নরসিংদীর রায়পুরাতে ডিভোর্স দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সাবেক স্বামীর মৃত্যুর দুই দিন পর চিকিৎসক স্ত্রী লতা আক্তার (৩২) এর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লতার মৃত্যু হয়। এর আগে গত সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দগ্ধ স্বামী খলিলুর রহমান (৪০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে লতা আক্তারের চাচা ফারুক মিয়া বলেন, নিহতের লাশ হাসপাতালের প্রক্রীয়া শেষ করে বাড়ি নিয়ে আসা হবে এবং নিয়ম অনুযায়ী পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নিহত লতা আক্তার জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়ন ব্রাহ্মনেরটেক গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে।
লতা আক্তার রাজধানীর গুলশান এলাকার শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করা চিকিৎসক। তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করতেন। অপর দিকে প্রাক্তন স্বামী খলিলুর রহমান গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার বেলাশী গ্রামের আতর আলী বেপারীর ছেলে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসক লতা আক্তার ও খলিল উভয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক থেকে একপর্যায়ে উভয়েই গোপনে বিয়ে করে সংসার পাতেন। তবে খলিল তথ্য গোপন করে মেয়েকে বিয়ে করায় গত দুই মাস আগে ওই নারী উকিলের মাধ্যমে তার স্বামীকে তালাক নামা পাঠান। তবে স্বামী খলিল তাকে নিয়ে ঘর সংসার করতে চান।
এ নিয়ে উভয়ের মতামতের ভিত্তিতে গ্রাম্য সালিসি দরবার হয়। তাতেও মেয়ে তার সাথে সংসার করতে আপত্তি জানান। পরে রোববার দুপুরে ওই নারীর বাবার বাড়ি মরজাল এসে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে স্ত্রী ও তার নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এ সময় স্থানীয়রা হঠাৎ চিৎকার শুনে এগিয়ে এসে দরজা ভেঙে ঘর থেকে উভয়কেই দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে।
ওই নারীকে স্বজনরা উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠান। অপর দিকে আহত ওই যুবককে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠান।
রায়পুরার মরজাল ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তুহিন ভূইয়া বলেন, লতার পরিবার সূত্রে জানতে পারি বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন জানান, খবর পেলাম ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় লতার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পর লতার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, রোববার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের ব্রাহ্মণেরটেক এলাকায় ডা. লতার বাবার বাড়িতে এ অগ্নিদগ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর খবর পেয়ে ওই নারীর ঘর থেকে অগ্নিদগ্ধ দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে পাঠান। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে তাদেরকে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে পাঠানো হয়।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :