ময়মনসিংহের নান্দাইলে মহান বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে স্থানীয় চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে জাকজমকভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি চলে। এতে মাঠজুড়ে প্যান্ডেলের একটি কর্নারে ছিল ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এখানে শহীদ ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র সবার জন্য প্রদর্শন করা হয়।
বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যতিক্রম স্টলে ৫০ জন শহীদ ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার ব্যবহৃত জিনিস যেমন শার্ট, পায়জামা, পাঞ্জাবী, টুপি, লাঠি, চশমা, কলম, চা বা পানি পান করার কাপ বা গ্লাস, জায়নামাজসহ ব্যবহৃত খরম ও হারিকেন প্রদর্শন করা হয়।
এ ছাড়াও নান্দাইলের তিনজন বীরপ্রতীক যারা প্রয়াত হয়েছেন তাঁদের পাওয়া ক্রেস্টসহ নিজেরা ব্যবহার করতেন এমন জিনিসপত্র এবং ওই সময়ে ভিন্নধর্মী ছবি প্রদর্শিত হয়। স্টলটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিলে খবর পেয়ে এক নজর দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে সব ধরনের লোকজন। শনিবার ভোর থেকেই সরকারিভাবে পালন করা বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে লোকজন আসতে থাকে। কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে দেখতে আসা দর্শনার্থীরা স্টলটিতে ভিড় জমায়। অনেকেকেই নিজেদের ফেসবুক আইডি থেকে স্বজনদের সরাসরি দেখাতে থাকেন। বিশেষ করে শহীদ ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের এ সময় আবেগাপ্লুত হতে দেখা গেছে।
অনেকেই দাবি করেন, এই উদ্যোগটিকে স্থায়ী করতে উপজেলা পরিষদের কোথাও বা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে স্থায়ীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য। ৭৭ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সতীস চন্দ্র দেবের ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু সুজয় কুমার দেব বলেন, আমার বাবার কিছুই ছিল না, সবই রাজাকার আলবদর বাহিনী নিয়ে গেছে বা ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে বাবার ব্যবহৃত হারিকেনটি অতি যত্নে রাখা হয়েছিল। এটি এখানে প্রদর্শন করা হয়েছে, যা দেখতে পেয়ে আমি ভীষণ আনন্দিত।
এব্যাপারে জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কৃষ্ণ পাল জানান, তিনি মনে করেন এ ঘটনা সারা বাংলাদেশে প্রথম। এখান থেকেই সারা দেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, খুব দ্রুতই এই জিনিসপত্র নিয়ে উপজেলা পরিষদের একটি কক্ষে তা স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :