বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের ৫৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২১তম ইন্টার্নশিপ সমাপনী ও সনদপত্র বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ভেটেরিনারি অনুষদ।
এ সময় ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অনুষদের ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. জি এম মুজিবুর রহমান, বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার পরিচালক ডা. মো. বয়জার রহমান, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি-এর এগ্রোভেট ডিভিশনের সিনিয়র ম্যানেজার রুবাইয়াত নূরুল হাসান। এছাড়া অনুষ্ঠান আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আজিমুন নাহারসহ অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ইন্টার্নশিপ সম্পন্নকারী ৫৮তম ব্যাচের ১৯১ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র বিতরণ করা হয়, যাদের মধ্যে ১৫ জন বিদেশি শিক্ষার্থী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের মাঠপর্যায়ে অভিজ্ঞতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ইন্টার্নশিপ তাদের বাস্তব সমস্যার সমাধান ও রোগ নির্ণয়ের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করবে। আধুনিক পশুচিকিৎসায় গবেষণা ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ বজায় রেখে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে দক্ষ ভেটেরিনারিয়ানদের ভূমিকা অপরিসীম। টেকসই প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।”
ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান বলেন, “ইন্টার্নশিপ শিক্ষার্থীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। শিক্ষার্থীদের নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই, যাতে তারা ভবিষ্যতে দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
ডিন আরও বলেন, “তোমরা সুনামের সঙ্গে দেশে-বিদেশে কাজ করবে। যেখানেই থাকো, সব সময় এক নম্বর হবে। যে পরিশ্রম করবে, সে-ই সফল হবে। একজন ভেটের কাছে সৎভাবে মাসে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করা কোনো ব্যাপার না।”
মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফায়াজ বিন জাফর বলেন, “বাংলাদেশ আমার কাছে দ্বিতীয় বাড়ির মতো। এখানে কাটানো পাঁচ বছর আমার জীবনের অমূল্য অভিজ্ঞতা। এখানের শিক্ষকরা অত্যন্ত সহায়ক, আর শিক্ষার পরিবেশও চমৎকার। ইন্টার্নির অভিজ্ঞতা আমাকে বাস্তব জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করেছে। এখানের প্রাণিসম্পদ খাতে কাজ করে অনেক কিছু শিখেছি, যা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।”
শিক্ষার্থী সাইদুজ্জামান বলেন, “আজ আমরা দীর্ঘ ৫ বছরের একটি সফর সমাপ্ত করলাম। ২১তম ইন্টার্নশিপের সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে নিজের অর্জিত সম্মাননা গ্রহণ করে সত্যিই আমি গর্বিত। আজ আমরা প্রতিটি ভেটেরিনারিয়ান দেশের মানুষের কাছে ঋণী। এই ঋণ ইনশাআল্লাহ আমরা আমাদের সেবা প্রদানের মাধ্যমে কিছুটা হলেও কমানোর চেষ্টা করে যাবো। সেই সঙ্গে ভেটেরিনারি অনুষদের সাফল্য কামনা করছি।”
আরেক শিক্ষার্থী সাক্ষ্যজিত সাহা পারিজাত বলেন, “ভেটেরিনারি শিক্ষা একটি টেকনিক্যাল শিক্ষা। পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্জনের জন্য ইন্টার্নশিপের বিকল্প নেই। আমাদের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পরিপূর্ণতার জন্য আমরা ইন্টার্নশিপ করে থাকি। আমরা ২১তম ইন্টার্নশিপ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা খুব সুন্দরভাবে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেছি। ইন্টার্নশিপে আমরা মিশ্র অনুভূতির সম্মুখীন হয়েছি। অনেক ফিল্ড লেভেলের জ্ঞান আমরা অর্জন করেছি। বর্তমান সময়ে ইন্টার্নশিপ ভাতা বৃদ্ধি করা এবং ইন্টার্নশিপ ৬ মাস থেকে বাড়িয়ে ১ বছর করা আমাদের সময়ের দাবি।”
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :