নীলফামারীর ডিমলায় এক বৃদ্ধার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানি চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা বারোটা দিকে উপজেলার পশ্চিমখড়িবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পরপরই লোকজন জানাজানি হলে অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধ পালিয়ে যায়।
অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধ উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিমখরিবাড়ী এলাকার মৃত মখদুম মিয়ার ছেলে মোঃ রুহুল আমিন ওরফে করফুল (৫৫)।
ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রী একই এলাকার মোঃ সিরাজুল ইসলামের মেয়ে মোছাঃ সাহেলা আক্তার (ছদ্মনাম)। সে পশ্চিম খরিবাড়ী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানান, মোঃ রুহুল আমিন ওরফে করফুল আমাদের প্রতিবেশী ও স্থানীয় বাজারের মসলা বিক্রেতা। মশলা আনতে তাঁর বাড়িতে ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রী যায়। পরে তাকে মশলা দিয়ে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।
এলাকাবাসী আরো জানান, মোঃ রুহুল আমিন ওরফে করফুল কয়েকবছর পূর্বে এক ভ্যান চালকের স্ত্রী ও তাঁর কন্যাকে কুপ্রস্তাব দেয়। পরে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল।
ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর দাদী মোছাঃ মর্জিনা বেগম জানান, আমার ছেলের বউ গতকাল সকালে রান্না করে। এমন সময়ে তাঁর মেয়ে মোছাঃ সাহেলা আক্তারকে (ছদ্মনাম) বলে করফুলের কাছে টাকা দেওয়া আছে মশলা নিয়ে আসো। তাঁর নাতনি মশলা আনতে করফুলের বাড়িতে যায়। এসময় করফুল ভুক্তভোগীকে ঘরে নিয়ে এক হাতে মশলা দেয় এবং অন্য হাত দিয়ে তাঁর শরীরের স্পর্শকাতর বিভিন্ন স্থানে হাত বুলিয়ে দেয়। পরে ওই স্কুলছাত্রী মশলা বিক্রেতাকে ধাক্কা দিয়ে চলে আসে। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে বিষয়টি কাউকে না জানানোর কথা বলেন ওই মশলা বিক্রেতা।
ভুক্তভোগী ও স্কুল শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাই মোঃ আশরাফুল ইসলাম (২৩) জানান, গতকাল করফুলের কাছে আমার চাচতো বোন তাঁর বান্ধবীদের নিয়ে মসলা আনতে যায়। এসময় তার বান্ধবীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে এবং সে করফুলের কাছে মশলা চায়। পরে করফুল তাকে মসলা দেওয়ার কথা বলে ঘরে নিয়ে যায়। ঘরের ভিতরে কি হয়েছে তা পরিষ্কার করে না বললেও মশলা দিয়ে সাহেলা আক্তারের (ছদ্মনাম) সাথে ধস্তাধস্তি করে।
ভুক্তভোগীর চাচাতো ভাই আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা শুরু হলে আমরা জানতে পারি মশলা বিক্রেতা মোঃ রুহুল আমিন ওরফে করফুল ভুক্তভোগী ছাড়াও ইতোপূর্বে অনেকের সাথে এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
মোছাঃ অজিফা বেগম (২৯) জানান, মোঃ রুহুল আমিন ওরফে করফুল সম্পর্কে আমার চাচা শ্বশুর। বেশ কিছুদিন আগে উনার সাথে আমার দেখা হলে তিনি আমাকে বলে, `কিগো তুমি গোসল করছাও? (আঞ্চলিক ভাষা)।
এবিষয়ে জানতে গয়াবাড়ী ইউপির সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য মোছাঃ বিলকিছ বেগম জানান, মেয়ের পরিবারের পক্ষে চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। মোঃ রুহুল আমিন ওরফে করফুলের বাড়িতে আমরা কয়েকজন গিয়েছিলাম। কিন্তু বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। উভয় পক্ষের উপস্থিতে প্রকৃত ঘটনা জেনে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন বলেন, উভয় পক্ষের স্টেটমেন্টে নিয়ে রাখুন। বিষয়টি নিয়ে কি করা যায় তাই ভাবছি।
এ বিষয়ে ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ কুমার রায় বলেন, এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/র.ই.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :