বহুল প্রতিক্ষীত পদ্মা রেল সেতু দিয়ে খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেল ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’। যদিও এর আগে ট্রেনটি অনেক পথ ঘুরে যমুনা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাওয়া-আসা করতো। তবে নতুন এই রুটে দূরত্ব কমে যাওয়ায় সময় কম লাগবে অন্তত ২ ঘণ্টা। এতে খুশি যাত্রীরা।
বুধবার (১ নভেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে খুলনা রেল স্টেশন ছেড়ে যায়।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা জানান, খুলনা থেকে ২২৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে ট্রেনটি। যাত্রাপথে অন্যান্য স্টেশন থেকে আরও যাত্রী উঠবে।
তিনি জানান, খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি রুট পরিবর্তন করে কুষ্টিয়ার পোড়াদাহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ভাঙা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে খুলনায় এসে পৌঁছাবে ট্রেনটি।
খুলনা রেল স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনটি ১৩টি বগি নিয়ে ঢাকায় গেছে। সুন্দরবন ট্রেনে মোট আসন সংখ্যা ৮৬০টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি বার্থ ৪৮টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি। আর ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ট্রেনের আসন সংখ্যা হবে ৯০৮টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি সিট ৯৬টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি।
খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত সুন্দরবন আন্তঃনগর ট্রেনের ভাড়া শোভন চেয়ার শ্রেণি ৫০০ টাকা, প্রথম সিট শ্রেণির ভাড়া ৬৬৫ টাকা, প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৯৯৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ভাড়া ৮৩০ টাকা, এসি সিট শ্রেণির ভাড়া ৯৯৫ টাকা ও এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১ হাজার ৪৯৫ টাকা। যমুনা সেতু দিয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেসের শোভন চেয়ার শ্রেণিতে ভাড়া ছিল ৫০৫ টাকা।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা জানান, আগের রুটের তুলনায় বর্তমান রুটে ভাড়া খুব একটা বাড়েনি বা কমেনি।
এদিকে যমুনা সেতুর পরিবর্তে পদ্মা সেতু দিয়ে খুলনা-ঢাকা রুটের ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় খুশী খুলনার মানুষ। তবে এখনও অনেক পথ ঘুরে ঢাকায় যেতে হবে। এছাড়া দূরত্ব কমলেও ভাড়া না কমানোর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে পারে কেউই। সরাসরি ট্রেন চালু এবং আগের তুলনায় ভাড়া কমানোর দাবি খুলনাবাসীর।
খুলনা নাগরিক সমাজ এর সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, বাসের চেয়ে ট্রেনে যাতায়াত আরামদায়ক হওয়ায় অনেকে ট্রেনে খুলনা থেকে ঢাকায় যেতে চায়। কিন্তু পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেনে যেতেও বাসের চেয়ে বেশি সময় লাগবে। সে কারণে খুলনা-ঢাকা রুটে সরাসরি রেল লাইন স্থাপন এখন সময়ের দাবি। এছাড়া দূরত্ব কমে যাওয়ায় ভাড়া কমানো উচিৎ।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, যমুনা সেতুর পরিবর্তে পদ্মা সেতু দিয়ে সুন্দরবন ট্রেন চালু করায় আমরা খুশী। কিন্তু তারপরও ট্রেনে অনেক পথ ঘুরে তারপর ঢাকায় যেতে হবে।
আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, খুলনা-ঢাকা রুটে সরাসরি ট্রেন চালু করা, যাতে অযথা বাড়তি পথ ঘুরতে না হয়। তিনি বলেন, যমনা সেতু হয়ে ঢাকায় যেতে সময় লাগতো ৯ ঘণ্টা। পদ্মা সেতু দিয়ে লাগছে ৭ ঘণ্টার মতো। অথচ পদ্মা সেতু দিয়ে বাসে যেতে লাগে মাত্র ৪ ঘণ্টা। সরাসরি রেল লাইন স্থাপন করা গেলে তখন পদ্মা রেল সেতুর সুফল পুরোপুরি খুলনাবাসী পাবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন রুটে দূরত্ব অনেক কমেছে। সে কারণে আগের তুলনায় ভাড়া আরও কমানো উচিৎ।
একুশে সনবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :