ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসবি পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজারের খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা বাসটি আটক করে এবং পরে আটক থাকা অবস্থায় কয়েকজন শিক্ষার্থী বাসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ভাঙচুরে বাঁধা দিলে ভাঙচুরকারীরা সমন্বয়কদের উপর চড়াও হয় এবং উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাত ১২টায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জিওগ্রাফী অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের ১৩ জন শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া শহরের কাউন্টার থেকে কথা বলে এসবি পরিবহনের বাসে ওঠে। পরে তাদের পেছনে কাউন্টারে কথা না বলে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আরও ১৫ জনের মতো শিক্ষার্থীও বাসে ওঠে। দশ মিনিট পর বাসের সুপারভাইজার কাউন্টার থেকে বাসে ফিরে কাউন্টারে কথা বলা ১৩ জনের বাইরে অন্য শিক্ষার্থীদের নেমে যেতে বললে সুপারভাইজার ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাদের অন্য বন্ধুদের খবর দিলে তারা প্রধান ফটকের সামনে থেকে বাসটি আটক করে। পরে ওই বাস ছাড়াও এসবি পরিবহনের আরও একটি বাস আটক করে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বাসে অসুস্থ ও বিদেশী যাত্রী থাকায় কিছুক্ষণ আটক রাখার পর তা ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাস আটক করার সময় মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোস্তাফিজুর রহমান পায়ে আঘাত পায়৷ পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়।
আহত শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুদের দাবি, বাস আটক করার সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার পা কেটেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাস আটক করার সময় মোস্তাফিজ বাসের গাড়ির দরজার গ্লাসে লাথি দেওয়ায় তার পা কেটে যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, তেমন কোনো সিরিয়াস ইনজুরি না। সার্প কাটিং হয়েছে। এমন আঘাত গ্লাস বা ধারালো কিছুতে হয়।
এদিকে মোস্তাফিজ আহত হওয়ায় তার বিভাগের কয়েকজন বন্ধু প্রধান ফটকে আটক থাকা বাসটিতে হঠাৎ করে অনবরত ইট ছুঁড়তে থাকে। এতে বাসের সামনের গ্লাসটি ভেঙে যায়। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা গাড়ি ভাঙচুরে বাধা দিলে ভাঙচুরকারীরা তাদের উপর চড়াও হন। তখন দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে রাত দেড়টায় বাসটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ইয়াশিরুল কবির সৌরভ বলেন, হঠাৎ করে একদল শিক্ষার্থী এসে এলোপাতাড়ি বাসে ইট ছুঁড়তে থাকে। এসময় আমরা তাদের বাঁধা দিলে তারা উল্টো আমাদের উপর চড়াও হয়। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা পরিবেশ শান্ত করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনা জানার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে আসি। কে বা কারা বাস ভাংচুর করেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :