AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

উল্লাপাড়ায় হাঁস নিয়ে বিপাকে খামারীরা


উল্লাপাড়ায় হাঁস নিয়ে বিপাকে খামারীরা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় হাঁস খামারীরা বেশ বিপাকে পড়েছেন। বেশীর ভাগ মাঠে, খাল বিলে বন্যার পানি না থাকায় প্রাকৃতিক খাদ্য মিলছে না। শ্রাবণের চলমান খরায় মাঠ খাল বিলের শুকনো মাটিতে হাঁসের মূল খাদ্য শামুকের অভাব দেখা দিয়েছে। অজানা রোগে অনেক খামারীর হাঁস মারা যাচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রাণীসম্পদ অফিসের বক্তব্য ডাক প্লেগ কিংবা ডাগ কলেরা রোগে হাঁস মারা যাচ্ছে। অনেক খামারী কম দামে হাঁস বেচে খামার গুটিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

 

উল্লাপাড়া উপজেলায় বর্ষাকালের শুরুতেই বিভিন্ন গ্রামের বহুজন হাঁস লালন পালন করে থাকেন। এরা মৌসুমী হাঁস খামারী। একজন খামারী তিনশো থেকে এক হাজার হাঁস নিয়ে খামার গড়েন। বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বন্যার পানিতে এলাকার মাঠ খাল বিল পানিতে তলিয়ে গেলে এরা হাঁস নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। বন্যার পানি যতদিন থাকে খামারীরা হাঁস নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চড়ে বেড়ান। বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়াকালে এরা হাঁস বিক্রি করে দেন। এরাই মৌসুমী হাঁস খামারী।

 

এবারের বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ব্যাক্তি হাঁস খামার করেন। এরা বিভিন্ন এলাকায় মাঠে খাল বিলে বন্যার পানিতে হাঁস নিয়ে চড়ে বেরিয়ে শেষ বিকেলে আস্তানায় থাকা এবং পরেরদিন সকালে বেড়িয়ে পড়েন।

 

এবারে এখনো স্বাভাবিক বন্যা হয়নি। উপজেলার নীচু অঞ্চলের উধুনিয়া, বড় পাঙ্গাসী, মোহনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ খাল বিল ছাড়া উপজেলার বেশীর ভাগ এলাকায় বন্যার পানি নেই। বন্যার পানি উঠেছিল এমন মাঠগুলো একেবারে শুকিয়ে গেছে। একাধিক খামারী বলেন বর্ষাকালে হাঁসের প্রাকৃতিক মূল খাদ্য হলো ছোটো আকারের ঘুনি শামুক। এদিকে শ্রাবণের প্রথম দিক থেকেই চলমান খরায় শুকিয়ে যাওয়া মাঠ খাল বিলের ঘুনি শামুক মারা গেছে। আবার কোনো শুকনো জমিতে মাটির কিছুটা নীচে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। মাঠ খাল বিলে এখন হাঁস চড়াতে গেলে মূল খাদ্যের ঘুনি শামুকের অভাব থাকছে বলে জানা গেছে। এদিকে বেশীর ভাগ মাঠ, খাল, বিলে বন্যার পানি না থাকায় হাঁস নিয়ে খামারীরা বেশ বিপাকে পড়েছেন।

 

এদিকে অনেক খামারে অজানা রোগে হাঁস মারা গেছে। এখনো মারা যাচ্ছে বলে জানা গেছে। একাধিক খামারীর ধারণায় চলমান খরায় গরমে হাঁস মারা যাচ্ছে। খামারী জয়নব খাতুন বলেন, তিনি এখন সাড়ে তিনশো হাঁস নিয়ে দিনভর মাঠে পানি না থাকায় এলাকায় ছোটো খালে চরিয়ে থাকেন। এরইমধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক হাঁস মারা গেছে। তিনি লোকসানে আছেন। 

 

গয়হাট্রা এলাকার খামারী রেজাউল করিম বলেন, তার খামারে সাতশো হাঁসের মধ্যে এরইমধ্যে সত্তরটি হাঁস মারা গেছে। উপজেলার জগজীবনপুর গ্রামের খামারী রঞ্জু মিয়া এক হাজার হাঁস নিয়ে এবারের মৌসুমে খামার শুরু করেন। এরইমধ্যে গত মাসখানেক সময়ে প্রায় পাচশো হাঁস মারা গেছে। এবারে মাঠ বিলে পানি না থাকায় খামারের হাঁস বেচে দেবেন বলে জানান।

 

চরবেড়া গ্রামের খামারী জাহাঙ্গীর আলম তার হাঁস এলাকার মাঠে রেখেছেন। নিজ সেচ মেশিনে জমিতে পানি সেচ দিয়ে সেখানে হাঁস চরান বলে জানান। জমিতে পানি সেচ দেওয়ার পর মাটির নীচে থাকা ঘুনি শামুক বেরিয়ে এলে হাঁস তা খেয়ে থাকে। বড় ধরণের হাঁস খামারী ও হাঁস ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন বলেন, এলাকা বহু হাঁস খামারী পানি , খাদ্য সমস্য ও মারা যাওয়ায় কম দামেই হাঁস বেচে দিচ্ছেন। কেউ কেউ খামার গুটিয়ে নেওয়ার ভাবনা করছেন।

 

উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. শামীম আখতার বলেন, ইদানিং এলাকায় হাঁসের ডাক প্লেগ ও ডাক কলেরা রোগ দেখা দিয়েছে। এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এর রোগ প্রতিরোধী  টিকা আছে। খামারীরা তাদের পালিত হাঁস আনলে টিকা দেওয়া হবে। এবারে বন্যার পানি না হওয়ায় মুক্ত জলাশয়, মাঠ, খাল বিলে হাঁস পালনে ও প্রাকৃতিক খাদ্য সমস্যা কিছুটা হচ্ছে। তবে হাঁস শুকনো জায়গায় রেখে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য খাইয়ে লালন পালন করা যেতে পারে।

 

একুশে সংবাদ/স.স.প্র/জাহা

Link copied!