AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকই কলেজের পিয়ন


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি,মেহেরপুর
০৩:৩৭ পিএম, ১৭ মার্চ, ২০২৪
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকই কলেজের পিয়ন

একসাথে স্কুলে ও কলেজে কর্মরত আছেন আনোয়ার হেসেন। মেহেরপুরের গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজে তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে পিয়নের কাজ করেন। আর ২০০৫ সাল থেকে মানিকদিয়া ভোলাডাঙ্গা কেশবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আছেন তিনি।  

জানা যায়, গাংনীর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে তিনি খাতা কলমে প্রধান শিক্ষক। বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান ছাড়া বিদ্যালয়ে আসেন না। স্থানীয় এলাকাবাসী ও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে তিনি বেতন তুললেও বিদ্যালয় থেকে কোনো বেতন-ভাতা তোলেন না। তবে বিদ্যালয়টির নিয়োগ বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন স্কুলে না গিয়েও বাড়িতে বসেই করেন স্কুলের অফিসিয়াল সব কার্যক্রম।

স্কুলটির শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে কোনোদিন কোনো ক্লাস নিতে আসেনি। আবার আমারা অধিকাংশ শিক্ষার্থী স্যারকে ঠিকমতো চিনিও না। তবে বিশেষ দিনগুলোতে তিনি স্কুলে আসেন ঠিকই, ছাত্রছাত্রীদের তেমন একটা সময় দেন না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এম বি কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রায় বছর জুড়েই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেন। বিশেষ দিনগুলোতে তার পদধুলি পড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আর প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল কাজ তিনি বাড়িতে বসেই সারেন। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচপত্র ও নিয়োগের বিষয়ে ঠিকই খোঁজ রাখেন।’

এ বিষয়ে মানিকদিয়া ভোলাডাঙ্গা কেশবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক পরিচালনা পরিষদের সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, ‌‘বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে খসড়া ভোটার তালিকা প্রস্তুত করেন। নির্বাচনের কোনো তারিখ ও ভোট ছাড়াই প্রধান শিক্ষক মানিকদিয়া গ্রামের আব্দুর রবকে সভাপতি করে সমস্ত কাগজপত্র যশোর শিক্ষা বোর্ডে পাঠান।’

তিনি বলেন, ওই কমিটির বিষয় জানতে পেরে শিক্ষাবোর্ডে বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর একটি আবেদনপত্র দেওয়া হয়। আবেদন পেয়ে শিক্ষাবোর্ড মেহেরপুরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তাদের কর্যক্রম চলমান।

তিনি আরও জানান, ‘আনোয়ার হোসেন কলেজে চাকরি করেন এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিন চারমাস পরপর উপস্থিত হয়ে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা দেখিয়ে অবৈধভাবে দুটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন তিনি।’

সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম আরও জানান, ‘আনোয়ার হোসেন গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজের একজন অফিস সহায়ক। তিনি কলেজে চাকরি করেন এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। বিদ্যালয়ে তিন চারমাস পরপর উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা দেখিয়ে অবৈধভাবে দুটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন তিনি।’

অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজে চাকরি করি এটা সঠিক। তবে এ বিদ্যালয়টির সঙ্গে আমি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত। আমি অফিসিয়াল কাজগুলো অনেক সময় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আবার কখনও বাড়িতে বসে করি। তবে এটা ঠিক এই প্রতিষ্ঠান থেকে আমি কোনোদিন বেতন উঠাইনি। আমি প্রতিষ্ঠানটিকে খুব ভালোবাসি।’

গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কলেজে ১৮ বছর ধরে বেতন উত্তোলন করছেন আনোয়ার হোসেন। আমিও হঠাৎ করেই শুনছি তিনি একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি আমি এরইমধ্যে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) হোসনে মোবারক জানান, ‘আমি শোনার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। শিগগিরই এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহা

 

Link copied!