মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ১ নং বাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের তিন নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবুল কালাম আজাদ। সরকারি ভাতার কার্ড কোনটিই খরচ ছাড়া করে দেন না তিনি। কার্ড করার জন্য নেন অগ্রিম টাকা এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। কিন্তু তার দাবি, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।
মেম্বার আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে টিসিবি, ভিজিডি, মাতৃত্বকালীনসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘টাকা নেওয়ার’ অভিযোগ আছে। এক্ষেত্রে তিনি অগ্রিম টাকা নেন।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, মেম্বার আবুল কালাম আজাদ সরকারি বিভিন্ন ভাতা কার্ড করে দিতে জনগণের কাছ থেকে টাকা নেন। চাহিদা অনুযায়ী তাকে অর্থ দিতে না পারলে ভাতা পাওয়ার উপযোগী ব্যক্তিরা কার্ড পান না। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে ঘুষ নিয়ে অন্যদের তিনি কার্ড দেন। এতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা সরকারের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বাল্লা ইউনিয়নের ভাদিয়াখোলা গ্রামের সামসুন্নাহার বলেন, চাওলের কার্ডের কথা বলে কালাম মেম্বার আমার থেকে ২ হাজার টাকা নিয়েছেন। আর তেলের কার্ড দিবে বলে ৭০০ টাকা নিয়েছে। ৬-৭ মাসেরও বেশি হয়ে যায় আমার থেকে টাকা নিয়েছে। আমার কার্ড করে দেইনা টাকাও ফেরত দেইনা। টাকা চাইতে গেলে আমাকে নানা কথা বলে তাড়িয়ে দেয় এবং বলে টাকা যেদিন পারবো ঐদিন দিবো।
তিনি আরোও বলেন, প্রশাসনের কাছে
আমার দাবি কার্ড দিক না দিক আমার টাকাগুলো যেন ফেরত দেই। কার্ড দেওয়ার কথা বলে আমি ছাড়াও আরো অনেকের কাছ থেকেই উনি টাকা নিয়েছে।
একই গ্রামের হাজেরা বেগম জানান, আমার দুই ছেলের বউয়ের গর্ভবতী ভাতা কার্ড করে দিতে কামাল মেম্বার ৬৫০০ টাকা নিছে। বছর পার হলেও কার্ড করে দেইনি। তাকে টাকা দিয়েও এখনও কার্ড পায়নি।
সালেহা নামে এক নারী জানান, আমাকে কার্ড করে দেওয়ার জন্য কালাম মেম্বার ৩ হাজার টাকা নিছে। কয়েকদিন আমি কার্ডের ভাতাও পেয়েছি কিন্তু হঠাৎ আমার কার্ড ডিজিটাল করার কথা বলে উনি নিয়ে যায়। তারপর থেকে আমি আর ভাতা পাচ্ছি না। মেম্বারের কাছে কার্ড ফেরত চাইতে গেলে আমার সাথে খারাপ আচরন করে তাড়িয়ে দেন।
অভিযোগের প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি সব কিছুই অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার বিষয়ে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কারও কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিই না।
বিষয়টি নিয়ে ১ নং বাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদের ব্যাপারে আমার কাছে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, পূর্বে এরকম অভিযোগ পায়নি, আপনার থেকেই প্রথম জানলাম। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :