বেপরোয়া চলাফেরায় বাধা দেওয়ায় মাদকাসক্ত মেয়ের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন মা ঝুমা কর্মকার (৪৫)। এ ঘটনার পর মেয়ে পূজা কর্মকার সিঁথি (২৫)কে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর একটার দিকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা পাবনা বাজার নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পূজা কর্মকার সিঁথি শেরপুর পৌর শহরের কর্মকার পাড়ার এলাকার শিবদাস কর্মকারের মেয়ে। সে রাজধানীর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, সিঁথি তার মায়ের সঙ্গে সোমবার একটি বাসে ঢাকায় যাচ্ছিল। কিন্তু বাসে উঠেই প্রেমিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলা শুরু করে। এ নিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চান্দাইকোনা পাবনা বাজারে বই ও ব্যাগ পড়ে গেছে- এমন অজুহাত তুলে বাস থেকে নেমে পড়ে সিঁথি। পরবর্তীতে তার মা-ও বাস থেকে নামেন। এ সময় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সিঁথি ব্যাগ থেকে ধারালো চাকু বের করে তার মাকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে ঝুমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান তিনি।
এদিকে খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এবং স্থানীয়দের হাতে আটক সিঁথি কর্মকারকে হেফাজতে নিয়ে রায়গঞ্জ থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, পূজা কর্মকার সিঁথি মাদকসেবন করতো। তার জীবনযাপন ছিল বেপোরোয়া। বেশ কিছু দিন আগে এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তার। এমন কি তার সঙ্গেই তাকে বিয়ে দিতে চাপ দেয়। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে সেটি মেনে নিতে অস্বীকার করা হয়। এ জন্য তার মা প্রায়-ই তাকে শাসন করতো। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে সিঁথি। এরই ধারাবাহিকতায় মাকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিল সে।
শেরপুর থানার ওসি বাবু কুমার সাহা বলেন, এই ঘটনায় রায়গঞ্জ থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়া পূজা কর্মকার সিঁথিকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/ক.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :