কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চর নতুনবন্দর স্থলবন্দর তুরা সড়ক থেকে খাটিয়ামারী সীমান্ত এলাকার কাদেরের বাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক। এ সড়কের নির্মাণ কাজ ৬ বছরেও শেষ হয়নি। ফলে বাংলা বাজার ও মোল্লার চর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্য ও ৬গ্রামের ৫ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ ফেলে রেখে চলে গেলেও দায়িত্বশীলরা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগিদের। এ নিয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় সমালোচনার ঝড় উঠে।
উপজেলা এলজিইডি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে উপজেলার চর নতুনবন্দর স্থলবন্দর তুরা সড়ক থেকে সীমান্তবর্তী এলাকা খাটিয়ামারী কাদেরের বাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কের কাজ পান কুড়িগ্রামের মেসার্স ছাকিব ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। পরে জিঞ্জিরাম নদীর পাশে ১০০ গজ দৈর্ঘ্যরে গাইড ওয়াল নির্মাণ করেন প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে সড়কের নির্মাণ কাজ না করেই চলে যান তিনি।
২০১৯ সালে ওই সড়ক নির্মাণের জন্য কাজটির দায়িত্ব দেওয়া হয় কুড়িগ্রামের মোক্তার হোসেন নামের আরেক ঠিকাদারকে। তিনিও সড়কে সামান্য মাটির কাজ করে বিল তোলায় মরিয়া হয়ে উঠেন। ওই সময় বিষয়টি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায়কে জানান ভুক্তভোগি এলাকাবাসী। এতে বিল তোলা বন্ধ করে দেন তিনি। বিল না পেয়ে ওই ঠিকাদারও নির্মাণ কাজ ফেলে রাখেন।
এরপর ২০২০ সালে প্রথম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভায়া ঠিকাদার হিসেবে কাজটি নেন সাইদুর রহমান নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। এ সড়কের তিন জায়গায় গাইড ওয়াল দেওয়ার কথা থাকলেও তা ড্রামশেড ও বাঁশের খুঁটি দিয়েছেন তিনি। এতে সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগিরা। এছাড়াও ৩ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে ইটের খোয়া ফেলা হলেও খাঁটিয়ামারীর কাদেরের বাড়ি থেকে ঈদগা মাঠ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক পাঁকা করণের কাজ করা হয়। বাকি নির্মাণ কাজ ৪ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ না করায় সীমান্তের বাংলা বাজার ও মোল্লার চর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যসহ চান্দারচর, নওদাপাড়া, ব্যাপারীপাড়া, বোল্লাপাড়া ও খাটিয়ামারীসহ ৬গ্রামের ৫হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নওদাপাড়া এলাকার মাওলানা নুরুল ইসলাম বলেন, সড়কটির কাজ শেষ না করায় যানবাহন ও পথচারীদের যাতায়াতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে আয়ের চেয়ে অধিক ব্যয় হচ্ছে।
খাঁটিয়ামারী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য ঠিকাদারের একের পর এক ভায়া ঠিকাদারকে দায়িত্ব দিয়েও নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে না। দ্রুত এ সড়কের নির্মাণ শেষ করার দাবি জানান তিনি।
চান্দারচর এলাকার গোলাম রব্বানী বলেন, সড়ক নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। কিন্তু দায়িত্বশীলদের উদাসীনতার কারণে সংস্কার কাজটি শেষ হচ্ছে না। বিষয়টি জানতে চাইলে ঠিকাদার সাইদুর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কাজটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
রৌমারী উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, ঠিকাদারকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায় দ্রুত কাজটি শেষ করবেন।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম সারোয়ার রাব্বাী বলেন, বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/স.স.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :