ঐতিহাসিক যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ থেকে বারাসাত পর্যন্ত ৩০৫টি প্রাচীন গাছ কেটে ফেলার অনুমতি দিয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৮ সালে দেওয়া স্থগিতাদেশ গত বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) প্রত্যাহার করে আদেশ জারি করে উক্ত আদালত। ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসের বরাতে জানা গেছে, গাছ কাটার আগে ভারতের জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষকে দেড় হাজার গাছ লাগিয়ে দিতে হবে। এই আদেশের ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথে বাংলাদেশের সরাসরি সংযোগ স্থাপনকারী সড়কের ভারতীয় অংশে রাস্তা সম্প্রসারণ প্রকল্পের ওপর থেকে সকল বাধা অপসারিত হলো।
এদিকে আদালতের একটি স্থগিতাদেশ এর কারণে বাংলাদেশের যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দুপাশে অবস্হিত ৪ শতাধিক প্রাচীন গাছ অপসারণ না করতে পারায় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালনকারী এই সড়কটি ৬ লেনে উন্নীত করা সম্ভব হয়নি। গাছ কাটার উপর স্থগিতাদেশ দাবী করা পরিবেশবাদীরা ২০১৮ সালে কোর্টে রীট করার সময় ভারতীয় অংশে গাছ রাখার উপর আদালতের রায়কে তাদের পক্ষে উপস্থাপন করেছিলো। তখন কোর্ট বাংলাদেশ অংশে গাছ না মারার জন্য ৬মাসের স্টে-অর্ডার দিয়ে ছিলো। পরবর্তীতে ৫ বছর পার হয়ে গেলেও সেই রায় এখনও বহাল আছে। তবে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এই যুগান্তকারী রায়ের ফলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টও তাদের স্থগিতাদেশ তুলে নেবে বলে মনে করেন ভারত বাংলাদেশ যৌথ বানিজ্য কমিটির পরিচালক মোঃ মতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, এই মৃত গাছগুলো এখন মানুষের জানমালের জন্য হুমকিস্বরূপ। বেনাপোল দেশের সবথেকে বড় স্থল বন্দর আর এই বন্দরকে সচল রাখতে যতদ্রুত সম্ভব এই গাছগুলো অপসারণ করে মহাসড়কটি ৬লেনে উন্নীত করতে হবে।
দীর্ঘ ৬ বছর ধরে যশোর বেনাপোল মহাসড়কের মৃত ঝুকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করা ঝিকরগাছার ঐতিহ্যবাহী সেবা সংগঠনের উপদেষ্টা এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোর এর সমন্বয়ক মাসুদুজ্জামান মিঠু বলেন, গাছের কারণে এই সড়কে দূর্ঘটনার হার অনেক বেশি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় বেনাপোল বন্দরের গুরুত্বও বেড়েছে। তাই যতদ্রুত সম্ভব গাছগুলো কেটে যশোর বেনাপোল মহাসড়ককে আন্তর্জাতিক মানের করতে হবে।
ঝিকরগাছার অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাস্টার আশরাফুজ্জামান বাবু বলেন, আমরা গত ৬ বছর ধরে এই গাছগুলো অপসারণের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে চলেছি। ইতিমধ্যেই অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে, বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এখনই এই গাছগুলো অপসারণ করে এই রাস্তাটা ৬ লেনে উন্নীত করা হোক।
বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি আব্দুল লতিফ বলেন, কোর্টের যে স্থগিতাদেশ আছে সল্প সময়ের মধ্যে সেটা দুর হবে বলে আমি আশাবাদী। খুব শীঘ্রই ভাঙা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত মহাসড়ক ৬লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হবে।
একুশে সংবাদ.কম/আ.হো/বি.এস
আপনার মতামত লিখুন :