জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে সংবাদ সম্মেলনে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরকারকে কাজ করার আহবান জানিয়ে বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বরাদ্দের উপর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন।
আলবার্ট মোল্লা বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে দরিদ্র প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী দরিদ্র প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী ২৯ লাখ থেকে ৩ লাখ ৩৪ হাজার বাড়িয়ে ৩২ লাখ ৩৪ হাজার করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তির হার উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ৯৫০ থেকে ১০৫০ টাকা এবং ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম এন্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজএবিলিটি প্রকল্পে ৯৭.৫৮ কোটি থেকে ১৫০ কোটি টাকার বাজেট করায় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে ২০২৪-২৫ বাজেটের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার মূল বাজেটের মধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে মাত্র ০.৪৮ শতাংশ। যা অর্ধশতাংশও নয়। অন্যদিকে সামাজিক সুরক্ষায় প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীদের পরিমাণ কমেছে বলেও জানান।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ১১ সংগঠনের আয়োজনে ‘বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া/জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মহুয়া পাল সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, এমনও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছে যারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। ধরণ অনুযায়ী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তার আহবান জানান তিনি।
প্রকৃত পক্ষে এবছর বরাদ্দ কমেছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা অপরিবর্তিত (৮৫০ টাকা) রয়েছে যা বর্তমান দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনায় খুবই সামান্য।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় শারমিন আক্তার দোলন, কর্মসূচিসহ সমন্বয়কারী, ডব্লিউডিডিএফ সরকারের কাছে ১১টি দাবি পুনর্বিবেচনার জন্য তুলে ধরেন। তা হলো- প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা মোতাবেক নির্ধারণ করা, অতি গুরুতর মাত্রার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য কেয়ারগিভারের জন্য ভাতা কার্যক্রম চালু করা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রকল্প গ্রহণ করা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ এবং প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ, সরকারি চাকরিতে কোটা বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং বেসরকারি নিয়োগকর্তাদের উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন ধাপে কর রেয়াতের সুবিধা রাখা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলন ও যোগাযোগ সহজ করতে প্রতিবন্ধিতার ধরন ও চাহিদা মোতাবেক মানসম্পন্ন সহায়ক উপকরণ আমদানির উপর শুল্কমুক্ত সুবিধা এবং দরিদ্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিনামূল্যে সরবরাহ করার জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা।
নারীর ক্ষমতায়নে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমে যে কর্মসূচি রয়েছে তার প্রত্যেকটিকে উপকারভোগী নির্বাচনে প্রতিবন্ধী নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা প্রদান অন্যতম বলে জানান তিনি।
সভায় নাজরানা ইয়াসমিন হীরা, কর্মসূচি সমন্বয়কারী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন মন্ত্রণালয় ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দের বিষয়টি তুলে ধরেন।
ন্যাডপো’র সভাপতি বদিউল আলম বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা সুবিধা ৮৫০ টাকা, যা দিয়ে একজন মানুষের জীবনধারন করা কষ্টকর। সরকারের ভাতার জন্য পরিবারের কাছে মূল্যায়ন পাচ্ছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনসহ প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদ, ডিজএবলড চাইল্ড ফাউন্ডেশন, ন্যাডপো, জয়িতা প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থা, সোসাইটি অফ দ্যা ডেফ এন্ড সাইন ল্যাংগুয়েজ ইউজার, বার্ডো, প্রতীক মহিলা ও শিশু সংস্থা, বিপিইউএস, ডিসএবলড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, বি- স্ক্যান ও ডব্লিউডিডিএফ সংস্থাগুলো অংশগ্রহণ করে।
এছাড়াও বেসরকারি সংস্থা, সাংবাদিক, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সুশীল সমাজ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।মহুয়া পাল এর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে সভার পরিসমাপ্তি ঘটে।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :