- সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ- এসি, মহাখালী ট্রাফিক জোন
- ট্রাফিকের কর্তা ব্যক্তিদের নজরদারি বেড়েছে
- স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পেরে খুশি সাধারণ মানুষ
- স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত -এমন তদারকি সব সময় থাকা উচিত
রাজধানীর মহাখালীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি গতি বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। নতুন সিদ্ধান্তের আলোকে মহাখালী থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃজেলা বাসগুলো এখন আর ঢাকার মধ্যে যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা করতে পারছেনা। নির্দিষ্ট স্থান থেকে যাত্রী ওঠা-নামা করতে দেখা গেছে প্রতিনিয়ত।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী মহাখালী থেকে বাস ছেড়ে প্রথমে কাকলী হয়ে কুর্মিটেলা, তারপর খিলক্ষেত এবং সবশেষ আব্দুল্লাহপুর থেকে যাত্রী নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যাবে। যেসব পরিবহন এই বলয়ের বাইরে গিয়ে আইন অমান্য করে, যারা রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
এবিষয়ে ডিসি আব্দুল মোমেন বলেন,
‘মহাখালী থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর বাসগুলো টার্মিনাল থেকেই লোক ওঠানোর জন্য থেমে থাকে। এভাবেই থেমে থেমে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত যাওয়ায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে দীর্ঘদিন আলোচনা হয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি যানজট কমানো এবং গতি বাড়াতে ধাপে ধাপে আরও কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে ‘ এ সময় নগরবাসীকে যত্রতত্র হাত উঠিয়ে বাসে না ওঠারও আহ্বান জানান তিনি।
বুধবার (৫ জুন) সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক পুলিশ ব্যস্ত সময় পার করছে। সড়কে আগে যেখানে দুই-তিন লাইন সারিবদ্ধভাবে বাস দাঁড়িয়ে থাকতো, এখন আর সেটি করতে পারছে না- আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদারকের কারণে। দূরপাল্লার গাড়িগুলো যাতে এক লাইনে আনা যায় সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় রাস্তায় তারা একটি নির্দিষ্ট লাইন করে দিয়েছেন, যে লাইনের মধ্যে দিয়ে টার্মিনালে ঢুকবে এবং নির্দিষ্ট লাইন দিয়ে টার্মিনাল থেকে বের হয়ে দূর দূরান্তে চলে যাবেন। এ কারণে রাস্তায় যানবাহন চলাচলের গতি বেড়েছে, ফলে কমেছে যানজট।
মহাখালী কলেরা হাসপাতাল (আইসিডিডিআরবি) সামনে কর্মরত এক সার্জেন জানান,
‘রাজধানীকে যানজট মুক্ত রাখতে আমরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। ট্রাফিক গুলশান ডিভিশনের দ্রুত পদক্ষেপ এর কারণে মহাখালী আন্তর্জিলা বাস টার্মিনালকে ঘিরে যে যানজট লেগে থাকতো- এখন সেটি আর দেখতে পাবেন না। আমাদের পুরো টিম দিনরাত নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। চেষ্টা করছি যাতে এই অঞ্চল তথা পুরা ঢাকা শহরটাকে যানজট মুক্ত করা যায়। ট্রাফিক গুলশান জোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আমরা সারাদিন রাস্তায় রয়েছি। শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য যা যা করা দরকার আমরা চেষ্টা করছি।’
মহাখালী স্থায়ী বাসিন্দা মনির হোসেন জানান,
‘গত একমাস আগেও এই রাস্তাতে অসহনীয় যানজট লক্ষ্য করেছি, কিন্তু বেশ কয়েকদিন হল যানজট কিছুটা কমেছে। এতে আমরা খুশি, যানজট কমার ফলে ফুটপাতে চলাচল সহজ হয়েছে। আগের ভোগান্তি এখন আর নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এরকম পদক্ষেপ এর কারণে তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। আমরা সাধারন মানুষ এমনটাই প্রত্যাশা করি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্তজেলা বাস টার্মিনালের একজন সিবিএ নেতা বেলন, ‘রাস্তায় শৃঙ্খলা এসেছে এতে আমরাও খুশি। তবে এখানে যে পরিমাণ গাড়ি আছে তা টার্মিনালে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে গাড়িগুলো একটি সিস্টেমের মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। এখন যে পরিস্থিতি আছে আগামীতে আরো ভালো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে শুধু আমাদেরকেই চাপে রাখলে হবে না, আমাদের ব্যাপারটাও সবার বোঝা উচিত।’
এবিষয়ে ট্রাফিক বিভাগের মহাখালী জোনের এসি আরিফুল ইসলাম রনি বলেন, ‘আমরা কিছুটা জনবল সংকটে রয়েছি। তা সত্যেও জনভোগান্তি কমাতে আমারা সব সময় রাস্তায় রয়েছি। আমারা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে জনভোন্তি রোধ করতে পারি। শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য প্রতিনিয়ত ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ দিনে এবং রাতে নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। যাতে করে রাস্তায় যেসব ট্রাফিক সদস্যরা কর্মরত রয়েছেন তাদের মনোবল চাঙ্গা করা যায় এবং কাজেআরও বেশি উদ্বুদ্ধ করা যায় সেজন্য ট্রাফিক গুলশান জোনের এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
আপনার মতামত লিখুন :