AB Bank
ঢাকা রবিবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ওয়াসা-সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ে বাঁচাতে পারে ‘মহাখালী খাল’


Ekushey Sangbad
বেলায়েত হোসেন, ঢাকা
০৬:৫২ পিএম, ৭ জুলাই, ২০২৪
ওয়াসা-সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ে বাঁচাতে পারে ‘মহাখালী খাল’

রাজধানীর খালগুলো প্রবাহমান থাকলে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা অনেকটা কমে যেত। ইতিহাস থেকে পাওয়া যায়- রাজধানীতে কতপক্ষে ৪৭ খাল বহমান ছিল। কালের বিবর্তনে বর্তমানে দৃশ্যমান খাল রয়েছে ২৬টি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাল উদ্ধারে মহাপরিকল্পনা করে দিলেও উদ্ধারে গতি নেই বললেই চলে। জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় রয়েছে এই খাল উদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্বে। কিন্তু এখনও অবধি খাল উদ্ধারে বড় সাফল্য দেখাতে পারেনি তারা।  ঢাকার রাস্তায় জলজটে আলোচনা শুরু হয় খাল উদ্ধারের। রাস্তার জল শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই আলোচনাও হারিয়ে যায়।

খাল পরিনত হয়েছে নালায়

মহাখালী খাল: দীর্ঘদিন খালের ময়লা পরিষ্কার না করায় খালের ওপরে ময়লার স্তর জমে আছে। বর্তমানে খাল পরিনত হয়েছে নালায়। এতে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে এসব ময়লা-আবর্জনায় তৈরি হচ্ছে মশা, ছড়াচ্ছে মারাত্মক দুর্গন্ধ। এ কারণে খালপাড়ের বাসিন্দাদের নানা রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। খালটি রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার থাকলেও কোনো উদ্যোগ নেই ওয়াসার।

খালটি তেজগাঁও নাখালপাড়া থেকে শুরু হয়ে মহাখালী, নিকেতন, হাতিরঝিল, রামপুরা খাল হয়ে বালু নদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তবে, পূর্ব নাখালপাড়া পাগলারপুল হতে মেট্রো পলিটন হাসপাতালের পেছন পর্যন্ত খালটি খোলা। সেখান থেকে মহাখালী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত কালভার্ট ও বাস টার্মিনালের পাশঘেষে দক্ষিণপাড়া পর্যন্ত খোলা।

খাল পরিনত হয়েছে নালায়-1

দক্ষিণপাড়া থেকে কালভার্ট হয়ে নিকেতন ৪ নম্বর গেট থেকে নিকেতন ২ নম্বর গেটে স্লুইচ গেটের মাধ্যমে ময়লা পরিশোধন করে হাতিরঝিল কালভার্ট হয়ে রামপুরা খালের সঙ্গে যুক্ত করা রয়েছে। খালটির খোলা অংশে ময়লা-আবর্জনা ছাড়া কিছুই দেখা যায় না।

জানা যায়, মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট, কচুক্ষেত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, নাখালপাড়া, শাহীনবাগ, আরজতপাড়া, মহাখালী (ডিওএইচএস), রসুলবাগ, মহাখালী, নিকেতনসহ আরও অনেক এলাকার ব্যবহৃত ময়লা পানি মহাখালী খাল দিয়ে অতিবাহিত হয়ে থাকে। গত এক সপ্তাহর টানা বৃষ্টির কারণে পাগলারপোল, আরজতপাড়া, বউবাজার এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এটি হয়েছে মূলত মহাখালীর এই খালটি ময়লা আবর্জনায় ভরপুর থাকার কারণে। খালের পানিপ্রবাহ চলমান থাকলে এমনটি হতো না বলে ধারণা স্থানীয় বাসিন্দাদের।

মহাখালী খাল, পাগলারপোল অংশ

খালটি ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ভরাট থাকায়, নিচু এলাকার পানি আসতে পারে না। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। ফলে বৃষ্টির কয়েক ঘণ্টা পরও বিভিন্ন এলাকায় ময়লা পানি জমে থাকে। এতে ভোগান্তিতে পরতে হয় আশপাশের মানুষের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, খালের খোলা অংশে ময়লা-আবর্জনার কারণে বুঝার উপায় নেই একটি খাল। হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিন এটি।

পাগলারপুল হতে মেট্রোপলিটন হাসপাতালের পেছন পর্যন্ত খালের খোলা অংশে প্রায় অর্ধেক পর্যন্ত রয়েছে ভাসমান ময়লা-আবর্জনা। মহাখালী ডিএনসিসি কাঁচা বাজারের দক্ষিণ পাশ ও বাস টার্মিনালের উত্তর পাশ ঘেষে খালের খোলা অংশে পুরোটাই আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়ে আছে। খালের আশপাশের কল-কারখানার বর্জ্য, গাড়ির ওয়ার্কসপের উচ্ছৃষ্ট ময়লাসহ বিভিন্ন ধরনে ময়লা-আবর্জনায় জমে আছে। খালের আশপাশে কয়েকটি ময়লার স্তূপ জমে আছে, যা একটু বৃষ্টি এলেই খালে গিয়ে পড়ে।

খাল পরিনত হয়েছে নালায়-3

স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান জানান, 

‘খালের নাখালপাড়া অংশ গতবছর পরিষ্কার করা হলেও গতকয়েক বছরে ট্রার্মিনালের পাশ ঘেষা খালের খোলা অংশ পরিষ্কার করা হয়নি। এজন্য খাল এলাকা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।’

নাখালপাড়ার বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসনে বলেন, 

‘তেজকুনিপাড়া ও নাখালপাড়ার কয়েকটি নিচু এলাকা রয়েছে। খালের নাব্য ঠিক না থাকায় ময়লা পানি ঠিকমত প্রবাহিত হতে পারছে না। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই নিচু এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি জমে যায়। খালের পানি প্রবাহ কম থাকায় পচা পানিতে অতিমাত্রায় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয় এবং জমা পানিতে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। ওয়াসা সংশ্লিষ্টদের বেখেয়ালে খালের দূরাবস্থা।’

খাল পাড়ের বাসিন্দা রমিজা খাতুন বলেন, 

‘খালের থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ জন্য আমাদের অনেক ধরনের রোগ হচ্ছে। খালটি সব সময় পরিষ্কার করতে না পারলে আন্ডারপাস করে দেয়া হোক। তাহলে কেউ ময়লা ফেলতে পারবে না। দুর্গন্ধও বের হবে না।’

খাল পরিনত হয়েছে নালায়-4

খালে ময়লা-আবর্জনা নেই ও প্রতিনিয়ত খাল পরিষ্কার রাখা হয় বলে দাবি করেন ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী (ড্রেনেজ বিভাগ-১) এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, মহাখালী খাল সবসময় পরিষ্কার রাখা হয়। খালের আশপাশের বাসিন্দারা এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে। খালের আশপাশের ময়লা পরিষ্কারের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। তবে, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

এ সম্পর্কে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়ন বলেন, খালের দেখভাল ও উন্নয়নের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের। খালের ওপর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে আছে। খাল পরিষ্কারের জন্য ইতিমধ্যে আমরা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে সাথে নিয়ে উদ্ধোগ নিয়েছি। এছাড়া ওয়াসার সঙ্গে সমন্বয় করে খালের আশপাশের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে।

 

 একুশে সংবাদ/বিএইচ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Link copied!