পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির জুলুহার গ্রামে চাঁদা না পেয়ে ঘরে আগুন দিয়ে ভস্মিভূত করল সন্ত্রাসীরা। শনিবার দিবাগত রাতে ওই ঘটনা ঘটে উপজেলার সমুদয়কাঠি ইউনিয়নে জুলুহার গ্রামের বিমল কৃষ্ণ বেপারির বাড়িতে। ঘটনার সময় বিমল বেপারী বাড়ী ছিলেন না।
এ ঘটনায় ৪ জনকে নামীয় ও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামী করে থানায় বিমল কৃষ্ণ বেপারীর স্ত্রী রিনা বেপারী বাদী হয়ে রোববার রাতে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইলিয়াস নামে একজনকে আটক করেছে।
স্থানীয়দের মধ্যে সঞ্জয় ও মিল্টন জানায়, ঘটনার দিন রাত আটটা থেকে সন্ত্রাসীরা ওই বাড়ীতে গিয়ে তান্ডব চালাতে থাকে। এসময় তারা ৩০ হাজার টাকা দাবী করে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের সাথে ঝগড়া হয়। রাত ১২ টা পর্যন্তা তারা গালিগালাজ করতে থাকে। এরপর তারা চলে যায়। আমরাও যারযার ঘরে যাই। রাত তিনটার দিকে বিমল কৃষ্ণ বেপারীর ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমরা চিত্ত রঞ্জন বেপারীর ছেলে চিন্ময় ব্যাপারী, বিধান মৃধা মৃধার ছেলে শুভ মৃধা, নবীর হোসেন হাওলাদারের ছেলে ইলিয়াস হাওলাদার, বাবু রাম শীলের ছেলে ডিলন শীলকে দেখেছি। পরে তারা আরো লোকজন নিয়ে আসে।
মামলার বাদী রিনা বেপারী অভিযোগ করেন, শনিবার দিবাগত রাত আটটার দিকে আমাদের বাড়ী এসে আমার স্বামীর নাম ধরে ডাকে এবং বলে ঘর থেকে বেরিয়ে আয়। তারা এসময় বলে তোর স্বামীকে ডাক আমাদের ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। এসময় তিনি বাড়ীতে নেই বললে তারা কোন কথা না শুনে গালাগাল দিতে থাকে এ ভাবে রাত ১২ পর্যন্ত তান্ডব করে তারা চলে যায়। রাতে তারা পুনরায় এসে ডাকাডাকি করে আমরা রাতে বের হব না বললে তারা প্রথমে আমার হাস মুরগী ঘর ভাংচুর করে পরে ধানের খড়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এসময় চিৎকার চেচামেচি করে বলে, এখনো ঘর থেকে বের হবিনা। দাড়া তোদের ঘর থেকে বের করতেছি বলেই ঘরে রাখা পাটখড়ি ছিলো তাতে আগুন লাগিয়ে দেয় মুহুর্তের মধ্যে আগুন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ডাকচিৎকার দিলে লোকজনকে ছুটে আসতে দেখে হুমকি দিয়ে চলে যায়। ইতোমধ্যে পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী বিমল কৃষ্ণ বেপারী বলেন, গতকাল আমি বাড়ীতে ছিলাম না। এলাকার মাদকসেবি সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ চিনময় ব্যাপারী, ইলিয়াস, শুভ এবং ডিলন শীল। আমার কাছে চাঁদাদাবি করে আসছিল। তারা আমার স্ত্রী এবং মেয়েকে ডিস্টার্ব করে। শনিবার রাত আটটার দিকে আমার বাসায় এসে ত্রিশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এর আগেও একবার দশ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার একটা কাজের ছেলে আছে তাকে বলে, তুমি ওইবাড়িতে কাজ কর তুমি দশ হাজার টাকা দিবা না হয় বিমল কৃষ্ণের স্ত্রীকে সন্ধার পরে ঘর থেকে বের করে দিবি এঘটনার তাৎক্ষনিক তদন্তকারী ইন্সপেক্টর মো. শাহনি জানান, সন্ত্রাসীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী । চাঁদা না দেওয়ায় তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তার ঘরে ৫০ মন ধান, ৫ লাখ টাকার সুপারী, নগদ ২ লাখ টাকা ও স্বর্নালংকারসহ সব আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
আগুন লাগার পেয়ে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নেছারাবাদ ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। রাস্তা সরু এবং আঁকাবাকার কারনে ফায়ার সার্ভিস ঘটনা স্থলে পৌছাতে পারেনি। ততক্ষণে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিস নেছারাবাদ ষ্টেশনের ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা পৌছার আগেই আগুন নিভে যায়। তাৎক্ষনিক ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি মো. গোলাম সরওয়ার জানান, এ ঘটনায় মামলা রজু করা হয়েছে। মামলার নামধরা আসামী ইলিয়াস হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :