাহী বিভাগের কাছে জানতে চাই ২০১৮ সালের পরিপত্র কেন বাতিল করা হলো? ইতোমধ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাব না। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ও সাইন্স লাইব্রেরী খুলে দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা যদি না খুলেন তাহলে আমরা নিজ দায়িত্বে এটু খুলে নিতে বাধ্য হব।
এর আগে ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা ভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহালসহ চার দফার দাবিতে ৪র্থ দিনের মতো শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় আশপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে শাহবাগ অচল হয়ে পড়ায় স্লোগানে-ক্রিকেটে মেতে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার বেলা আড়াইটা থেকে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা নিজস্ব হলের ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে হলপাড়া-ভিসি চত্বর-টিএসসি- বুয়েট, ইডেন কলেজ হয়ে বেলা পৌনে ৫টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।
একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :