ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে আপন দুই ভাইয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে বড় ভাই মো. মকবুল হোসেনের দায়ের কোপে ছোট ভাই মো. বিল্লাল হোসেনের ডান হাতের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সেই সাথে বিল্লালের পেটে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করার ফলে পেট কেটে ভুঁড়ি বের হওয়ার উপক্রম হয়।
এ ঘটনায় আহত ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকেও দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। খবর পেয়ে বড় ভাই মো. মকবুল হোসেন (৫০) কে আটক করে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ।
রোববার দুপুরে উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- ওই গ্রামের টান মলামারি এলাকার মৃত শাহেদ আলীর ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন (৪৫) ও তার স্ত্রী বিলকিস আক্তার (৪০)।
এ ঘটনায় রোববার রাতেই বিল্লাল হোসেনের ছেলে সুজন মিয়া (২১) বাদী হয়ে চাচা মো. মকবুল হোসেনকে প্রধান আসামি ও চাচি মোসা. সালমা খাতুন (৪৫)-সহ তিনজনকে আসামি করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। প্রত্যক্ষদর্শী আহত বিল্লাল হোসেনের মেয়ে তামান্না বলেন, আমাদের বসতঘরের সামনে আব্বা বেগুন গাছের চারা রোপণ করেছিলেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকাল থেকেই আমার চাচা মকবুল হোসেন আমার বাবার সাথে তর্কবিতর্ক ও গালমন্দ করে আসছিলেন। ওই দিন দুপুরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আমার চাচা, চাচি ও চাচাতো বোন ধারালো দা ও লাঠি নিয়ে আমাদের ঘরে প্রবেশ করে। চাচা দা দিয়ে আব্বার মাথা বরাবর কোপ দিতে চাইলে আব্বা ডান হাত দিয়ে কোপ ফিরাতে গিয়ে হাতের মধ্যমা, অনামিকা ও কড়ে আঙুলসহ হাতের অর্ধেক কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এতেই ক্লান্ত হননি তারা। আব্বার পেটে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পেটের ভুঁড়ি বের করে দেয়। এ সময় আব্বাকে বাঁচাতে আমার আম্মা এগিয়ে গেলে আম্মাকেও পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে জখম করে।
বিল্লালের বড়ভাই গিয়াসউদ্দিন (৬৫) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মকবুলের অত্যাচারে আমরা কেউ বাড়িতে থাকতে পারি না। আমার ছোট ভাইটারে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। জানা যায়, আহত বিল্লাল ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠায় স্থানীয়রা। তবে বিল্লাল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
অপরদিকে তার স্ত্রী বিলকিস বেগম ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। ঘটনার সময় মকবুল হোসেনকে আটক করে পুলিশে। ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মকবুলকে আটক করা হয়। ঘটনার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। আজ সোমবার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/তা.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :