লোকসংগীতের উর্বরভূমি হাওর জেলা নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা। এ উপজেলার লোককবি ও শিল্পীদের সুখ্যাতি ছড়িয়ে আছে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। এসব লোকশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন উপজেলার দলপা ইউনিয়নের ইটাউতা গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ তালুকদার। এই গুণীজনের সমাধি প্রাঙ্গণ ইটাউতা গ্রামে এবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দুই বাংলার (ভারত ও বাংলাদেশ) লোকশিল্পীদের এক মিলনমেলা।
উপমহাদেশের বরেণ্য লোকশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম বাউল সাধক ও মরমী কবি প্রয়াত আব্দুল মজিদ তালুকদারের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলার ইটাউতা গ্রামে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে গত শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে রাতব্যাপী এ মিলনমেলার আয়োজন করে আব্দুল মজিদ তালুকদার শিল্পী গোষ্ঠী ও আব্দুল মজিদ তালুকদার স্মৃতি পাঠাগার।
এতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট লোকশিল্পী মাস্টার বিকাশ বিশ্বাস, ধীরাজ ক্ষ্যাপা ও পাগল বিমল অংশ নেন এবং বাংলাদেশের লোকশিল্পীদের মধ্যে নেত্রকোনার উমেদ আলী ফকির, বাউল মুকুল সরকার, বাউল হবিল সরকার, বাউল ফকির চান, বাউল রাশিদসহ বেশ কয়েকজন অংশ নেন। এ মিলনমেলায় নেত্রকোনার লোকসাহিত্য গবেষক অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফাকে সম্মাননা স্মারক ও পশ্চিমবঙ্গের লোকসংগীত শিল্পী মাস্টার বিকাশ বিশ্বাস, ধীরাজ ক্ষ্যাপা ও পাগল বিমলকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে মাজহারুল ইসলাম মোলায়েমের সভাপতিত্বে ও ছড়াকার রহমান জীবনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন ভূইয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম সুমী, নেত্রকোনা উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান, লোকসংস্কৃতি গবেষক সঞ্জয় সরকার, রাখাল বিশ্বাস, কবি স্বাধীন চৌধুরী ও নেত্রকোনা বাউল সমিতির সভাপতি বাউল উমেদ আলী ফকির প্রমুখ।
পরে দুই বাংলার শিল্পীরা রাতব্যাপী লোকসংগীত পরিবেশন করেন। তাদের পরিবেশিত গান শোনে মুগ্ধ হন অনুষ্ঠানে উপস্থিত শত শত দর্শক-শ্রোতা।
এ বিষয়ে প্রয়াত আব্দুল মজিদ তালুকদারের ছেলে লোকসংস্কৃতি সংগ্রাহক, গবেষক ও লোকশিল্পী আবুল বাসার তালুকদার জানান, এবারই প্রথমবারের মতো দুই বাংলার শিল্পীদের মিলনমেলার আয়োজন করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। কারণ আমার প্রয়াত বাবা (আব্দুল মজিদ তালুকদার, জন্ম: ১৮৯৮ সালের ৫ জানুয়ারি, মৃত্যু: ১৯৮৮ সালের ২৯ জুন) অলইন্ডিয়া রেডিও এবং গ্রামোফোনে অসংখ্য গান করেছেন। তার লেখা গানগুলো বাংলাদেশের শিল্পী ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা করছেন। এরকম আয়োজন প্রতি বছরই অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :