যাত্রী ও নাগরিক সমাজের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহনে শৃংঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, ওয়েবিলের নামে যাত্রীদের মাথা গুনে গুনে স্বল্প দুরুত্বে গেলেও অতিরিক্ত পথের ভাড়া আদায় বন্ধের লক্ষ্যে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কর্তৃক ঢাকঢোল পিটিয়ে মহাসমারোহে চালু হওয়া ঢাকার সিটিবাসের ই-টিকিটিং সার্ভিস চালুর বছর না ঘুরতেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা মহানগরীতে যাতায়াতকারী বিভিন্ন রুটের যাত্রীসাধারণ আবারো অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আজ ০৪ জুন মঙ্গলবার দেশের গনমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এমন অভিযোগ করেন যাত্রী অধিকার সুরক্ষায় সোচ্চার এই সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর সড়ক পরিবহনের ইতিহাসে দীর্ঘদিন পরে বাস মালিকদের পক্ষ থেকে যাত্রী বান্ধব ই-টিকিটিং প্রকল্প চালু হওয়ার পর বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিকে গণমাধ্যমে বার্তা দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়েছিল। যাত্রী কল্যাণ সমিতি মনে করেছিলেন, সরকারি-বেসরকারি নানা মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে বাস মালিক সমিতি বোধদয় হয়েছে। তারা ধীরে ধীরে যাত্রী সেবায় মনোযোগী হবে। এতে করে সড়কে শৃংঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হবে। সরকারের ভাবমুর্তি উজ্জল হবে। সেসময়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলেছিলেন, পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভুত সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি এই খাতের আমুল সংস্কার করা না গেলে ই-টিকিটিং সিস্টেম এক সময় মুখ তুবড়ে পড়বে। তাই, সবার আগে পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকের হাতে দৈনিক জমার চুক্তিতে বাস ইজারা দেওয়া বন্ধ করা জরুরী। এছাড়াও বাস ভাড়া নির্ধারনের শর্তানুযায়ী চালক-সহকারীর বেতন ও ঈদ বোনাস প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এর পাশাপাশি পরিবহন পরিচালনার ক্ষেত্রে নানান অদৃশ্য খরচ বন্ধে সড়কে সিসি ক্যামেরা পদ্বতিতে ট্রাফিক প্রসিকিউশন সিস্টেম চালু করার দাবী জানিয়েছিলেন যাত্রী কল্যাণ সমিতি। দীর্ঘদিনের এহেন পুঞ্জিভুত সমস্যার সমাধান না করে যেকোন বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত সংস্কার কোন সময় এইখাতে টেকসই হবে না বলেও যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকার বা বাস মালিক সমিতির কেউ এসব বিষয়ে কর্ণপাত না করায় এই ধরনের একটি যাত্রী বান্ধব প্রকল্পের অপমৃত্যু ঘটতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এই যাত্রী অধিকার সংগঠনটির।
বিবৃতিতে আরো দাবী করা হয়, বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতায় পরিবহন খাতের বড় বড় মেগা প্রকল্প, বিশেষ করে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় মহাসড়কের চার লেইন, ছয় লেইনে উন্নীতকরন, বড় বড় সড়ক সেতু নিমার্ণ, যাবতীয় উন্নয়ন, অর্জন, দৃশ্যমান করার মাধ্যমে দেশের ভাবমুর্তি উজ্জল করার লক্ষ্যে, ঢাকার গণপরিবহনে আমুল সংস্কার করে শৃংঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবী জানান সংগঠনটি। একই সাথে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় যাবতীয় পুরনো বাস চলাচল বন্ধ করে সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আধুনিক উন্নত স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করার দাবী জানায় সংগঠনটি। এছাড়াও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে গণপরিবহনে নগদ অর্থ লেনদেন বন্ধ করে স্মার্ট কার্ডে ভাড়া আদায় নিশ্চিত করার দাবী জানানো হয়।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :