বাংলা ক্রাফটের বর্তমান নির্বাচনী পদ্ধতি ও সভাপতি পদে বিস্তর অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে সংগঠনটির সদস্যদের গঠিত সম্মিলিত ফোরাম। তারা বাংলা ক্রাফটের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং নির্বাচন বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি হলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি বা বাংলা ক্রাফটের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন সম্মিলিত ফোরাম। সেখানে তারা বাংলা ক্রাফটের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত সংগঠনের সাফল্য এবং সংগ্রামের কাহিনি বর্ণনা করেন। তারা জানান, বাংলা ক্রাফট দারিদ্র্যপীড়িত জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন শুরু করে এবং শুরুর দিকে কোনো অফিস ছাড়াই সংগঠনটি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তবে আজ তারা ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সক্ষম এবং ৫০০ সদস্যের বৃহৎ পরিবারের অংশ হয়ে উঠেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত ফোরাম উল্লেখ করেন, বাংলা ক্রাফট ১৯৮৩-৮৪ সালে প্রথম পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন শুরু করেছিল এবং ২০২০-২২ মেয়াদে তাদের নেতৃত্বাধীন পর্ষদ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে। তারা জানান, এই মেয়াদে বাংলা ক্রাফটের নিজস্ব অফিস কেনা হয়, ৯৩ লাখ টাকার এফডিআর এবং ৬০ লাখ টাকা ব্যাংক সঞ্চয় গড়া হয়। পাশাপাশি বিডা, বিপিসি, ইপিবি, এসএমই ফাউন্ডেশন, এফবিসিসিআই, এবং ই-ক্যাবের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। উদ্যোক্তাদের পণ্য বিপণনে অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেমন দারাজ, ঐক্য ও আমাজন ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করা হয় এবং প্রথমবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং মাসিক বুলেটিন চালু করা হয়।
তবে, তারা অভিযোগ করেন, ২০২২-২৪ মেয়াদে সমমনা পরিষদের পরিচালনায় বাংলা ক্রাফট অর্থের অপব্যবহার, বৈষম্য এবং অরাজকতার শিকার হয়েছে। তারা দাবি করেন, বর্তমান কমিটি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এফডিআর ভেঙে ফেলেছে এবং ৪০ লাখ টাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি ক্রয় করেছে, যা সংগঠনের কাজে ব্যবহার হয়নি। এছাড়া, ট্রেনিং ও মেলার নামে প্রায় ২০ লাখ টাকা অপব্যবহার এবং সদস্যদের সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
সম্মিলিত ফোরামের সদস্যরা অভিযোগ করেন, বাংলা ক্রাফটের বর্তমান সভাপতি এস ইউ হায়দার পূর্বের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর এবং চট্টগ্রাম-৩ আসনে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণার জন্য সংগঠনের অর্থ ব্যবহার করেছেন। তারা আরও বলেন, তার একতরফা সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করার চেষ্টা চলছে, যার ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
এছাড়া, সম্মিলিত ফোরাম ঘোষণা করেছে যে, তারা এই নির্বাচনী পদ্ধতি বর্জন করবে এবং সংগঠনটির কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :