AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ


Ekushey Sangbad
আব্দুল বাতেন, রাজশাহী
০৪:৫৭ পিএম, ১০ জুলাই, ২০২৩
স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এক গৃহবধূকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গোদাগাড়ী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হলেও সুরতহাল রির্পোটের সাথে মামলায় মিল না থাকা ও এই হত্যার সাথে অন্যরা জড়িত থাকলেও তাদের নাম না দিয়ে পুলিশ শুধু মাত্র হত্যার শিকার হওয়া গৃহবধূর স্বামীকে আসামী করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে।

 

হত্যার শিকার হওয়া ওই গৃহবধূর নাম রিমা খাতুন (২৫)। সে উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের উত্তর কানাপাড়া গ্রামের সান মোহাম্মদের মেয়ে।

 

রিমার তিন শিশু কন্যা রয়েছে। মায়ের মৃত্যুতে অনিশ্চিত জীবন পাড়ি দিতে হবে তাদের। রিমার বাবা-মায়ের আর্থিক আবস্থা করুণ হওয়ায়াতে তাদের ভরন- পোষন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে তারা। ২০১১ সালের দিকে উপজেলার গ্রোগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে তাজরুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। ছেলে নেশাগ্রস্থ হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই সংসার খরচসহ নানান ধরনের সমস্যা চলে আসছিলো। মাঝে মধ্যেই রিমাকে নেশাগ্রস্থ হয়ে শারিরিক ভাবে নির্যাতন করতো। এছাড়াও বাড়ীর সদস্যরাও বিভিন্ন কারণে রিমাকে নির্যাতন করতো।

 

এর আগেও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ আত্নীয় স্বজন একাধিকবার আপোষ মিমাংসা করে দেয়। তারপরও নির্যাতন করে আসছিলো। গত ৬ জুলাই রাতে রিমার স্বামী রাত ১০ টার দিকে গার্লিগালাজসহ মারধর করে। এতে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় জখম ও মারধরের চিহৃ থাকে।

 

নির্যাতনের বিষয়টি রিমা খাতুন তার মাকে মোবাইল ফোনে জানায়, আমাকে এরা খুব নির্যাতন করছে রাতেই পুলিশ নিয়ে আসো। মায়ের বাড়ী নদীর ওপারে হওয়ায় সকালে আসবো ভালোভাবে থাকো বলে জানায়। পরে আবার তাকে মারধর করে পরিবারের সদস্যরা ঘরের মধ্যে রশিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে। লোক দেখানো ভাবে রামেক হাসপাতলে নিয়ে গিয়ে মোবাইলে খবর দেয়। আমরা সকালে হাসপাতালে আসলে মৃত্যু অবস্থায় দেখতে পাই।

 

নিহত রিমার মা আনজেরা বলেন, আমার মেয়েকে জামাইসহ পরিবারে সদস্যরা শারিরীক ভাবে নির্যাতন করে আসছিলো। সেই রাতেও প্রচুর নির্যাতন করে হত্যা করে। আমার মেয়ের তিনটি শিশু কন্যা আছে বড় মেয়ে ৯ বছরের মিম, দ্বিতীয় মেয় ৭ বছরের জিম ও ছোট মেয়ে দেড় বছরের জেসমিন। গত ৬ জুলাই রাতে বড় মেয়ে তার মাকে মারধর করে তখন দেখেছিলো। পরে ঘুমিয়ে গেলে তাকে হত্যা করা হয়। ময়ে মিম সাংবাদিকদের কাছে মায়ে নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

 

রিমার ভাই রনি বলেন, রিমার স্বামী তাজরুল, বাবা নজরুল মাতা মনোয়ারা, ভাই মিনারুল, রজব আলী, মিনারুলের স্ত্রী রুবিনা খাতুন ও তার খালাতো ভাই রুবেল বিভিন্না ভাবে নির্যাতন করতো। তাকে পরিকল্পিত ভাবেই হত্যা করা হয়েছে।

 

রিমার বাবা সান মোহাম্মদ বলেন, আমার মেয়েকে পরিকল্পিত তাজরুলসহ বাড়ীর সকলে হত্যা করেছে। তার মৃত্যু হলে নিজেরা বাঁচতে লোক দেখানোর জন্য রামেক হাসপাতলে ভর্তি করে । আমাদের খবর দিলে মৃত্যু অবস্থায় দেখতে পাই।

 

তিনি আরো অভিযোগ করেন, পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে, মাথার ডানপাশে ফোলা, গলার ডানপাশে কালশিরার দাগ, দুই হাত বাহু হতে কনুই পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে কালচে দাগ ও ফোলা, হাঁটুর উপর ও নিচে দাগ, যৌনাঙ্গে রক্ত থাকার কথা উল্লেখ আছে। তবে মামলায় এসব উল্লেখ না করে মামলা নথিভূক্ত করা হয়েছে। আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা আমাকে সই করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আরো আসামীর নাম দিতে চাইলে পুলিশ তা দেয়নি বলে অভিযোগ করেন।

 

এই বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক ভাবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে আত্মহত্যা করেছে। স্বামী তাকে নির্যাতন করতো এটাও আমরা জানতে পেরেছি। আপাতত আত্মহত্যা প্রচারনায় রিমার স্বামীকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। মামলা তদন্ত করে যদি আরো কারো জড়িত থানার প্রমাণ পাওয়া যায় তাকেও আসামী করে চার্জশীট প্রদান করা হবে। বাদী আরো আসামীর নাম দিতে চাইছিলো তা নেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের বিষয়ে বলেন, এটা সঠিক না।

 

একুশে সংবাদ/আ.ব.প্র/জাহা

Link copied!