হাটহাজারীতে সড়ক দূর্ঘটনায় মো.হাসান তারেক (২৪) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিটের দিকে উপজেলার মেখল ইউনিয়ন পরিষদস্থ ২ নং ওয়ার্ডের জান আলী চৌধুরী বাড়ীর সামনে এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহত হাসান তারেক ওই ইউপির ১ নং ওয়াডস্থ গিয়াস চেয়ারম্যান(সাবেক) বাড়ীর মো.আলীর পুত্র।
জানা যায়, জন্মের পর থেকে বাবার মুখ না দেখা মায়ের একমাত্র সন্তান তারেক সকালের দিকে জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হয়। কাজে যাওয়ার সময় উল্লেখিত স্থানে রাস্তার উপর রাখা ইট, কংকর,বালি স্তুুপ পার হয়ে যাওয়ার সময় রাঙ্গামাটিমুখী একটি মাছ ভর্তি পিকআপ তাকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে গুরুতর আহত হয় তারেক।পরে স্থাণীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার চমেক হাসপাতালে রেফার করে। চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাবার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মাত্র ৪ মাস পূর্বে বিয়ে করা তারেক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ।
স্থানীয়রা জানান, গত ২১ অক্টোবর শনিবার সকালের দিকে উল্লেখিত স্থানের চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহা-সড়কের ইছাপুর বাজারের পশ্চিমে রাস্তার উত্তর পাশের বিশাল আয়তনের কৃষি জমি বালি দিয়ে ভরাট করার সময় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মশিউজ্জামান এর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থলে পাওয়া ভরাট কাজে জড়িত উপজেলার উত্তর মেখল এলাকার সামাদ আলী তালুকদার বাড়ির মনির আহমদের পুত্র ফখরুল ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন এ ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এবং ভরাটকৃত বালি ওই জমি থেকে অপসারন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। অথচ নির্দেশ দেয়ার ১ মাস ১৭/১৮ পেরিয়ে গেলেও সেই দন্ডিত ফখর আদালতের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে নির্দেশের তোয়াক্কা না করে পুনরায় সেই জমিতে ইট,বালি,লোহা,সিমেন্ট ব্যবহার করে আরসিসি পিলার তৈরী ও ভরাট কাজ শুরু করে। সেই কাজে ব্যবহারের জন্য ওই সাসগ্রীগুলো রাস্তার উপর রাখায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নিহত হাসান তারেকের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, তার দুখিনী মায়ের গগনবিদারী আর্তনাদ। বিলাপ করতে করতে বলছেন, তোমরা আমার ছেলেকে এনে দাও। আমি কি নিয়ে বাঁচবো, কে দেখবে আমাকে।
তারেকের বন্ধু সাজিদ এ প্রতিবেদক কে বলেন, তারেক যখন তার মায়ের গর্বে তখন তার বাবা তার মাকে ফেলে চলে যায়। আজ পর্যন্ত তার কেনো খোঁজ খবর নাই। মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করতেন নিহতের মা। তারেকও এখানে সেখানে দৈনিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। সে মাত্র ৪ মাস পূর্বে বিয়ে করে। তারেকের এমন মৃত্যুতে তার মায়ের মৃত্যুর পর একটি পরিবার বিলিন হয়ে যাবে।কেউ থাকবে না তার বংশধর। এদিকে বেলা তিনটার দিকে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান দূর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এবং সওজকে রাস্তার উপর রাখা মালামাল জব্দ করার নির্দেশ দেন। তবে এসময় মালামাল সংশ্লিষ্ট কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী প্রতিবেশী নকিব হোসাইন চৌধুরী জানান, একইদিন স্থানীয় মসজিদ মাঠে জানাযা নামাজের পর পারিবারিক কবরস্থানে নিহতের লাশ দাফন করা হয়েছে।
রাউজান হাইওয়ে থানার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক এ প্রতিবেদক কে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় সরকার বাদী একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। আর ঘাতক পিকাপটিকে আটকের চেস্টাও চালিয়ে যাচ্ছি।
জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী দৈনিক আজাদী কে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গতবার ভ্রাম্যমান আদালত জরিমানা করে ভরাটকৃত বালি সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিলেও কাজে জড়িত দন্ডিত সে ব্যক্তি সে আদেশের তোয়াক্কা না করে উল্টো আরও কিছু সামগ্রী রাস্তায় এনে স্তুপ করে। যার কারনে এ দূর্ঘটনা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :