কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সীমান্তে হত্যা ও আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতীকী লাশ কাঁধে নিয়ে এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ গণশক্তি পার্টির আহ্বায়ক হানিফ বাংলাদেশির নেতৃতে রৌমারী প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে এ কর্মসূচি শুরু করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম, সাইফুল ইসলাম লাল, গণতন্ত্রের রাজা এন ইউ আহম্মেদ, সৌরভ হোসেন বেলাল, আরিফ, মাইদুল ইসলাম মুকুল, স্থানীয় যুবলীগ নেত্রী শেফালী আক্তার ও আয়শা সিদ্দিকা আইরিন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত আছে এমন সব জেলা ও উপজেলা প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ জানাবেন। এ কর্মসূচি যশোরের বেনাপোল উপজেলায় গিয়ে শেষ হবে।
হানিফ বাংলাদেশি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দুটি দেশ ভারত ও মিয়ানমার সব সময় বাংলাদেশের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তে নিরীহ মানুষকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করছে। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের একজন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গুলি করে হত্যা করেছে। গত চার মাসে ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন ২১ জন বাংলাদেশি।
বিভিন্ন মানবাধিকার সূত্রে, ২০১০ সাল থেকে প্রায় এক হাজার ২৭৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। আহত হন এক হাজার ১৮৩ জন। আরেক প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার তাদের ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে অত্যাচার করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের অভ্যান্তরীণ যুদ্ধে মর্টারশেলে দুজন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়।
সীমান্ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে তিনি প্রতীকী লাশ কাঁধে নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম পদযাত্রা করেন বলে জানান হানিফ বাংলাদেশি। তিনি আরও বলেন, বাংলদেশের জনগণ সব সময় প্রতিবেশী ও বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ দুটি বাংলাদেশের সঙ্গে বৈরী আচরণ করে।
সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার পরে বলা হয় এরা গরু চোরাকারবারি। হতে পারে এরা গরু চোরাকারবারির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। গুলি করে হত্যা করবে কেন? ভারত ও মিয়ানমার যদি তাদের দেশের পাচারকারীদের দমন করে তাহলে বাংলাদেশের পাচারকারীরা এমনিতে বন্ধ হয়ে যাবে।
হানিফ বাংলাদেশি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যে দলই এসেছে, সে দলই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষের আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়েছে। শাসকদের এই দুর্বল নতজানুর কারণে ভারত ও মিয়ানমার সব সময় বাংলাদেশের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।
বিদেশি অন্য দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর তাবেদারি করার সাহস পাচ্ছে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন দেশের মানুষ কখনও কোনো দেশের দাদাগিরি মেনে নেয়নি। নতুন প্রজন্মও কোনো দেশের আগ্রাসন মেনে নেবে না। বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়ে বিশ্বর দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায়।
একুশে সংবাদ/স.ই.উ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :