২০০৮ সালের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেই লক্ষ্য পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে বেশিরভাগ এলাকায় তারবাহী বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। যেসব এলাকায় বিদ্যুতের লাইন নেওয়া সম্ভব হয়নি, সেসব স্থানে সৌরবিদ্যুতে আলোকিত করা হয়েছে।
ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ শীর্ষক কর্মসূচি শুরু হয় ২০১৬ সালে। শেখ হাসিনার ঘোষণার মধ্য দিয়ে দুর্গম চরাঞ্চল থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলেও পৌঁছে গেছে বিদ্যুতের আলো। অথচ ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া সময় বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট।
এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুতের আলোকিত হবে কুতুবদিয়া, হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপ। শতভাগ বিদ্যুত নিঝুম, হাতিয়া ও কুতুবদিয়া দ্বীপকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এর মধ্য দিয়ে তিন জনপদে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ ও সেবার গুণগত মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে নেওয়া এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যা গত ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে অনুমোদন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি চলতি ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শতভাগ বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। এ কারণে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুলাই মেয়াদে শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্থির করে একনেক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
হাতিয়া দ্বীপ শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া চ্যানেল পারাপার করে কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা এবং হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপের শতভাগ গ্রাহককে নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুৎ সুবিধার আনতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া।
প্রকল্পেটির সংশোধিত মেয়াদ ২০২৩ সালে থেকে বাড়িয়ে ২০২৫ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে এবং ব্যয় ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা করা হয়েছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৫৯৭ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-এর নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেবে ৫০ কোটি টাকা। নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলার হাতিয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলা জুড়ে বাস্তবায়িত হবে প্রকল্পটি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র আরও জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় নতুন ৪টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ (হাতিয়া দ্বীপে ৩টি ও কুতুবদিয়া দ্বীপে ১টি), মুকতারিয়া-নিঝুমদ্বীপ খালে দেড় কিলোমিটার ১১ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হবে। কুতুবদিয়া চ্যানেলে ৫ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট ৩৩ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হবে।
নতুন মোট ১ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হবে। বিদ্যমান ৩৫ কিলোমিটার বিতরণ লাইন রেনোভেশন করা হবে। মোট ৩ হাজার ২৫০টি পোল মাউন্টেড বিতরণ ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হবে এবং অফিস ভবন কাম রেস্ট হাউজ, ডরমিটরি, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/আ.ভ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :