চলছে তীব্র তাপদাহ। শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলিসয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ। এদিকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন। সেই সঙ্গে আরো এক সপ্তাহ এমন তাপদাহ থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
এ নিয়ে টানা ১৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় রেকর্ড করা হলো চুয়াডাঙ্গায়। প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র তাপদাহে জেলার খেটে খাওয়া মানুষ ও রোজাদাররা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এই অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
এছাড়া আগামী ২১ এপ্রিলের পর থেকে তাপদাহ কমতে পারে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর হক।
তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। জেলা সদরের হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও বেড়েছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী রোগীর সংখ্যা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার পর্যন্ত টানা ১৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গাতে। গত ২ এপ্রিল রোববার থেকে টানা ১৩ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে চুয়াডাঙ্গায়। এর মধ্যে ২ এপ্রিল ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩ এপ্রিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৪ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৬ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৭ এপ্রিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৮ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৯ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি সেলিসয়াস, ১০ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১১ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১২ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বশেষ শুক্রবার ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, ‘চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে প্রথমে মৃদু তারপর মাঝারি তাপদাহ বয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে তা তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এ ধারা আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। গরম মৌসুমে একটানা এতদিন ধরে এক জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়া বিরল।’
তিনি আরো জানান, ‘গত বছর জানুয়ারি মাস থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টি না থাকার কারণে বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ কমে গেছে। আবার আদ্রতা কম থাকার কারণে মেঘ তৈরি কম হচ্ছে। ফলে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় ছাড়া সাধারণ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আপাতত নেই।’
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :