প্রায় দুই কোটি মানুষের নগরী রাজধানী ঢাকায় চলছে লক্কড় ঝক্কড় বাস। যৌবন হারানো এসব যানবাহনে সামান্য কলকব্জা বদলে আর রঙের প্রলেপ দিয়ে ফিটনেস দেখানো হচ্ছে। এতে করে হয়রানি বাড়ছে নাগরবাসীর। নামছে না নতুন বাস। এর জন্য লসে থাকার অজুহাত দেখাচ্ছে পরিবহন মালিকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে বাসের প্রতি আরও আস্থা হারাবেন যাত্রীরা।
রাজধানীর ডেমরার একটি ওয়ার্কশপে ভাঙা চোরা গাড়িতে দেওয়া হচ্ছিল রঙের প্রলেপ। ফিটনেসবিহীন গাড়িতে যৌবন ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। সড়কে রাজার মতোই ছুটবে আগামী ২-৩ বছর- এমন গ্যারান্টি দিচ্ছিলেন কারিগররা। তবে এসব গাড়ি কয়েক মাসেই ফিরে যায় পুরনো রূপে।
নগরীর সড়কে অনেক বাসের জানালার কাঁচ ভাঙা চোখে পড়ে। কোনোটি কোনোটির হেডলাইট ভাঙা। সিগনাল লাইটই নেই কোনোটার। আবার কোনো কোনো বাসের সিট নড়বড়ে। এসব নিয়ে যাত্রীরাও করেন নানা অভিযোগ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলার বালাই নেই। সেবার বদলে শুধু পরিবহন ভাড়া দিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা। লাইসেন্সধারী পরিবহন মালিক গাড়ি প্রতি দৈনিক নিচ্ছেন ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা। সঙ্গে আছে সড়কে চাঁদাবাজি আর অনিয়ম।
তবে এসব অভিযোগ মানতে নারাজ পরিবহন মালিক সমিতি। সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, আগে সারাদিনে ৫-৬টা রাউন্ড টিপ হতো। এখন সেখানে একটা-দুইটা রাউন্ড টিপ হয়। এই ভাড়া দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পোষায় না। এ কারণে ঢাকা শহরে নতুন গাড়ি আসে না বললেই চলে।
মালিকদের এসব অজুহাতকে খোঁড়া যুক্তি হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। বিআরটিএ বলছে, ফিটনেসবিহীন বাস নিয়ন্ত্রণে চলছে অভিযান।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান বলেন, সাধারণত একটা সাবের ফিটনেসের সময়কাল ১০ বছর। কিন্তু ঢাকা শহরে ১০ বছর পেরিয়ে যাওয়া অসংখ্য বাস চলছে। তারা চলছে কীভাবে। তারা যে বলছে লোকসানে আছে, এটা একেবারেই খোঁড়া যুক্তি।
বিআরটিএ’র পরিচালক মাহবুব এ রাব্বানী বলেন, যেসব গাড়ির কোনো কাগজপত্র নেই, কোনো ফিটনেস নেই; শুধু রঙ করে রাস্তায় নামাচ্ছে- এটা অবৈধ।
রাজধানীর ২৯০টির বেশি রুটে চলছে প্রায় ৬ হাজার বাস। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে যাত্রী সেবায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
একুশে সংবাদ/স.খ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :