জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কাশিপুরহাল গ্রামে তিন ছেলের মধ্যে জমির ভাগবাটোয়া নিয়ে বাবাকে মারপিট করার অভিযোগ ওঠেছে প্রবাসী ছেলে একরামুল হকের বিরুদ্ধে। প্রবাসী ছেলের মারপিটে আহত হয়ে বৃদ্ধ বাবা এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে কালাই প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আহত বৃদ্ধের স্ত্রী ও তিন ছেলের মা জাহানারা বিবি প্রবাসী ছেলে একরামুল হকের বিরুদ্ধে বাবাকে মারপিট করার এমন অভিযোগ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আহত বৃদ্ধ ওসমান গণির ছোট ভাই সাহেব আলী, তার দুই ছেলে রুহুল আমিন ও মুমিনুর রহমান, মেয়ে গুলনাহার ও ছেলের স্ত্রী ফাহিমা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মা জাহানার উপস্থিতিতে তার পক্ষে বড় ছেলে রুহুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত একরামুল হক দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে ছিলেন। গত ২০০০ সালে বৃদ্ধ বাবা ওসমান গণি তার ৯৮ শতক জমি তিন ছেলের নামে সমান ভাগে দলিল মূলে লিখে দেন। এই খবর প্রবাসী ছেলে একরামুলের নিকট যায়। এদিকে দেশে থাকা দুই ছেলে তাদের অংশে আলাদা করে বসত বাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করতে থাকেন। এর মধ্যে ছেলে একরামুল হক চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেন। বাবা ওসমান গণি কেন তার সম্পত্তি তিন ছেলেকে সমান ভাগে দলিল করে দিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন প্রবাসী একরামুলের। এ নিয়ে বাবা ও মা’র সাথে ঝগড়া বিবাদ লেগেই রয়েছে। কয়েকদিন পূর্বে গ্রামে শালিশও হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, গত ৭ জুন দুপুরে বৃদ্ধ ওসমান গণি কালাই সাব রেজিস্টার অফিসে আসেন। খবর পেয়ে প্রবাসী ছেলে একরামুল তার শশুর পরিবারের ৪/৫ জনকে সাথে নিয়ে কালাই সাব রেজিস্টার অফিস চত্বরে বাবা ওসমান গণিকে সবার সামনে মারপিট করে চলে যায়। এ সময় অন্যান্য লোকজন এসে বৃদ্ধ ওসমান গণিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ দিকে সন্তানের ভয়ে মা জাহানারা রাতের বেলায় অন্যর বাড়ীতে গিয়ে লুকিয়ে থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালে বৃদ্ধা জাহানারা তার ছেলে-মেয়েকে সাথে নিয়ে লুকিয়ে হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে বের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে রাস্তায় একরামুলসহ তার লোকজনের বাঁধারমুখে পরেন। পরে তারা কালাই থানায় গিয়ে একরামুলসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
প্রবাসী একরামুলের এমন নির্যাতনে বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুই ভাই ও মা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। একরামুল অনবরত তাদের প্রাণনাশের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন লোভী ছেলের বিচারের দাবি তুলে নিরাপত্তা লাভের জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন বৃদ্ধা জাহানারা ও তার পরিবার।
অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধার প্রবাসী ছেলে একরামুল হক বলেন, এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। আমাদের মাঝে কি ঘটেছে তা নিয়ে কোনো আলাপ নেই। আপনাদের যা বলেছে তা লিখতে পারেন। এ বিষয়ে আমার বলার কিছুই নেই।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/ম.র.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :