নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় শ্রমিক সঙ্কটে আমন ধান ঘরে তুলতে কৃষকদেরকে দারুণভাবে সহযোগিতা করছে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন।
এক সময়ের দুর্লভ আধুনিক এ মেশিন সরকারি প্রণোদনায় এখন কৃষকের দোরগোড়ায়। মেশিনটির ব্যবহার যেমন সাশ্রয়ী, তেমনি ফসল তুলতে সময়ও লাগে কম। ফলে দিন দিন প্রান্তিক কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে সরকারের এই উদ্যোগ।হারভেষ্টার মেশিন পেয়ে খুশি কৃষকরা।
আলমগীর নামে এক হারভেস্টার চালক বলেন, এ মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা ছাড়াও ধান মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী সব একসাথেই করা সম্ভব। একদিনে এ মেশিন দিয়ে আট একর জমির ধান কাটা যায়। এক একর ধান কাটতে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগে। পাশাপাশি এক ঘণ্টায় ডিজেল খরচ হয় আট থেকে ১০ লিটার। এই মেশিন পেয়ে কৃষকরা যেমন খুশি, তেমনি নতুন উদ্যোক্তারাও খুবই আনন্দিত।
উপজেলার কৃষক খোকন (৪০) বলেন, আমার ৫ একর প্রজেক্টের ধান কাটতে অন্যান্য বার অনেক টাকা খরচ হতো, সময়ও লাগতো ১৫-১৬ দিন। কিন্তু বর্তমানে এ মেশিন দিয়ে এক দিনেই ধান কাটা শেষ। আর শুকাতে লাগবে মাত্র দুই দিন। শ্রমিক খরচেরও বিষয় নাই, বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার ভয়ও নাই।
কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের স্বাবলম্বী কৃষক সোহেল মিয়া বলেন, আগে ধান কাটতে প্রচুর সময় লাগতো, শ্রমিকও লাগতো অনেক। আর এখন শ্রমিক সঙ্কটের সময় আধুনিক এ মেশিন পাওয়ায় অনেক সুবিধা হয়েছে।
জানা গেছে, সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় কৃষি উন্নয়ন সহায়তায় উপজেলার কৃষকদের মাঝে `কম্বাইন হারভেস্টার’মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে। কেন্দুয়াতে এ পর্যন্ত ৮৭টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দেয়া হয়েছে।
কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন সুলতানা জানান, বিভিন্ন কোম্পানির হারভেষ্টার মেশিন ভর্তুকি মূল্যে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে এসিআই কোম্পানির প্রস্তুতকৃত `কম্বাইন হারভেস্টার` মেশিন, মেটাল কোম্পানির প্রস্তুতকৃত মেশিন ছাড়াও অন্যান্য কোম্পানির হারভেষ্টার মেশিন ভর্তুকি মূল্যে দেয়া হয়েছে।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাবেরী জালাল বলেন, আমরা প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ভর্তুকি মূল্যে হারভেষ্টার মেশিনের ব্যবস্থা করেছি। শ্রমিক সঙ্কটে যারা ধান কাটতে অসুবিধা হচ্ছে, তাদেরকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে অল্প সময়ে ধান কাটার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আশা করছি কৃষক এর সুফল পাচ্ছেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :