আঞ্চলিক মহাসড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে আমন ধান শুকানোর কাজ। দু’পাশে কলা গাছ অথবা কাঠেরগুঁড়ি ফেলে ধান শুকাতে দেওয়ায় রাস্তা সরু হয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে, ফলে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। দূরপাল্লার গাড়ী ধীর গতিতে চলায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে আমন ধান শুকানোর কাজ। এ মৌসুমে সূর্যের আলো একটু আড়াআড়িভাবে পড়ায় বাড়ির চারপাশের গাছপালার ছায়া ঢেকে দিচ্ছে আঙিনা। বোরো মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমের দিন গুলি অপেক্ষাকৃত ছোট হওয়ায় রোদও থাকে অল্প সময়। তাছাড়াও গ্রামগুলিতে বাড়ির পাশে গাছ লাগানোয় আমন মৌসুমে বাড়ির আঙিনায় রোদ পাওয়া যায় কম।
এসব সুবিধার কথা ভেবেই আঞ্চলিক মহাসড়কের আশপাশের কৃষকরা সড়ককে ধান শুকানোর জন্য বেঁচে নিয়েছে। আমন মৌসুম শুষ্ক হওয়ায় অনায়াসেই ধান কাটার পর জমিতেই তা শুকানোর কাজটি করতে পারে। এতে শ্রম ও সময় একটু বেশি লাগে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কৃষক—কৃষাণীরা সড়কে ধান শুকানোর কাজ করে।
উপজেলার সাতখামাইর গ্রামের রাশিদা খাতুন, ভাষাগকুলনগরের হাজেরা খাতুন,আব্দুল কাদির মিয়া জানান, এই সময়ে বাড়ির আঙিনায় রোদ পাওয়া যায় কম। মহাসড়কে পিছের উপর রোদ পড়লেই অল্প সময়ে গরম হয়ে ওঠে ধান যার ফলে মহাসড়কে ধান শুকাতে দিলে তা দ্রুত শুকায়। তাছাড়া মহাসড়কে ত্রিফাল ছাড়াই ধান শুকাতে দেয়া যায়। এ সব সুবিধার কথা ভেবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মহাসড়কে ধান শুকানো হয়।
একাদিক সড়কে চলাচলকারি বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, ধান শুকাতে দিয়ে গাছের গুড়ি ফেলে রাখায় রাস্তা সরু হওয়ায় গাড়ি চালাতে হচ্ছে ধীর গতিতে যে কারণে সময়ও বেশি লাগছে ।
সিএনজি চালক ফরিদ উদ্দিন জানান, রাস্তার মাঝে ধান রোদে দেয়ায় রাস্তার এক পাশ দিয়ে সিএনজি চালাতে হয়। এতে প্রায় সময় বড় গাড়ি গুলো সিএনজিকে ধাক্কা দিয়ে উল্টে দিচ্ছে।
স্থানীয়দের কয়েক জনের সাথে কথা বললে তারা বলেন, এ মৌসুমে রাস্তা ছাড়াও ধান শুকানোর প্রচুর জায়গা রয়েছে। একটু সচেতন হলে আমরা অনেক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে পারি।
এবিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে। সড়কের মাঝে ধান শুকানোর ফলে বড় ও ছোট গাড়ি গুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে উদ্ধার কাজে দ্রুত পৌছতেও তাদের সমস্যা হচ্ছে। সড়কে ধান শুকানোর জন্য আমরা বিভিন্ন সময় স্থানীয় কৃষকদের বাঁধা নিষেধ দেয়া হলেও তারা মানছে না। বাড়ির আঙিনায় ধান শুকানো নিরাপদ তারপরও অনেক এলাকায় কৃষকরা জীবনের ঝুঁকিনিয়ে ধান শুকাতে সড়কে আসে এটা ঠিক নয়। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
একুশে সংবাদ/টি.আই.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :