গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ীতে দুবৃর্ত্তদের গুলি ও আগুন দেওয়ার ঘটনার ১৬ ঘন্টা পর ফের সৌদি প্রবাসী মাহবুব আলম বাচ্চুর (৪২) বাড়ীর চার তালা বাসার তৃতীয় তালায় জানালার কাঁচ ফুটো হয়ে যায় দুর্বত্তদের ছোড়া গুলিতে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা আনুমানিক ৭ টায় উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সৌদি প্রবাসী মাহবুবুল আলম বাচ্চু তেলিহাটি এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। ওই সময় আরেকটি গুলি একই এলাকার কলেজ শিক্ষকের ভাড়া বাসার জানালার গ্লাসে লাগলে ছিদ্র হয়ে যায়।
এর আগেও মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাত আনুমানিক পৌনে ৩ টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার দক্ষিণ ভাংনাহাটি এলাকায় শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম মোল্লার বাড়িতে মোটরসাইকেলে এসে দুবৃর্ত্তরা গুলি ও পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন দেয়।
দুবৃর্ত্তরা মোটারসাইকেলে থাকা অবস্থায় ছোড়া একটি গুলি মাহবুব আলমের ঘরের জানালার কাঁচ ছিদ্র হয়। তিনি সৌদি প্রবাসী।
আরেকটি গুলি শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি কলেজের প্রভাষক শিপুল খন্দকারের ভাড়া বাসায় জানালার গ্লাসে লেগে ছিদ্র হয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে মোটরসাইকেলে থাকা চার দুর্বত্তকে ওই বাড়ি লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি ছুরতে দেখা যায়। মোটরসাইকেল মহরার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একের পর এক গুলির ঘটনায় শ্রীপুরের সচেতন মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রবাসী মাহবুব আলমের স্ত্রী ফারজানা আক্তার লাকি বলেন, আমার স্বামী কোনো রাজনীতি বা দলাদলির সাথে যুক্ত নয়। তিনি সৌদি প্রবাসী। বাড়ীতে শাশুড়ি, আমার মেয়ে মহনা (১৪) এবং ছেলে জারানকে (৮) নিয়ে থাকি। সন্ধ্যায় হঠাৎ করে বিকট শব্দ হওয়ার পরপরই জানালার গ্লাসের গুঁড়া আমার মুখের ওপর পড়ে। তখনই বুঝতে পারি গুলি করা হয়েছে। তবে কি কারণে গুলি করা হয়েছে তা বলতে পারব না।
প্রবাসী মাহবুব আলমের শ্যালক জাকুয়ান খন্দকার জানান সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যার ওই সময়ে লাঠি, হকিস্টিক ও রাম দাসহ ১৫/২০টি মোটরসাইকেলে ৩৫ থেকে ৪০ জন দুবৃর্ত্ত জরুরী সাইরেনে উচ্চ শব্দে মুলাইদ (শফিক মোড়) এলাকায় মহড়া দিচ্ছে। মহড়া থেকে দুবৃর্ত্তরা তাঁর ভগ্নিপতির বাসায় এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। ওই গুলি জানালার কাঁচ ছিদ্র হয়ে ঘরে ঢুকলেও কেউ হতাহত হয়নি। পরে দুবৃর্ত্তরা পাশের কলেজ শিক্ষক শিপুল খন্দকারের বাসায়ও এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। ওই গুলিতে জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। পরে তারা ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলে যায়। কারো সাথে আমাদের কোনো বিরোধ বা শত্রুতা নেই। গুলি ছোড়ার কারণ কি তাও বলতে পারব না।
শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি কলেজের প্রভাষক শিপুল খন্দকারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া আবু তাহাবী বলেন, আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে বাসায় ছিলেন। হঠাৎ করে বিকট শব্দ হলে আমাকে ফোন দেয়। আমি বাসায় গিয়ে দেখি জানালার গ্লাস ফেটে গেছে। ঘটনাটি বাড়ির মালিককে জানাই। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ জামান খবর পেয়ে সাথে সাথেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দুটি জায়গায় গুলি ছোড়ার আলামত দেখা গেছে। ঘটনানি গুরুত্ব সহকার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/ট.আই.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :