চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন সরকারি সব দপ্তর ও অধিপ্তরের আউটসোর্সিং, দৈনিক মজুরিভিত্তিক এবং প্রকল্পে কর্মরত কর্মচারীরা। শনিবার (১৭ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। যা পরবর্তী সময়ে রূপ নিয়েছে অবরোধে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে শাহবাগ এলাকার যান চলাচল। এতে করে বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে চলাচলকারী মানুষজন।
এসময় তাদের, ‘কথায় কথায় চাকরি নাই, আমরা কি স্বাধীন ভাই’, ‘এক দফা এক দাবি, জাতীয়করণ করতে হবে’, ‘কথা নয় আশ্বাস নয়, এবার চাই বাস্তবায়ন’, ‘ঈদ যায় বৈশাখ যায়, বউ আমার বোনাস চায়’, ‘আমাদের দাবি পূরণ করো, চাকরি যাওয়া বন্ধ করো’সহ বিভিন্ন স্লোগান ও পোস্টার প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা বলেন, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বেসরকারি কর্মচারীদের বয়স শিথিল করে জাতীয়করণ করতে হবে। আউটসোর্সিংয়ের আওতায় নিয়োজিত সরকারি দপ্তর অধিদপ্তরে কর্মচারীদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। টেন্ডার জটিলতায় কর্মরত অনেকের চাকরি চলে যায়। আবার বছর শেষে জুন মাসে রিনিউ করার নামে কোম্পানি বিপুল টাকা দাবি করেন। না দিলে চাকরি চলে যায়। আবার প্রতি মাসে বেতন পাওয়া যায় না। অনেক সময় ৫-৬ মাস বা ১-২ বছরও বেতন বকেয়া।
স্বাস্থ অধিদপ্তরের বেসরকারি কর্মচারী সোহোল রানা বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়াই বিনা কারণে কথায়-কথায় দক্ষ কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়। সরকারি দপ্তর, অধিপ্তর ও পরিদপ্তরে অনেকেই বিনা অপরাধে এবং ঠিকাদারকে ঘুষ দিতে পারেননি বিধায় চাকরি হারিয়েছেন।
বর্তমান সরকারের কাছে চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানিয়ে বারডেম হাসপাতালের বেসরকারি কর্মচারী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমরা বহু বছর ধরে বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকার চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ বন্ধ করে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ শুরু করে। ফলে আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। অবিলম্বে চাকরি রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তিকরাসহ ঠিকাদারি প্রথা বিলুপ্ত করতে হ০বে।
আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান বলেন, যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সবাইকে পুনর্বহাল করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়বো না। আমাদের ঝুঁকি ভাতা, প্রণোদনা, ঈদ বোনাস, বৈশাখী ভাতা থেকে বঞ্চিত করা হয়। সরকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন বিল পরিশোধ করার কথা বললেও ঠিকাদাররা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা না দিয়ে হাতে হাতে দেয়। তারা আর ব্যাংকের চেক আউটসোর্সিং কর্মচারীদের থেকে আগেই নিয়ে রাখেন। জেলা উপজেলায় ঠিকাদারের হাত থেকে বেতন নিতে হচ্ছে। তারা সরকার নির্ধারিত বেতন না দিয়ে মনগড়া বেতন দেয়।
তিনি বলেন, মানবেতর জীবনযাপন করতে করতে এখন অনেক কর্মচারীরা নিরূপায় হয়ে অনেকেই আত্মহত্যার পথ খুঁজে নিচ্ছে। আমরা বৈষম্য চাই না। মর্যাদার সঙ্গে বাচার অধিকার চাই।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :