জাতীয় শ্রমিক ঐক্যের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে। স্বৈরাচার সরকার গত ১৫ বছরে শ্রমজীবী মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের স্টিম রোলার চালিয়েছে। এখন সময় এসেছে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের। এজন্য সর্বপ্রথম শ্রমিকদের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
আজ রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ‘জাতীয় শ্রমিক ঐক্য’ দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। শ্রমিক ঐক্যের সভাপতি এ এ এম ফয়েজ হোসেন-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কবির আহমাদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের নেতা হারুনুর রশিদ, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাহারানে সুলতান বাহার, ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, বাংলাদেশ স্থল বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতির মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ কামরুন নাহার, ব্যাংক ফেডারেশনের সভাপতি মনসুর রহমান, সমন্বিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পথিক, বাংলাদেশ সংযুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ফেরদৌসী বেগম, বাংলাদেশ দর্জি শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, বাংলাদেশ রিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. মহিব্বুল্লাহ, বাংলাদেশ অটো রিকশা হালকা যান ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক, বাংলাদেশ ট্রাস্ট গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এইচ এম বেল্লাল, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন সহিদ, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়ীজ লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান, বাংলাদেশ নির্মাণ শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ওসমান গণি, বাংলাদেশ কৃষিজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হাসান রাজু, বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, বাংলাদেশ প্রগতিশীল নির্মাণ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমেদ আকাশসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বহু ছাত্রের পাশাপাশি অসংখ্য শ্রমিক নিহত হয়েছে। এই গণহত্যার অবশ্যই বিচার করতে হবে। যারা হুকুম দিয়েছে এবং যারা ছাত্র-জনতার বুকে গুলি চালিয়েছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ছাত্র-জনতার রক্তের সৌধের ওপর আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে। এই রক্তকে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। আগামীর বাংলাদেশ পরিচালনার জন্য শ্রমিকদের প্রতিনিধি সংসদে রাখতে হবে।
মতবিনিময় সভায় নিম্নোক্ত ১১ দফা পেশ করা হয়
১. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শ্রমিক পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২. আহত শ্রমিকদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৩. স্বৈরাচার সরকারের আমলে মিথ্যা মামলায় আটককৃত সকল শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিকদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান এবং মামলা প্রত্যহার করতে হবে।
৪. ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি আন্দোলনে নিহত শ্রমিক পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৫. বন্ধকৃত সকল কল-কারখানা চালু করে শ্রমিকদের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে।
৬. শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৭. অবিলম্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে হবে।
৮. দ্রæত সময়ের মধ্যে শ্রম আইন ২০০৬ এর শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।
৯. অবিলম্বে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা ও পে-কমিশন গঠন করতে হবে।
১০. স্বৈরাচার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে জমা করতে হবে।
১১. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহারে হত্যা ও গুলিবর্ষণ মানবতাবিরোধী অপরাধ। হত্যাকারীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচার করতে হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :