সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার চকবাজার হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব, সহকারি শিক্ষক হুমায়ুন কবির, সহকারি শিক্ষক সুখি বেগম ও সহকারি সুমন মজুমদারকে ষড়যন্ত্র করে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পরিষদের সিএ সফিক রহমানের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠাকালীন চার শিক্ষককে অব্যাহতির প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল এগারোটায় চকবাজার হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আয়োজনে উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের চকবাজারে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন চকবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিকান্দর আহমেদ, অভিভাবক আলিম উদ্দিন, মির্জা আজিজ, জসীম উদ্দিন দুর্জয়, চকবাজার হাইস্কুলের শিক্ষার্থী মাসুদ, রিয়াজ, রাসেল, শাহরিয়ার আলম সুমন, কাউসার আলম প্রমুখ। এসময় বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা অভিলম্বে শিক্ষকদেরকে তাদের স্বপদে বহাল রাখার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘চকবাজার হাইস্কুল প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব, সহকারি শিক্ষক হুমায়ুন কবির, সুখি বেগম ও সুমন মজুমদার নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছিলেন। কিন্তু উপজেলা পরিষদের সিএ সফিক রহমানসহ আরো কয়েকজনের যোগসাজসে কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ প্রতিষ্ঠাকালীন চার শিক্ষককে হঠ্যাৎ করে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে গত তিনদিন ধরে তারা বিদ্যালয়ে আসছেন না। এতে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।’
এব্যাপারে জানতে চাইলে চকবাজার হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের সিএ সফিক রহমানসহ তার লোকজন আমাদেরকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করেছেন। ঘরে দরজা দিয়ে আমাদের কাছ থেকে ভীয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর নিয়েছেন। হুমকি দিয়েছেন। তাই আমরা বিদ্যালয়ে আসতে পারছিনা। ক্লাস নিতে পারছিনা। শিক্ষার্থীরা বাড়িতে গিয়ে আমাদেরকে চাপ দিচ্ছে ক্লাস নেওয়ার জন্য। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সবাইকে জানিয়েছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। আমরা আইনের আশ্রয় নেব।’
চকবাজার হাইস্কুল বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও লক্ষীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল হক বলেন, ‘আমি শিক্ষকদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি উপজেলা পরিষদের সিএ সফিক রহমানসহ স্থানীয় কয়েকজন লোক চকবাজার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও তিনজন সহকারি শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করেছেন। বিষয়টি দুঃখজনক। সফিক রহমান তো বিদ্যালয়ের কোনো কর্তৃপক্ষ না, এমনটা করার এখতিয়ার তার নেই। যেই শিক্ষকদেরকে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের প্রত্যেকেই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে প্রায় দুইবছর যাবৎ এখানে বিনা পারিশ্রমিকে শ্রমঘাম ও সময় দিচ্ছেন। সামনে এসএসসি পরীক্ষা। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটবে। পরীক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের সিএ সফিক রহমান নিজেকে চকবাজার হাইস্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি দাবি করেন। তিনি তার ওপর আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব আরো একাধিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। তিনি বেশির ভাগ সময় সিলেটে অবস্থান করেন। তিনিসহ বাকি তিনজন সহকারি শিক্ষক সেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন। তাদের স্বাক্ষরসহ রেজোলেশন করা আছে। আজকে কিছু শিক্ষার্থীকে ভুল বুঝিয়ে তারা ইন্দন দিয়ে মানববন্ধন করিয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের সাথে এবিষয়ে বসব। নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রমও স্বাভাবিক রয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :