সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রায় ৩ কোটি টাকা দিয়ে গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি)। গত জুন মাসের ক্রয়াদেশ চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
তৎকালীন ট্রেজারার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. মোঃ মোবারক হোসেন ও উপ-উপাচার্য সৈয়দ শামসুল আলমের জন্য এ দু`টি গাড়ি ক্রয় করা হয়। তাদের ব্যবহার করার মতো গাড়ি থাকা স্বত্বেও ও নতুন গাড়ি ক্রয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যায়ে গাড়ি ক্রয় করা হয়। পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য ও উপাচার্য। তবে আন্দোলনস্থল থেকে আগেই বের হয়ে যাওয়ায় পদত্যাগ করতে হয় নি ট্রেজারারকে। পূর্ববর্তী গাড়িসহ দুইটি গাড়িই তিনি ব্যবহার করেন।
এদিকে,গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের কতিপয় স্থগিত, হ্রাসকরণ ও বিদেশভ্রমণ সীমিতকরণ করে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। যেখানে উল্লেখ করা হয়, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ সাধনের লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-আয়ঃশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর কর্পোরেশন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকার নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং কোন খাতে কত ব্যয় করতে পারবে সেটা উল্লেখ করে দেওয়া হয়।
কিন্তু এসব নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বশেমুরবিপ্রবিতে ২ কোটি ৯১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে সাদা রঙের মিতশুবিশি পাজেরো QX স্পোর্ট জীপ ক্রয় করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ববর্তী উপাচার্য দপ্তর,রেজিস্ট্রার দপ্তর ও অর্থ দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়,সে সময় ট্রেজারার ও উপ-উপাচার্যের চাপে গাড়ি ক্রয় করতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যদিও পরিবত্রের খ(৩) নং ধারায় স্পষ্ট করে সকল ধরনের গাড়ি ক্রয়ের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তির ফান্ডের টাকা থেকে এই গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। পরিপত্রের খ (৩) অমান্য করে চলতি বছরের ১০ জুন প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ২ ইউনিট মিতসুবিশি পাজেরো স্পোর্টস QX জীপ ক্রয় করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের অধীনস্থ রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন গাড়ি সংযোজনকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বশেমুরবিপ্রবি ট্রেজারার ড. মোঃ মোবারক হোসেনকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :